Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলোহীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই সেতু

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

আসন্ন ঈদযাত্রায়ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই লেনের সেতুগুলো ভোগান্তির অন্যতম কারণ হবে বলে আশঙ্কা চালক ও স্থানীয়দের। জানা গেছে, এই মহাসড়কে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। চার লেনের মহাসড়কে ৬০-৮০ কিলোমিটার গতিবেগের গাড়ি দুই লেনের মেঘনা- দাউদকান্দি সেতুর ওপর ওঠার সময় গতি ১০ কিলোমিটারে নেমে আসে। তখনই মহাসড়কের ওই অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এর মাঝে যুক্ত হলো সেতু দুইটির আলোহীন বাতি। দু’পাশেই সোডিয়াম বাতির জন্য ‘পোল’ থাকলেও বাতিগুলোই অকেজো হয়ে আছে বছরের পর বছর। সেতুর বাতিগুলোর নিস্ক্রিয়তার কারণেই ভয় আর আতঙ্ক নিয়েই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলরত গাড়ির আলো দিয়েই চলে যানবাহন। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে অত্যন্ত ২০ হাজার যানবাহন। আর অন্ধকারের কারনেই প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে দুর্ভোগ।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনের হলেও মেঘনা-গোমতী ও মেঘনা সেতু দু’ লেনের। ফলে সব গাড়ি দ্রুত গতিতে এসে স্বাভাবিকভাবেই সেতুর টোল প্লাজার সামনে গতি কমিয়ে দেয়। আবার টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে একটি গাড়ি সেতুতে উঠতে উঠতে পেছনে লম্বা সারির সৃষ্টি হয়। এতে এই সারি দীর্ঘ হতে হতে তীব্র জটের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পৌঁছায় অসহনীয় অবস্থায়। তবে যানজটে আটকে থাকা বিভিন্ন প্রাইভেট ও গণপরিবহনের যাত্রীদের মতে, দায়িত্বরত হাইওয়ে পুলিশ ও সেতু কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ের অভাব ও উভয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে না থাকায়, টোল প্লাজায় টোল দিতে সময় বেশি লাগে। এছাড়া কিছু চালক উল্টো পথে চালান বলেন বলেই যানজট বেশি হয়। তার ওপর দাউদকান্দির টোলপ্লাজায় বসানো হয়েছে ট্রাক ওয়েট মেশিন। এর ফলে শুধু ট্রাক নয় কোনো গাড়িই এখন ওয়েট মেশিনের প্রক্রিয়া শেষ না করে টোল প্লাজা পার হতে পারছে না। রাতে দালালেরা টাকা আদায়ের জন্য ওজন কম এমন গাড়িও স্কেলে ঢোকাতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে চালকের সঙ্গে তাদের বাকবিতন্ডায় স্বাভাবিকভাবেই যানজট দীর্ঘ হয়। দালালদের ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিলে নিস্তার পাওয়া যায়। রাতে মালবাহী যানের চাপ বেশি থাকায় দালালদের অত্যাচারও বেড়ে যায়। যেখানে আগে যে সময়ে তিন থেকে চারটি গাড়ি টোলপ্লাজা পার হতে পারতো এখন সে সময়ে একটি গাড়ি পার হচ্ছে। এর ফলেই ব্রিজের টোল প্লাজার উভয় পাশে যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। যাত্রী এবং সাধারণ মানুষের দাবি, যেহেতু টোল প্লাজায় শুধু ট্রাক পরিমাপ করতে হয়, তাই ট্রাকের জন্য আলাদা লাইন বা আলাদা স্থান নির্ধারণ করা উচিৎ।
এদিকে গত রবিবার (১২ আগষ্ট) দিনগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সরেজমিন মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত প্রায় ৯শ’ মিটার দীর্ঘ এ সেতু ঘুরে দেখা গেলো সেতুটিতে বাতি না থাকায় অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন।
জানা গেছে, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথে পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়কটিতে যানবাহনের চলাচলের জন্য মেঘনা সেতুটি ১৯৯২ সালের শুরুর দিকে এ সেতু উদ্বোধনের পর সেতুর দু’পাশে সোডিয়াম বাতি লাগানো হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এসব বাতি জ্বললেও প্রায় বছর দুই এক ধরে আর আলো দিচ্ছে না। সবগুলো বাতিই অকেজো হয়ে আছে। অপরদিকে গোমতী নদীর উপর নির্মিত প্রায় ১৪শ’ মিটার দীর্ঘ দাউদকান্দি সেতুটি ১৯৯৫ সালে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পরে সেতুটি আলোকসজ্জাও করা হয়। পরবর্তীতে নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে সেতুটির সোডিয়াম লাইটগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বাতিগুলো এখন জ্বলে না। অথচ প্রতিদিন এই দুটি সেতুর ওপর দিয়ে গড়ে বিশ হাজার বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। এ হিসাবে প্রতি মাসে ৫০ কোটি টাকারও বেশি টোল আদায় হচ্ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই সেতুদিয়ে চলাচলরত এশিয়া পরিবহনের ড্রাইভার জসীম উদ্দিন বলেন, সড়কবাতিগুলো না জ্বলার কারণে প্রতিনিয়তই নিরাপত্তাহীনতায় পথ চলতে হয়। টোল আদায় করে কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা পকেটে ভরলেও এদিকে কারো খেয়াল নেই। অন্ধকারাচ্ছন্ন সেতুতে নেশাখোররা ছিনতাইয়ে নামে। নষ্ট হওয়া বাতিগুলো আলো ছড়ালেই ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে, মনে করেন এ চালক। এসব বিষয়ে সেতু দুইটির রক্ষাবেক্ষণ কাজের জন্য নিয়োজিত নারায়নগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিউল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সেতু দুইটিতে বাতি জ¦লে না বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।



 

Show all comments
  • বৃষ্টি ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫২ এএম says : 0
    মন্ত্রীরা আছেন বিএনপি নিয়ে এগুলো দেখার সময় কী তাদের আছে ?
    Total Reply(0) Reply
  • ভূমি ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫৩ এএম says : 0
    এটা তো খুবই আতঙ্কের বিষয়
    Total Reply(0) Reply
  • আবুল কাসেম ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫৩ এএম says : 0
    অনতিবিলম্বে এর সমাধান করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Nurul Afsar ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ১:১২ পিএম says : 1
    Digital !!!!!!!!!!!!!!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ