পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশের সব উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিলেও নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। দেশের ৪৬০টি উপজেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩৯টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। আগামী ডিসেম্বরে ৮০টি উপজেলায় বিদ্যুৎ পৌঁছানোর চেষ্টা করছে পলী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। বর্তমান সরকারে শেষ সময়ে সবমিলিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩১৯টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুৎ পেতে পারে। বাকিগুলোতে সংযোগ দিতে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানাগেছে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন,দেশের ৯০ ভাগ মানুষের কাছে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে সরকার। চলতি বছরের মধ্যে সব ঘরে বিদ্যুৎ যাবে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডেন চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অবঃ) বলেন, ২৩৯টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে বাকি গুলো করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই মূহুর্তে আরইবির বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছি না। এইজন্য হয়তো কিছু দেরি হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করতে পারি। তিনি বলেন, গতবছর ৩৯ লাখ পরিবারকে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি। শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে হলে আর মাত্র ৩৬ লাখ পরিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ দিতে হবে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসরে পরে ঘোষণা দিয়ে বলেছে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সব ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে। এই ঘোষণাকে আরও একধাপ এগিয়ে আরইবি জানিয়েছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের প্রকল্প শেষ করবে তারা। বছরের প্রায় আট মাস পেরিয়ে দরজায় কড়া নাড়ছে গেছে ডিসেম্বর। ৩১ জুলাইয়ের হিসেব অনুযায়ী দেশের ছয়টি বিতরণ কোম্পানিতে নতুন সংযোগের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছিল ১ কোটি ৮৭ লাখ ১১ হাজার ৭৮০টি। এরমধ্যে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ১৭৭টি বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। আবেদন জমা রয়েছে৭ হাজার ৬০৩টি।
চলতি বছর শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। এখন প্রতিষ্ঠানটি বলছে আগামী বছর শেষ হবে এই প্রকল্প। শতভাগ বিদ্যুতায়ন না হওয়ার মূল কারণ হিসেবে আরইবি সূত্রগুলো পরিকল্পনা মাফিক সব লাইন নির্মাণ করতে না পারাকে দায়ী করছে। এছাড়া রয়েছে বিদ্যুতের ব্যাপক চাহিদা। এখনও পলী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো প্রতিমাসে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে। মাস পার হতেই আবার লাখ লাখ আবেদন এসে জমা হচ্ছে। নতুন করে আবার সেসব সংযোগ দেয়া হচ্ছে।
আরইবির একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে জানান, কোন কোন ক্ষেত্রে বিদ্যুতের মিটার পাওয়া একটু কষ্টকর ছিল। আবেদন করার পর সংযোগ পেতে একটু বেশি সময় প্রয়োজন হতো। এখন যেহেতু শতভাগ সংযোগের কাজ চলছে তাই সংযোগ দেয়া দ্রুত এবং সহজতর হয়েছে। সঙ্গত কারণে আগে একটি মিটার থেকে গ্রামের অনেকগুলো পরিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতো। এখন তারা প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন মিটার নিচ্ছে। যাতে করে ব্যবহারকারির সংখ্যা বাড়ছে। নতুন সংযোগের পরিমাণও বাড়ছে। তবে কোন কোন এলাকায় বিদ্যৎ থাকার পরও এত বেশি সংখ্যক সংযোগ দিতে হবে তা আমাদের ধারনার বাইরে ছিল। তিনি বলেন, শুধু সংযোগ দিলেই হয় না। সেখানের ট্রান্সফরমার, লাইন এবং সাবস্টেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়। এইসব কাজ করতে সময় প্রয়োজন। আমরা অনেক দ্রুত কাজ করছি কিন্তু তাও এই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা কঠিন হবে। এজন্য আগামী বছর পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হবে।
আরইবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪৬০টি উপজেলার মধ্যে এই পর্যন্ত ৭৯টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরও ১৬০টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ৮০টি উপজেলা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে। এ হিসেবে ডিসেম্বর নাগাদ ৩১৯টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা যাচ্ছে। বাকি থাকবে আরও ১৪১টি উপজেলা। বগুড়ার আদমজী থানার মকলেছুর রহমান জানান, তার গ্রামের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগের খুটি গেছে কিন্তু সংযোগ লাগেনি এখনো। তিনি বলেন, এর জন্য গ্রামের লোকজনের নিকট টাকাও নেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা করা উপজেলার গুলোর মধ্যে গোপালগঞ্জের ট্ঙ্গুীপাড়া, নারায়ণগঞ্জ বন্দর, নরসিংদির পলাশ, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, কুমিলার আদর্শ সদর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর ২০১৭ সালের ১ মার্চ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, কেরাণীগঞ্জ, মুজিবনগর, সাভার, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, দাগনভুইয়া এবং সৈয়দপুরকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয়া হয়।
২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের মোলাহাট ও ফকিরহাট, দিনাজপুরের হাকিমপুর, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট সদর, ভেড়ামারা, ভৈরব, সীতাকুন্ড এবং নরসিংদী সদরকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এর পরে আরো হাহার হাজার গ্রাম এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি বলে জানা গেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ধামরাই, কিশোরগঞ্জ নিকলী, চট্টগ্রামের রাউজান, রংপুরের পীরগঞ্জ, কুষ্টিয়ার খোকসা, সাতক্ষীরার দেবহাটা, খুলনার রূপসা, ফুলতলা, দিঘলিয়া, নাটোরের বাগাতিপাড়া, পাবনার বেড়া, সিলেটের বিয়ানিবাজার এবং চুয়াডাঙ্গা সদর শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় উদ্বোধন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।