Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়পুরহাটে অবৈধ ইটভাটা

হুমকিতে ফসলি জমি

জয়পুরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

প্রতি বছরই সরকারি কোনো নিয়ম না মেনেই লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই জয়পুরহাটে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। এতে হুমকির মুখে পড়ছে আশপাশের জমির ফসল ও পরিবেশ। ছোট রাস্তায় মেসি-ট্রাক্টরে ভাটার মালামাল ও মাটি সরবরাহের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে ভাটা নির্মাণের দুই মাসের মধ্যে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে অভিযোগ করেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও ফসলি জমির আশেপাশে ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না, এমন সরকারি নীতিমালা থাকলেও কিন্তু তা মানছেন না এলাকার প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা। জয়পুরহাট সদরের ভাদসার সগুনা চারমাথা দিওর এলাকার বাজারের কাছাকাছি মুন ব্রিক্স নামে নতুন একটি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন বাচ্চু রহমান ও পাশের ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী চেয়ারম্যান। এদিকে ভাটা নির্মাণের মালামাল সরবরাহের সময় মেসি-ট্রাক্টরে দুর্ঘটনায় প্রায়ই হতাহত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী অবিলম্বে এই অবৈধ ভাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। গত ০৫ আগস্ট জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর ভাটা মালিক দুইজনকে বিবাদী করে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভাটা এলাকার হেলাল হোসেন। অভিযোগে তিনি বলেছেন, আমার বাড়ির মাত্র ২০ গজ দূরেই ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। বারবার আমিসহ স্থানীয় বহু মানুষ ভাটা নির্মাণে নিষেধ করলে ভাটামালিকরা প্রভাবশালীরা হওয়ায় তারা কাউকে তোয়াক্কা না করেই ভাটা নির্মাণের কাজ চালিয়েই যাচ্ছেন। এ ছাড়াও ভাটার নির্মাণের মালামাল সরবরাহের গাড়িতে একজন নিহত ও একজন পঙ্গু অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ওই ভাটার কারণে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। ভাটার চারিদিকে ফসলি জমির ধান, গম, ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, হলুদ, কলা, পটল, পাটসহ ফসল বিনষ্ট হচ্ছে এবং হবে। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে ভাটা বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করার পরও প্রভাবশালী ভাটামালিক ভাটা নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছেন। এ অবস্থায় আমরা চরম হতাশ।
নির্মাণাধীন মুন ব্রিক্সের মালিক মো. বাচ্চু রহমান বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র এখনো পাইনি। লাইসেন্সের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট প্রস্ততি চলছে। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, ভাটা নির্মাণের অনিয়ম বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ আসে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আ ত ম আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, আমাদের নিকট অবৈধভাবে ভাটার নির্মাণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ এসেছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফসলি জমি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যত্রতত্র প্রভাবশালীদের এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এমনটাই আশা করছেন ইটভাটা এলাকার সাধারণ মানুষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ