বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে কিশোরের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে আটকের চেষ্টা করায় চার পুলিশ গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। পরে পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। শনিবার রাতে সরিষাবাড়ী পৌরসভার কোনাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয় সুত্র জানায়, সরিষাবাড়ী থানার এসআই আমিনুর রহমান, এসআই আবু সামা, এসআই আরিফ ও এসআই মোস্তফা শনিবার রাত ৯টার দিকে সাদা পোষাকে কোনাবাড়ি গ্রামের হাবুর মোড়ে অভিযান চালান। সেখানে তাঁরা মোস্তফার দোকানের সামনে বসে থাকা মামুন মিয়া নামে এক কিশোরকে ধরে তার পকেটে কয়েকটি ইয়াবা টেবলেট ঢুকিয়ে দেন। পরে তাকে হাতকড়া পরিয়ে আটক করার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা চ্যালেঞ্জ করে। পুলিশ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদকারী দোকানদার মোস্তফা ও আরো দুই কিশোরকে মারধর করে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিতে চাইলে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে চার পুলিশকে প্রায় ঘন্টাব্যাপি আটকে রেখে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৬নং ওয়ার্ড (কোনাবাড়ি) এলাকার কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী জানান, ‘কিশোরের পকেটে ইয়াবা দিয়ে বিনা কারণে আটকের চেষ্টা করায় পুলিশের বিচার দাবিতে তিন শতাধিক লোক কোনাবাড়ি থেকে থানা রোড, বাস স্ট্যান্ড ও শিমলা বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদের মধ্যস্থতায় তাঁর বাসভবনে জরুরী বৈঠকে ‘পুলিশ বিনা কারণে কাউকে হয়রানি করবে না’Ñ মর্মে প্রতিশ্রতি দিলে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে।’
হয়রানির শিকার কিশোর মামুন মিয়া জানায়, ‘সে মাদক ব্যবসায়ী বা মাদকাসক্ত নয়; দোকানে চা খেতে গেলে কিছু বুঝে উঠার আগেই পুলিশ তাকে ধরে পকেটে ইয়াবা তুলে দেয়। এর প্রতিবাদ জানালে দোকানদার ও আরো দুই ছাত্রকেও আটকের চেষ্টা করে।’
জানা গেছে, এলাকাবাসীর বিক্ষোভে মুখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ তাঁর বাসভবনে পুলিশকে জরুরী বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। রাত ১১টার দিকে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজেদুর রহমান ও ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ মোহাব্বত কবীর বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ওই কিশোর ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রায় ঘন্টাব্যাপি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর ওসি মাজেদুর রহমান ‘ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি ও ভবিষ্যতে নিরিহ কাউকে হয়রানি করা হবে না’- মর্মে প্রতিশ্রুতি দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ব্যাপারে উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘বৈঠকে পুলিশ ভুল স্বীকার করেছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তা প্রতিশ্রুতি দিলে গ্রামবাসী ফিরে যায়।’
অভিযুক্ত এসআই আমিনুর ও আবু সামা কিশোরকে ইয়াবা ব্যবসায়ী অপচেষ্টা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মাদকের অভিযান চলাকালে সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি করলে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়। পরে লোকজনের চাপের মুখে তাদের ছেড়ে দিয়ে আসি।’
সরিষাবাড়ী থানার ওসি মাজেদুর রহমান বলেন, ‘ভুল তথ্যে অভিযানে গিয়ে পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে একটু সমস্যা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে কোনাবাড়ীর প্রায় অর্ধশত লোক জানান, সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের কয়েকজন অফিসার দীর্ঘদিন ধরে দালালদের মাধ্যমে অনেক নিরিহ লোককে মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক সেবী বানিয়ে থানায় ধরে এন টাকা কামাইয়ের পথ করেছে। এতে ওসি সংশ্লিষ্ট ঐ অফিসার ও ঐ দালাল প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এ পরিস্থিতি সদ্য বিদায়ী ওসি রেজাউল ইসলাম খান চালু করে গেছে। বর্তমান ওসি মাজেদুর রহমান এখনো ্ঐ অবস্থা তেরী করতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।