বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজধানী ঢাকাকে বাঁচাতে সমন্বিত পরিকল্পনার জন্য একটি ওয়ার্কিং কমিটি দরকার বলে মন্তব্য করে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অতি স¤প্রতি লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট এক গবেষণায় ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য বিশ্বের দ্বিতীয় শহর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি যে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে এই ঘোষণা দিয়েছে, সেগুলো হচ্ছে, অবকাঠামো স্থিতিশীলতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ। রাজধানী ঢাকায় এই পাঁচটি বিষয়ের অবস্থা খুবই নাজুক। এ অবস্থায় ঢাকাকে বাঁচাতে হলে একটি কার্যকর সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার। পাশাপাশি সমন্বিত পরিকল্পনার জন্য দরকার একটি ওয়ার্কিং কমিটিও।
গতকাল শুক্রবার সকালে ‘অবসবাসযোগ্য নগরীর তালিকায় অন্যতম ঢাকা: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ কথা বলেন। পবা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ সংশিষ্ট ৫৪টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জন-অধিকার বিশেষজ্ঞসহ সংশিষ্টদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী ওয়ার্কিং গঠন করতে হবে। তা না হলে ঢাকা শহরকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত সাত বছর ধরে বসবাসেরর অযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ নম্বরে ওঠানামা করছে রাজধানী ঢাকা। ঢাকার বর্তমান অবস্থার দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যায়, এ শহরে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় দুই লাখ লোক বাসবস করে। শহরে বসবাসকারী জনসংখ্যার ৪০ ভাগ হচ্ছে ঢাকায়। দেশের জিডিপি’র ৩৫ শতাংশ ঢাকা থেকে আসে এবং দেশের সামগ্রিক কর্ম সামর্থ্যরে ৩০ ভাগ ঢাকাতে বসবাস করে। ঢাকার বস্তিগুলোর জন-ঘনত্ব বাংলাদেশের একটি সাধারণ গ্রামের তুলনায় ৩০ ভাগ বেশি। এই প্রেক্ষাপটে ঢাকার অবস্থাকে বিশ্লেষণ করতে হবে।
এ অবস্থায় ঢাকাকে বাঁচাতে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে দুই সিটি কপোরেশন, রাজউক, ওয়াসা, ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট ৫৪টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন কর হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করার লক্ষ্যে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। এই ওয়ার্কিং কমিটিতে শহরে বসবাসের উপযোগিতার সঙ্গে যুক্ত নগর পরিকল্পনাবিদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদীসহ এ বিষয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করতে হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় সরকার, স্থানীয় সরকার এবং জনগণ যুক্ত থাকবে। ঢাকা শহরে বর্তমানে সেবা প্রদান এবং উৎপাদন, এই দু’ধরনের কর্মকান্ডের প্রাণ কেন্দ্র। ঢাকায় শহরভিত্তিক এই উৎপাদনমুখী কর্মকান্ডকে ক্রমান্বয়ে রাজধানীর বাইরে পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। ঢাকা শুধু কেন্দ্রীয় সেবা প্রদানের ক্ষেত্র হবে। এজন্য সারাদেশে কার্যকরী প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রিকরণ করতে হবে।
পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সোবহান, নাসফ’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৈয়ব আলী, সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ, গ্রিন ফোর্সের সমন্বয়ক মেসবাহ সুমন, নবযাত্রা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আজমল হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন পবা’র সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।