একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হলে বিএনপি নতুন করে রাজনৈতিক সংকটে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলায় বিএনপি সরাসরি জড়িত। সেপ্টেম্বরে রায় হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। এজন্য বিএনপি অখুশি।
গতকাল সকালে বনানী আইভি রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে, হাওয়া ভবনের সরাসরি পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় সেদিন কিলাররা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। সেপ্টেম্বরে রায় হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। রায় হচ্ছে জেনে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। এজন্য সবাই খুশি হলেও বিএনপি অখুশি, বিচলিত, চিন্তিত। কারণ, রায় বের হলে তারা নতুন করে সংকটে পড়বে। তারা এমনিতেই সংকটে আছে।
তিনি বলেন, এখানে অন্য কোনো পার্টি নেই, তখন খালেদা জিয়া সরকার। তারাই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, কারণ তারা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। হত্যাকারী যেই হোক, যত প্রভাবশালী হোক ক্ষমা পাবে না। বিচারের রায় আমরা প্রভাবিত করতে চাই না। নিরপেক্ষ বিচার হচ্ছে, স্বাধীন বিচার হবে। বিচারে যারাই দোষি সাব্যস্ত হবে, শাস্তি তাদেরকে পেতেই হবে।
কাদের বলেন, তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকার, তারেক রহমান মাস্টার মাইন্ড হাওয়া ভবনে পরিকল্পনা। একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলীয় নেতা, সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ করতে গিয়ে আমরা সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন।
গ্রেনেড হামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে বিচার প্রভাবিত হবে বলে দাবি করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি তো বুঝতে পারলাম না কীভাবে প্রভাব পড়বে? আমিসহ ৫০০ জন তো এখনও পঙ্গু। কেউ অর্ধ পঙ্গু, কেউ পুরো পঙ্গু। এই হত্যাকান্ডের কি বিচার হবে না? বিএনপি তো আলামত পুড়িয়ে ফেলেছিল। এফবিআইকে তদন্ত করতে দেয়নি। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দেয়নি। জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল। এই নির্মম হত্যাকান্ডের, এই নৃশংস গ্রেনেড হামলা, যা রক্তগ্রোত বইয়ে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে, এর বিচার তো তারা (তৎকালীন সরকার) করেনি। প্রহসনমূলক একটা তদন্ত কমিটি করেছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছিল হাস্যকর।’
বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলেছে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘তারা কি প্রতিহত করবে। তারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চাইলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, একেএম এনামুল হক শামীম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মারুফা আক্তার পপি এবং ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ঈদের দিন বুধবার (২২ আগস্ট) নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ঈদুল আজহার নামাজ আদায় শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনে না এসে বিএনপি যদি জ্বালাও পোড়াও করে, তবে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। বিএনপি যদি সন্ত্রাস-সহিংসতার আশ্রয় নেয়, তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা প্রতিহত করব।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আসতে বিএনপির কোনো ভয় নেই। কারণ, সরকার নির্বাচন পরিচালনা করবে না। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। কাজেই নির্বাচন নিয়ে বিএনপির শঙ্কার কোনো অবকাশ নেই।###