পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী বরিশাল-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের ‘বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু’ ও তার সংযোগ সড়ক সুগন্ধা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের মুখে। গত তিনদিনে সেতুর বরিশাল প্রান্তের সংযোগ সড়কটির ১শ’ মিটারের মধ্যে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবন নদীতে ধসে পড়েছে। এর আগে সংযোগ সড়কের ৫০ মিটারের মাথায় একটি পাকা মসজিদও নদীতে ধসে পড়ে। বিধ্বস্ত মসজিদ ও স্কুল ভবনের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে একটি খালের সৃষ্টি হয়ে তা ক্রমশ সংযোগ সড়কের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে যেকোন সময়ই সুগন্ধার ভাঙন সংযোগ সড়কটিতে ছোবল হানার আশংকা রয়েছে। এতে করে সেতুটির সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পুরো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়ই বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই উদ্বিগ্ন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। গত দশ বছরের বেশী সময় ধরে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও বরিশাল প্রান্তের সংযোগ সড়কে ভাঙন ক্রমশ ব্যাপ্তি লাভ করলেও মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে ২০০৬ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র ১১ কোটি টাকার নদী তীর রক্ষা প্রকল্প পেশ করলেও তহবিলের সংস্থান করতে পারেনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে সেতুটির বরিশাল প্রান্তের ডান পাশের ‘ওয়েভ প্রটেকশন’ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে সুগন্ধার ভাঙন এবাটমেন্ট-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে সুগন্ধার মূল স্রোত আঘাত হানছে সংযোগ সড়কের দিকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আইডব্লিউএম ব্যাপক সমীক্ষা শেষে ইতোমধ্যে ২২৬ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পেশ করেছে। প্রকল্প প্রস্তাবনায় সেতুটির বরিশাল প্রান্তের ডান ও বাম দিকে মোট সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লকে সাহায্যে নদীতীর রক্ষা কাজ ছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকার সামনে জেগে ওঠা চরের বড় অংশ ড্রেজিং করে গতিপথ পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’টি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চুড়ান্ত অনুমোদন শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রেরেনের কথা রয়েছে।
বছর তিনেক আগেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু এলাকার ভাঙনরোধে নকশা প্রনয়ন সহ প্রাক্কলন তৈরীর দায়িত্ব দেয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। সভায় ভাঙন রোধে প্রকল্পের অর্থ যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘ডিপোজিট ওয়ার্ক’ হিসেবে তা বাস্তবায়ন করবে বলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ২ কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ‘জরুরী ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম’ গ্রহনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় আর সে অর্থের সংস্থান করেনি। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ লক্ষ্যে দরপত্র আহবান করেও পরবর্তীতে আর কিছু করেনি। ভাঙন পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় গত বছর বরিশাল সড়ক বিভাগ থেকে সেতুর অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে কিছু ‘জিও স্যান্ড ব্যাগ’ ফেলে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হয়।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সেতুর ১শ’ মিটার উজানে ভাঙন শুরু হয়। সোমবার রাতে আকষ্মিকভাবেই আর এম একাডেমি নামের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবন নদীতে ধ্বসে পড়ে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে বরিশালের জেলা প্রশাসকের বাস ভবনে এক জরুরী সভায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও বরিশাল সড়ক বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ও এন্ড এম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীগন উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পার্শ্ববর্তী অপর একটি স্কুলের টিনেসেড ঘর ব্যাবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়াও আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধের পদক্ষেপ গ্রহনের লক্ষ্যে বালুর বস্তা ফেলা ছাড়াও ডিপিপি সড়ক অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে প্রেরণেরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তবে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় ডিপিপি অনুমোদন করলেও তা পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক স্তর অতিক্রম করে প্রি-একনেক হয়ে একনেক-এর বিবেচনায় পৌঁছতে আরো কমপক্ষে ছয় মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে। ফলে আগামী বর্ষার আগে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুটির ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরু হবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
১৯৯৪ সালে কুয়েত উন্নয়ন তহবিলে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়ন সম্পন্ন করার পরে ১৯৯৮ সালে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কের শিকারপুর ও দোয়ারিকাতে দুটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ২০০২-এর শেষভাগে সেতু দুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করলেও প্রকল্পে নদী শাসনের কোন বরাদ্দ ছিলনা। ২০০৩-এর ২০ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেতু দুটি উদ্বোধনকালে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল ও বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নামে এর নামকরণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।