বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের নামে ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকার ভুয়া প্রকল্পটি আটকে দিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান। জেলার মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালি চক্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট পরিচালককে প্রভাবিত করে এই বরাদ্দটি ছাড় করান বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ন-২ প্রকল্প থেকে সারাদেশের দরিদ্র মানুষের আশ্রায়ণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে “যার জমি আছে ঘর নেই তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ” কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় যাদের নিজস্ব জমির পরিমাণ ১০ শতাংশের কম তাদের জন্যে পরিবার প্রতি ১ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ঘর নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি থেকে চাহিদা পত্র প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে আলোকে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান চলতি বছরের ১১ মার্চ তারিখে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন থেকে ১০ জন করে চিহ্নিত ৮০ জন ভিক্ষুকের তালিকা প্রেরণ করেন। কিন্তু গত ৪ জুন তারিখে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প থেকে একই স্মারকে ওই ৮০ জন ভিক্ষুকের নামের সাথে আরো ১৮৭ জনের নাম জুড়ে দিয়ে সর্বমোট ২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত সংযুক্ত তালিকার ১৮৭ জনের মধ্যে বিনোদপুর ইউনিয়নেরই রয়েছে ৭০ জনের নাম। এছাড়া বাবুখালি ও দীঘা ইউনিয়নে ৪০ জন করে, মহম্মপুর সদর ইউনিয়নে ৩৫ জন এবং বালিদিয়া ইউনিয়নে ২ জনের নাম রয়েছে। যার অধিকাংশই সুবিধা পাওয়ার অযোগ্য বলে তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা গেছে।
তালিকাভূক্ত সদস্য বিনোদপুর ইউনিয়নের কানুটিয়া মিয়া পাড়ার কৃষক আবুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে ২৭ বন্দের একটি টিনের ঘর দেখা যায়। এ ছাড়া মাঠে এক বিঘারও বেশি আবাদি জমি রয়েছে তার। একই ইউনিয়নের ঘুল্লিয়া গ্রামের শহিদুল মোল্যার বাড়িতে পাকা দালান এবং এক বিঘা পরিমাণ ফসলি জমি থাকলেও তাকে মাত্র ৬ শতাংশ জমির মালিক দেখিয়ে নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। একই অবস্থা কানুটিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলি শেখসহ অধিকাংশেরই। অথচ এইসব ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের অর্থ নিয়ে তাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিলেও যাচাই বাছাই বিহিন অতিরিক্ত তালিকা নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে উপজেলা প্রশাসন। অথচ মহম্মদপুর উপজেলার চিহ্নিত প্রভাবশালী ওই চক্রটি ভূয়া তালিকাভূক্ত ১৮৭ জনের অনুকুলে অর্থ বরাদ্দের জন্যে দেন দরবার শুরু করায় হযরবল অবস্থা দেখা দিয়েছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কানুটিয়া বাজারের ওষধ ব্যবসায়ী আওয়ামীলীগ নেতা মহর ডাক্তারের ভাই শাহ আলমের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম শামসুদ্দিনের রয়েছে ঘনিষ্টতা। তারই সূত্র ধরে মহর ডাক্তার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসনকে পাশ কাটিয়ে এই ভূয়া প্রকল্পের অনুকুলে টাকা ছাড় করিয়েছেন।
এ বিষয়ে ডাক্তার মহর আলি বলেন, এলাকার মানুষের উপকারের লক্ষ্যেই মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের জনৈক প্রভাবশালী নেতার সহযোগিতায় তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন দূর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়নি।
এলাকার মানুষের উপকারের স্বার্থে অর্থ ছাড়ের জন্যে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে উক্ত নেতা সুপারিশ করেছেন বলে জানান।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার কার বলেন, ইতোমধ্যে সমুদয় টাকা উত্তোলনও করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তি করণিয় বিষয়ে জানতে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কাছে নির্দেশনা চাওয়া হলেও সেখান থেকে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।