পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সড়ক-মহাসড়কে চলছে ফিটনেসহীন যানবাহন। মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ এবং নিষিদ্ধ ছোটযান। যত্রতত্র বাস, মিনি-বাস দাঁড় করিয়ে চলছে যাত্রী উঠা-নামা। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া চালকের পাশাপাশি কিশোরদের হাতেও গণপরিবহনের স্টিয়ারিং। যেখানে-সেখানে পার্কিং-চলছে বেপরোয়া গতিতে যাত্রী ধরার প্রতিযোগিতা।
চট্টগ্রাম মহানগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সড়ক-মহাসড়কে এখনও শৃঙ্খলা ফিরেনি। নগরীতে লক্কর-ঝক্কর গাড়ির সাথে চলছে অবৈধ রিকশা, অটোরিকশা। রাস্তা দখল করে রাখা হচ্ছে যানবাহন।
এতে করে চলমান ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যেও তীব্র যানজটে অচল হয়ে পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা আর জরিমানা আদায় করে দায় শেষ করছে ট্রাফিক পুলিশ। ফলে জনভোগান্তিহীন নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। তবে বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলেন যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে তাতে সবার মধ্যে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। ধীরে ধীরে সড়ক আর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আসবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও গত ৪ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ। এর মধ্যে ট্রাফিক সপ্তাহের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নগরী এবং জেলার ৩২টি থানা এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে চলছে যানবাহনের কাগজপত্র তল্লাশি। যেসব যানবাহনের ফিটনেস সনদ, টেক্স টোকেন ও চালকের লাইসেন্স নেই সেসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন মহানগরী ও জেলায় কয়েক হাজার মামলা দেওয়া হচ্ছে। অভিযানের মুখে লক্কর-ঝক্কর গণপরিবহন চলাচল কমে যাওয়ায় মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন সঙ্কট দেখা দেয়। আর এই সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছে।
ট্রাফিক সপ্তাহে অন্যতম উদ্দেশ্য সড়কে শৃঙ্খলা আনা। তবে গত কয়েক দিনেও সড়কে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি। এখনও নগরীর যত্রতত্র পার্কিং চলছে। সিটি সার্ভিসের বাস, মিনি-বাস বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। যেখানে খুশি সেখানে যাত্রী উঠানো নামানো চলছে। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কেও দিনের বেলায় চলছে ভারী যানবাহন। অথচ বন্দর এলাকা ছাড়া নগরীতে দিনের বেলায় ট্রাক, কার্ভাড ভ্যানসহ ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ।
নগরীতে রাস্তার দুপাশে বাস, মিনিবাস দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। যানজট কমাতে বন্দরমুখী ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরী টোল রোডে দেখে বুঝার উপায় নেই এটি সড়ক না টার্মিনাল। বন্দর পয়েন্ট থেকে শুরু করে পাহাড়তলী পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে হাজার হাজার ভারী যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। একই অবস্থা বন্দর ফ্লাইওভারেও। নগরীর ভিআইপি রোড হিসাবে পরিচিত বিমানবন্দর সড়কের বিজয়নগর থেকে ১১ নম্বর জেটি হয়ে ড্র্ইাডক পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে শত শত ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান পার্কিং করা। একই অবস্থা বিমানবন্দরের অদূরে পতেঙ্গা সৈকত থেকে কাটঘর মোড় পর্যন্ত সড়কে। বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালের শত শত ভারী যানবাহন রাখা হচ্ছে রাস্তা দখল করে। আবার বন্দরে প্রবেশ করতে কয়েকশ ভারী যানবাহনের দীর্ঘ লাইন ইপিজেড থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত সড়কে। কখনো সড়কের দুইপাশে রাখা হচ্ছে এসব ভারী যানবাহন।
ফলে ওই এলাকা তীব্র যানজটে অচল হয়ে পড়ছে। গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই এলাকায় টানা যানজট ছিল। এতে করে ওই এলাকার বাসিন্দারা ছাড়াও হজ ও বিমানযাত্রীদের পাশাপাশি ইপিজেডসহ বিভিন্ন কলকারখানার লাখ লাখ শ্রমিক এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। নগরীর চারটি প্রবেশপথেই চরম বিশৃঙ্খলা। প্রবেশ পথকে ঘিরে শুরু হওয়া যানজটন নগরীতে ছড়িয়ে পড়েছে। নগরীর বেশিরভাগ ব্যস্ততম মোড়ে নেই ফুটওভার ব্রীজ। ফলে রাস্তা পার হতে হচ্ছে ঝুুঁকি নিয়ে। যে কয়টি ফুটওভার ব্রীজ আছে তাও চলাচলের অযোগ্য। নগরীর স্কুল ও কলেজসমূহের সামনে জেব্রাক্রসিং মার্কিং করা হলেও অচল সড়ক বাতি। হাতের ইশারায় চলছে যানবাহন। ফুটপাত এবং সড়ক বেদখল হওয়ায় পথচারিদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ অভিযান শুরু করলেও নগরীতে অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে কোন অভিযান নেই। সিটি কর্পোরেশনের হিসাবে নগরীতে বৈধ রিকশা মাত্র ৫২ হাজারের মতো। আর অবৈধ রিকশার সংখ্যা এর প্রায় চারগুণ বেশি। নগরীর সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে যানজটের অন্যতম কারণ অবৈধ রিকশার জোয়ার।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চলমান ট্রাফিক সপ্তাহে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাক্সিক্ষত সুফল না পাওয়ার পেছনে বাস্তব কিছু সমস্যা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ মহানগরীতে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু সে অনুপাতে সড়ক নেই, নেই কেন্দ্রীয় কোন বাস ও ট্রাক টার্মিনাল। এরপরও ট্রাফিক পুলিশ যানজট কমিয়ে আনতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন, পুলিশি তৎপরতার ফলে নগরীতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
এদিকে অভিযানের মুখে যানবাহনের কাগজপত্র হালনাগাদ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে বিআরটিএ কার্যালয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে সবাই। গত কয়েকদিনে বিআরটিএ কার্যালয়ে প্রচন্ড ভিড়। বিআরটিএ চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুল হুদা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, স্বাভাবিক সময়ে যেখানে দুইশ যানবাহন আসতো এখন প্রতিদিন গড়ে সোয়া তিনশ যানবাহন আসছে। যানবাহনের কাগজপত্র হালনাগাদ করার পাশাপাশি ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়ার হারও বেড়ে গেছে। আগে যেখানে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য একশটি আবেদন জমা পড়তো এখন সেখানে দিনে তিনশটি আবেদন জমা পড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।