বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
তাজউদ্দীন (চট্টগ্রাম) লোহাগাড়া থেকে : শাহ আমানত সেতু থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া এলাকায় যেতে বাস ভাড়া ৩০ টাকা। গতকাল সেই ভাড়া আদায় করা হয় ১০০-১৫০ টাকা। পটিয়া থানা মোড় থেকে শাহ আমানত ব্রিজের ভাড়া ছিল ২০ টাকা। একই দূরত্বে ভাড়া হাঁকা হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। শাহ আমানত সেতু থেকে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ পর্যন্ত বাসের ভাড়া ছিল ১০০ টাকা। গতকাল যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আনোয়ারা সরকার হাট থেকে শাহ আমানত সেতু এলাকায় যেতে ২২ টাকার স্থলে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর বৃহষ্পতিবার হলে তো কথায় নেই। যার যেমন ইচ্ছে তেমনভাবেই ভাড়া আদায় করা হয়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে এমনটাই নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। বাস, হিউম্যান হলার, টেম্পুসহ সকল পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। খেয়ালখুশিমতো ভাড়া আদায় নিয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বিতন্ডাও হচ্ছে প্রতিদিন। এ রুটের নিয়মিত যাত্রী পদুয়া বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম সিকদার ক্ষোভের সাথে বলেন, গণপরিবহন মালিকদের-শ্রমিকদের কাছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ জিম্মী।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুছা বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করার জন্য চালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
জানতে চাইলে পিএবি (পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী) সড়ক যানবাহন মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভাড়া বাড়ানোর জন্য কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তারপরও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিনে জানা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের যানবাহন ছাড়ে শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে। এসব রুটে প্রতিদিন যাতায়াাত করে হাজার হাজার মানুষ। গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও চন্দনাইশ রুটে নৈরাজ্য চলছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ার অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে প্রতিদিনই গাড়ির চালক ও সহকারীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা লেগেই আছে। প্রায় সময় চালক-সহকারীর হাতে যাত্রীরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মিজান মনির জানান, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ থেকে চট্টগ্রাম শহরের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসে যাতায়াত করেন তিনি। কোন সময় ১২০টাকায় আবার কোন সময় ২০০ টাকায় আসা-যাওয়া করেন তিনি।
মিজান মনির বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে বাসের চালক ও সহকারীরা দুর্ব্যবহার করেন। অনেক সময় শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন।
আনোয়ারার বাসিন্দা ইমরান আহমেদ বলেন, শাহ আমানত সেতু থেকে আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনী বাজার পর্যন্ত বাসে ১৫ টাকার স্থলে ২৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকেরাও স্থানভেদে দুই থেকে তিন গুণ হারে বর্ধিত ভাড়া নিচ্ছেন।
চন্দনাইশের বাসিন্দা রাশেদ পারভেজ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে গাছবাড়িয়া কলেজ পর্যন্ত ৩০ টাকার স্থলে সকালে চট্টগ্রাম যেতে ৬০ থেকে ১০০ টাকা এবং সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে চন্দনাইশে আসতে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হয়।
পটিয়ার বাসিন্দা নুরুল আবছার বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যানবাহন সংকট হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যাত্রীবাহী বাসগুলো ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে। সন্ধ্যা হলে শাহ আমানত সেতু এলাকায় পটিয়ার গাড়ি পাওয়া যায় না। ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে চালকরা। শহীদুল ইসলাম নামে এক তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছে ‘টুল বক্সে করে যাচ্ছি চট্টগ্রাম টু পদুয়া, ভাড়া ১২০, দেখার কেউ নেই।’
শাহ আমানত সেতু এলাকায় কথা হয় বাসচালক কামাল উদ্দিনের সাথে। তিনি কিছুটা আমতা আমতা করে বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। তাই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।