Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কোটিপতির নামে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা!

জয়পুরহাট থেকে মুহাম্মদ আবু মুসা | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশিগংগা ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোটিপতি বিধবা করিমননেছা পাচ্ছেন বিধবা ভাতা। জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া মালিগাড়ি গ্রামের মৃত নওশের আলী দেওয়ানের বিধবা পত্মী করিমননেছা তার বিলাসবহুল দৃষ্টিনন্দন দোতালা বাড়ির বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছেন। এই দৃষ্টিনন্দন বাড়িতে তার ছেলেমেয়ে কেউই থাকেন না। তারা থাকেন জয়পুরহাট জেলাশহরে নিজস্ব বাসায়। মা করিমননেছাকে দেখভাল করার জন্য শফিকুল নামের একজন তার স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা বিধবা ভদ্রমহিলাকে এ প্রতিনিধি প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আল্লাহর রহমতে ভালো আছি বাবা, এতদিন না পেলেও এই প্রথম বিধবা ভাতা পেতে শুরু করেছি মাত্র।
অপরদিকে, একই গ্রামের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত জিয়াউল হক কাজীর বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লে তিনি হাস্যোজ্জ্বল মুখে বেরিয়ে এসে কুশল বিনিময় করে জানান, আল্লাহর রহমতে এ বারই বয়স্ক ভাতার তালিকাভুক্ত হয়ে প্রথমবারের টাকা উত্তোলন করেছি। আমার দুই ছেলে সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছেন। কিছু জমাজমিও চাষাবাদ করি। সব নিয়ে বেশ ভালো আছি। একই গ্রামের ফকিরপাড়ার বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্ত আলহাজ আবুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ১৯৯৯ সালে হজ পালন করেছি। একমাত্র ছেলে আব্দুল কাদের মাদরাসা শিক্ষক। নিজস্ব ১০-১২ বিঘা জমি চাষাবাদ করি। এবারেই প্রথম বয়স্ক ভাতার টাকা পেয়েছি।
ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরবানু খাতুন জেলা প্রশাসক বরাবরে এবং সমাজসেবা অধিদফতরসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করে বিগত ২৮ মে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় নিয়ম বহির্ভুতভাবে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তালিকাভূক্ত হলেও হতদরিদ্ররা সরকারের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ওই গ্রামের হতদরিদ্র স্বামী পরিত্যক্তা জসিম আকন্দর মেয়ে বৃদ্ধা আবেদা অক্ষেপ করে বলেন, আমরা সহায়-সম্বলহীন। ধড়পাকরের লোক নাই। ওই দোতালার লোকেরা ভাতা পাবে, আমরা পাবো না। ইউপি চেয়ারম্যান হাইকুল ইসলাম লেবু মোল্লা বলেন, নিয়ম নীতি মেনে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। দু-একটা ত্রুটিবিচ্যুতি থাকতে পারে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার গওসুল আজম বলেন, ইউনিয়ন কমিটি যাচাই-বাছাই করে আমাদের তালিকা পাঠায়। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি। তবে নিয়ম বহির্ভুত হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বয়স্ক ও বিধবা ভাতা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ