পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের প্রকল্পের কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর এবং বদলী বাণিজ্যের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। অভিযোযুক্ত এরা হলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা মিন আরা, উপ-পরিচালক শেখ মোতালিব, উপ-পরিচারক (পরিকল্পনা) ডা: রাজিব হাসান, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকতা রেজাউল করিম, এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম।
এছাড়া সরকারি নিয়ম বহিভূত ভাবে প্রকল্পের আওতায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বদলী করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিবকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার পর কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জিল্লার রহমান ইনকিলাবকে বলেন, অভিযোগ সঠিক হলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেযা হবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রমোশন অব সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচ্যুনিটিজ টু দ্য ডিজঅ্যাবল পারসন্স ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ৩০ জুন শেষ হয়। বর্তমানে প্রকল্পটিতে ৬ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এসব কর্মকর্তা- কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হলে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দিতে হবে। এমন প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দেখিয়ে প্রকল্পের দুইজন উপপরিচালক শেখ মো. মোতালেব ও রাজিব হাসান এবং হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল কমির নাসির উদ্দিন নামে ন্যাশনাল ব্যাংক বনানী শাখার মাধ্যেমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। দুই বছর থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের না হওয়ার ঘুষের টাকা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। পরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এঘটনাকে কেন্দ্র দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, বদলী বাণিজ্যর সাথে জড়িত প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট দেব ব্রত পাল বাপ্পী, থেরাপি সহকারি মাসুদ করিম পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জিয়াসমিন আক্তার এবং টি এম মনিরুল ইসলাম সোহাগ। তারা সকলেই মিলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বদলী বাণিজ্য করে আসছে। সম্প্রতি বদলী বাণিজ্যের সময় টাকা নিয়ে অফিসে বির্তকের সৃষ্টি হওয়ার কারণে টি এম মনিরুল ইসলাম সোহা কে মিরপুর থেকে লালবাগে বদলী করা হয়। ফাউন্ডেশনের প্রতিবন্ধীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সহায়ক উপকরণ হুইলচেয়ার ,ট্রাইসাইকেল, ক্র্যাচসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম করা হয়েছে। এসব অনিয়েমের সাথে উপপরিচালক শেখ মো. মোতালেব ও রাজিব হাসান এবং হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জিয়াসমিন আক্তার জড়িত রয়েছে। তারা মোট অংকের টাকার বিনিময়ে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। সেই সময় এ ঘটনার সঠিক তদন্ত চেয়ে অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার। সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার ওয়াল্ড বিডিকে কাজ দেয়া হয়নি।
৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় মোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র স্থাপন করে। এর পরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ ও নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ শীর্ষক দু’টি আইন প্রনয়ন করে সরকার। সেই সংস্থার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা মিন আরার বিরুদ্ধে উঠছে নানা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হজ্জে থাকার কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্বব হয়নি।
এ প্রমোশন অব সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচ্যুনিটিজ টু দ্য ডিজঅ্যাবল পারসন্স ইন বাংলাদেশ কার্যক্রম নতুন করে চালানোর ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তিতে প্রকল্পটি গত বছরের ৩০ জুন শেষ হলেও ওই দুই উপপরিচালকসহ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযুক্তরা এখনো নিজ নিজ পদে বহাল আছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইনকিলাবকে জানান, এ বছরে চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার জন্য হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম এবং দুইজন উপপরিচালক শেখ মো. মোতালেব ও রাজিব হাসান মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তার কাছে টাকা নিয়েছে। টাকা নেওয়ার পরও তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়ায় তারা উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে চাইলে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা তাদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচারণ করেন। এ ছাড়া ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ চাকরি হতে বরখাস্ত করার হুমকি দেন।
উপ-পরিচারক (পরিকল্পনা) ডা: রাজিব হাসান ইনকিলাবকে বলেন, আমি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই দাবি করে বলেন, আমি প্রকল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছি। আমাদের চাকরি মেয়াদ শেষ হয়েছে। আমরা চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার জন্য আবেদন করেছি। এত অনিয়ম হতে পারে তা আমার জানা নাই।
উপপরিচালক শেখ মো. মোতালেব বলেন, আমার নামে ন্যাশনাল ব্যাংকে কেউ টাকা দিতে পারে তার মানে এটা নয় যে কর্মচারীদের টাকা। এটা আমার টাকা। তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে। আমরা প্রকল্পটি বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি।
প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকতা রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে প্রকল্পে ৬শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে। তাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আমরা দুইটি প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার আতিয়ার রহমান কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ফাইলটি অর্থমন্ত্রলণায়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।