Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একইদিনে বিশ্বে রোজা ঈদ পালন শরীয়ত বিরোধী -মাজলিসু রুই্য়াতিল হিলাল

চাঁদ না দেখে তারিখ ঘোষণা নাজায়িজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৮, ৫:১৭ পিএম

সারা বিশ্বে একইদিনে রোজা শুরু বা ঈদ পালন করার দাবি করা শরীয়ত বিরোধী। সউদি আরব পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ অনুসরণ না করে এবং খালি চোখে চাঁদ না দেখে ‘উম্মুল কুরা’ কর্তৃপক্ষের মনগড়া নিয়ম ব্যবহার করে আরবী মাসের তারিখ ঘোষণা করায় মুসলমানদের ফরজ ইবাদত হজ্জ, রোজাসহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী বাতিল হচ্ছে। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজারবাগ দরবারের পক্ষ থেকে ‘মাজলিসু রুই্য়াতিল হিলাল’ এর উদ্যোগে “একইদিনে সারা বিশ্বে রোজা শুরু করা বা ঈদ পালন করা সম্ভব নয়” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মুফতিয়ে আ’যম আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ এবং বিশিষ্ট চাঁদ ও মহাকাশ গবেষক এবিএম রুহুল হাসান। সেমিনারে বক্তারা বলেন, সারাবিশ্বে যারা একদিনে রোযা রাখা এবং একদিনে ঈদ করার কথা বলে থাকে, সামান্যতম ভৌগোলিক জ্ঞান তাদের নেই। কেননা, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। পৃথিবীর এক প্রান্তে যখন দিন, তখন অন্য প্রান্তে পূর্ব বা পরের দিন অথবা রাত। কাজেই সেখানে তখন চাঁদ দেখার প্রশ্নই আসে না। তাহলে কি করে একদিনে সারাবিশ্বে রোযা রাখা বা ঈদ করা যেতে পারে? এটা মূলতঃ নেহায়েত অজ্ঞতা।

বক্তারা বলেন, পৃথিবীর এমন অনেক স্থান আছে সেখানে সউদী আরবের পূর্বে চাঁদ দেখা যায়। যদি কোন বছরের যিলহজ্জ মাসের চাঁদ সউদী আরবের পূর্বে অন্য কোন দেশে দেখা যায় এবং তার একদিন পর যদি সউদী আরবে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দৃশ্যমান হয় তাহলে কি সউদী আরবের পূর্বে বা আগেই প্রথমে যে স্থানে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা গেল সে অনুযায়ী হাজীদের আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকতে হবে! যদি তাই হয়, তাহলে কারো হজ্জ আদায় হবে না। সউদী আরবের আকাশে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখেই যিলহজ্জ মাস শুরু করতে হবে এবং তাদের ৯ই যিলহজ্জ তারিখে পৃথিবীর সব হাজীকে আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকতে হবে। যেখানে অবস্থান করা ফরয।

বক্তারা আরোও বলেন, অমাবস্যায় কখনো চাঁদ দৃশ্যমান হয়না বরং তার এক থেকে দেড় দিন পর চাঁদ দেখা যাবার আকৃতিতে আসে। কিন্তু যুগযুগ ধরে সউদি আরব খালি চোখে চাঁদ না দেখে উম্মুল কুরার মনগড়া নিয়ম ব্যবহার করে আরবী মাসের তারিখ ঘোষণা করায় বাংলাদেশের চেয়ে এক বা দুইদিন আগে মাস শুরু করছে। বিগত অনেক বছরের সউদী আরবের চাঁদ দেখার রিপোর্টে তার প্রমাণ রয়েছে। সউদি আরব উম্মুল কুরা’র মনগড়া নিয়ম ব্যবহার করে এভাবে চাঁদ না দেখে একদিন বা দুইদিন পূর্বে পবিত্র যিলহজ্জ মাস গণনা শুরু করলে অকুফে আরাফা অনুষ্ঠিত হয় ৭ই যিলহজ্জ বা ৮ই যিলহজ্জ তারিখে। অথচ ৯ যিলহজ্জ এর পরিবর্তে এসব দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করলে অকুফে আরাফার ফরয বাতিল হবার পাশাপাশি আরও অনেক ওয়াজিব আমল বাতিল হয়ে যায়। একইভাবে যাদের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব তাদের কেউ যদি ১০ যিলহজ্জ মনে করে ৯ যিলহজ্জ-এ কুরবানী আদায় করে তবে সে ওয়াজিবও আদায় হবে না। যার কারণে হাজীদের হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে। এমনিভাবে তারিখ হেরফের হবার কারণে মুসলমানগণের রোজা, শবে বরাত, শবে ক্বদরসহ অনেক আমলই বাতিল হয়ে যায়। সুতরাং সকলের উচিত কোন নির্দিষ্ট দেশের নিয়ম অনুসরণ না করে পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ অনুযায়ী খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা এবং সম্মানিত শরীয়তের এই নিয়ম অনুসরণ করলে একদিনে সারা বিশ্বে ঈদ পালন বা রোজা শুরু করা কখনোই সম্ভব নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ