পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত যেসব শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা। গতকাল (বুধবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃপক্ষের মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি জানান। একই সঙ্গে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন বা কারও প্ররোচনায় আন্দোলনে অংশ নিয়েছে তাদের সাধারণ ক্ষমা করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে এমন দাবি নাকচ করে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি ভিসিদের
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ক্ষমা ঘোষণা করার আমরা কে? এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এখতিয়ারবর্হিভুত। স্কুল শিক্ষার্থীরা যা কিছু ভুল করেছে সবই ক্ষমারযোগ্য। তারা কোমলমতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ম্যাচিওরড। তারা যা করেছে বুঝে শুনেই করেছে। তাদেরকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা কাউকে মুক্তি দেওয়ার অধিকার রাখি না। ছাত্ররা যদি প্রকৃত অর্থেই অপরাধ করেন, আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে কেউ যদি নিরপরাধ হয়, তা প্রমাণিত হলে সে মুক্তি পাবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের ডেকে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী । বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬৫ জন ভিসি, ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান, প্রো-ভিসি, ট্রেজারারসহ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভিসি ও বিওটির সদস্যরা রাজপথে অরাজকতা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব রটনাকারী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার দাবি জানান। তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা হয়তো কারও প্ররোচনা, গুজবে কান দিয়ে এ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তাদের যদি সাধারণ ক্ষমা দেয়া হয়, তাহলে অনুতপ্ত হবে, ভবিষতে আর কোন গুজব বা সংঘর্ষে জড়াবে না।
বৈঠকে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আবদুল মান্নান বিভিন্ন মামলায় আসামী ও গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার দাবি জানান মন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, আমরা সর্ব্বোচ চেষ্টা করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে নামা থেকে বিরত রাখতে পেরেছি। তারপরও দু-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এটাকে সাধারণ ক্ষমা করে দিলে শিক্ষার্থীরা ভবিষতে আর রাজপথে নামবে না। তার এ দাবির সঙ্গে সুর মেলান আরও কয়েকজন ভিসি।
পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের পৃথক দুই মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ৭ আগস্ট পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ এই আদেশ দেন। প্রেপ্তার আসামিরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ, সাউথইস্ট ও ব্র্যাকের ছাত্র। এর মধ্যে বাড্ডা থানা-পুলিশ ১৪ জন ছাত্রকে এবং ভাটারা থানা-পুলিশ ৮ জন ছাত্রকে আদালতে হাজির করে প্রত্যকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে।
শিক্ষামন্ত্রী ভিসিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার ইউনিভার্সিটি চালান। সব সময় থাকেন। তাই শিক্ষার্থীদের বোঝানোর দায়িত্ব আপনাদের। শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝাবেন। আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। না হয়, জবাবদিহিতা করতে হবে। কারণ আমরা মন্ত্রীরাও জবাবদিহিতার বাইরে নই। আপনার কিন্তু জবাবদিহিতা বাইরে নন।
প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সির ভিসি হান্নান চৌধুরী বলেন, বনানীতে বেশ কয়টা বিশ্ববিদ্যালয় থা লেও অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। এর কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি। তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি অতি উৎসাহী না হয় অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর কোন অ্যাকশনে যাওয়ার আগে তাদের বুঝানোটাই হবে সবচেয়ে ভাল উপায়।
হামর্দদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করেছি। পুলিশকে ক্যাম্পাসের আশপাশে আসতে দেয়নি। আমরাই নিয়ন্ত্রণ করেছি। এতে শিক্ষার্থীরা শান্ত থেকেছে। আর ক্যাম্পাসে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকলে শিক্ষার্থীর অন্য কিছু মনে করে। তিনিও শিক্ষার্থীদের সাধারণ ক্ষমা করে দেয়ার পক্ষে মত দেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের নিজস্ব কোন ট্রান্সপোর্ট নেই। তাই ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় ক্লাস পরীক্ষা নিতে পারিনি। সোমবারের ঘটনার পরও ক্যাম্পাস বন্ধ করিনি। তিনি বলেন, সরকার যদি পরিবহন সেক্টরটা স্বাভাবিক রাখতো হয়তো এ আন্দোলন এত দ‚র আসতো না। তিনি বলেন, সোমবার শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ হয়তো মাঠে ছিল কিন্তু বহিরাগত ছিল বেশি। আশা ইউনিভার্সিটির ভিসি বলেন, পরিবেশ শান্ত রাখতে হলে শিক্ষার্থীদের শান্ত রাখতে হবে। সেজন্য তাদের স্বার্থের বাইরে যায় এরকম অকল্যাণ কাজ না করার দাবি জানান তিনি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, ছাত্র বিক্ষোভ শুরুর পর থেকেই সংগঠনের পক্ষ থেকে অনেকের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছি। গুজবসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহিত করেছি। যেখানে ঝামেলা হয়েছে সেখানে কথা বলেছি। তারপরও দু’একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছে তা অনভিপ্রেত। ভিসি ও মালিকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, এ আন্দোলন আপনারা ভালভাবে সামাল দিয়েছেন। আগামীতে এভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন। এজন্য সংগঠনের যা যা লাগে তা করতে আমরা প্রস্তত।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বেনজির আহমেদ, টাইম ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শরীফ আফজাল, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ভিসি আল আমিন মোল্লা, খাজা ইউনুস ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. হোসেন রেজা, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. আমিরুল হক প্রমুখ। এর আগে গত রোববার রাজধানীর সব সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল ও কলেজ প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।