Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিষিদ্ধ রিক্সা-ই মহাসড়কের রাজা

চান্দিনা (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ৮:১৯ পিএম

দেশব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালীন সময়েও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ব্যস্ততম সড়কের মধ্যেও নিয়ম মানানো যায়নি রিকশা ও অটোরিকশা চালকদের। যান্ত্রিক গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব হলেও রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিধান নেই ট্রাফিক পুলিশের কাছে। ফলে মহাসড়কে রিকশা যেভাবে খুশি চলছে।
নিষিদ্ধ যান অথচ মহাসড়কেও তারা সরব। আর ভাড়া আদায়েও নেই নিয়মনীতি। কখনো কখনো পুরো মহাসড়কটাকে মনে হয় ‘যেন রিকশা ও অটোরিকশার দখলে’। মহাসড়কের কোনো কোনো বাসস্ট্যান্ডেই রিকশাই বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় ট্রাফিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে।
পুলিশসহ সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী সব যানবাহন ও চালকের জন্য আইন থাকলেও রিকশা বা অটোরিক্সার ব্যাপারে কোনো আইন নেই। ফলে তারা ফ্রি স্টাইলে চলছে। মহাসড়কের বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডগুলোতে যে যানজট তার মূলে রয়েছে রিকশা। মহাসড়ক সংযোগ সড়ক সবই এখন রিকশার দখলে। ১২-১৪ বছরের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এসব রিকশারচালক। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না রিকশাচালকেরা। যেভাবে পারছে, যে জায়গা থেকে পারছে রিকশা চালাচ্ছে। রিকশার গ্যারেজ মালিক ও রিকশাচালকদের তথ্য অনুযায়ী মহাসড়কের কুমিল্লায় এখন ১৫-২০ হাজারের ওপর রিকশা চলছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিস্ট দফতরগুলোতে কোনো তথ্য নেই।
মহাসড়কের স্ট্যান্ড বা কোনো সংযোগ সড়কে ১০ মিনিট দাঁড়ালেই বোঝা যাবে কত সংখ্যক রিকশা মহাসড়কে চলছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার দাম কম ও ভাড়া বেশি হওয়ায় এটি নতুন ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে কেউ কেউ। ফলে প্রতিদিন বাড়ছে মহাসড়কে এর সংখ্যা। এতে করে সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি নস্ট হচ্ছে দেশের মূল্যবান বিদ্যুৎ। মহাসড়কের কুমিল্লায় এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাটারী চালিত রিকশা। পুলিশের পাহারার ফাঁক দিয়ে অনেক সময় রিক্সাগুলো মালামাল নিয়ে কখনো মানুষ নিয়েই চলাচল করছে মহাসড়কে। অন্যান্য সড়কগুলোতে তো আছেই।
মহাসড়কের কুমিল্লার বাসস্ট্যান্ডের উপরেই বীরদর্পে লাইন ধরে পার্কিংয়ে অবস্থান করছে রিক্সাগুলো। এছাড়া কুমিল্লার ক্যন্টারমেন্ট, নাজিরাবাজার, কোরপাই, চান্দিনা, নূরীতলা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ, দৌলতপুর, রায়পুর, গৌরীপুর, শহীদনগর, দাউদকান্দি বিশ^রোড মহাসড়কে এসব গাড়িগুলো বেশি চলাচল করে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে চলাচল করায় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার জন্ম দিচ্ছে এসব তিন চাকার অবৈধ নিষিদ্ধ গাড়ীগুলো। এসব গাড়ির বিআরটিএ থেকে নেই কোন অনুমোদন। অভিযোগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের মাসিক মাসোহারা দিয়ে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই অবৈধ যানবাহনগুলো।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, প্রতিদিন নতুন করে রিকশা নামছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ব্যস্ত সড়কে। একটি রিকশা রাস্তায় নামলেই মালিকের লাভ। একটি রিকশা নির্মাণে খরচ হয় ১২-১৫ হাজার টাকা। মাসে আয় হয় কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজার টাকা। রিকশার কোনো লাইসেন্স লাগে না। চালকেরও কোন লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ লাগে না। শুধু প্যাডেল ঘোরাতে পারলেই চলে। অভিযোগ রয়েছে এই রিকশা এখন একটি সঙ্ঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের কোটি কোটি টাকার উপার্জনের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত পাঁচ বছরে অন্তত কয়েক কোটি টাকা হাতিয়েছে রিকশার ভুয়া নম্বর প্লেট বিক্রি করে। এই বিষয়ে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা বিভিন্ন সময় রিক্সা বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পেলে চাকা খুলে ফেলি, পাম্প ছেড়ে দিই। মহাসড়ক দ্বিতীয়বার দেখলে গাড়ি আটক করা হবে জানিয়ে দিচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিষিদ্ধ রিক্সা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ