Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এডিবির বড় প্রকল্প রোহিঙ্গাদের জন্য

ধনিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিতে বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের বড় অংশ ব্যয় হবে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অনুদান থেকে। এ ছাড়া সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৬২৯ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনে এ সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আসন্ন সভায় অনুমোদনের কথা রয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২১ সালে বাস্তবায়ন করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (ডিপিএইচই)।
এই অর্থ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য নলকূপ স্থাপন, পাইপ নেটওয়ার্ক ও স্ট্যান্ড পাইপসহ মিনি পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম স্থাপন ৪৮টি, সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ২টি, সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ ১টি, আনুষাঙ্গিক সুবিধাদিসহ সারফেস ওয়াটার রিজার্ভর নির্মাণ ২টি, টেকনাফ উপজেলার জন্য সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ইউনিটসহ পাইপলাইন নির্মাণ ২টি এবং ক্যাম্পসমূহ নারীদের জন্য কমিউনিটিতে এক হাজারটি গোসলখানা নির্মাণ করা হবে।
এলজিইডি বলছে, রোহিঙ্গদের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ৩২টি ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়ন হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। যেখানে পানির স্তর মিলছে না সেখানে পুকুরের পানি মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্টে বিশুদ্ধ করে সরবরাহ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পানিবাহিত রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত শিবিরগুলোতে নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কাজ করছে সরকার। কিন্তু এগুলো অস্থায়ী ব্যবস্থা। ভবিষ্যতের এদের জীবনযাত্রার প্রয়োজনে স্থায়ী ব্যবস্থা জরুরি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে সহায়তা চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি এডিবি ৪৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেয়। এবার এই টাকা ব্যয় করতেই এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় জরুরি সহায়তা প্রকল্প।
প্রকল্পের ব্যয়ের মধ্যে এডিবি দেবে ৩৬০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বাকি ২৬৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে বরাদ্দ দেয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে আগে থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছিল। তার সঙ্গে ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত আরও ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী যোগ হয়েছে। এসব শরণার্থী বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে। কিন্ত এসব এলাকার লোকজনের জন্য পর্যপ্ত স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। তাই নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা স্থাপনে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এলজিইডির যুগ্ম সচিব শাহানারা খাতুন বলেন, রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে এই প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের এগিনেস্টে এডিবি থেকে বড় অঙ্কের অনুদানও পওেয়া যাবে। এটি বানাকবায়ন হলে রোহিঙ্গাদের বিশুদ্ধ পানি ও সেনিটেশন সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশা করা যায়।
কমিশন জানায়, প্রকল্পটি চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার এবং এডিবির মধ্যে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি বিশেষ অনুদান সাহায্য হওয়ায় ডিপিপি অনুমোদন ছাড়াই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইআরডি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ