পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুঁজিবাজারের অস্থিরতা, বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব, আর ব্যাংকে মেয়াদি হিসাবে সুদের হার কম থাকায় গত কয়েক বছর ধরেই সঞ্চয়পত্র সাধারণের কাছে ‘বিনিয়োগের নিরাপদ ক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের উপকারভোগীদের অধিকাংশই হলেন-পেনশনভোগী, বৃদ্ধ, দুস্থ ও অসহায় নারী। চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ হার কিছুটা বাড়ানোর পরও বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হওয়ায় সঞ্চয়পত্রের প্রতি মানুষের ঝোঁক কমেনি। এদিকে সরকারের ‘ঋণের বোঝা’ বেড়েই চলেছে এই অজুহাতে কিছৃুদিন থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যদিও অবশেষে বোধোদয় এসেছে অর্থমন্ত্রীর। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সঞ্চয়পত্রের সুদহার সমন্বয় করতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে জানিয়েছেন, নির্বাচন আসছে, তাই কৌশলগত কারনে সঞ্চয়পত্রের সুদহার নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না সরকার। এছাড়া আগামী জানুয়ারি থেকেই সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের সব কার্যক্রম অটোমেসন হয়ে যাবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, সঞ্চয়পত্রের সুদহার সমন্বয় করতে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী দুই মাসের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট দেবে। তবে রিপোর্ট যাই আসুক, আগামী নির্বাচনের আগে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমছে না।
যদিও বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছিলেন, দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ জাতীয় সঞ্চয়পত্র। সমাজে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের কিছু সুবিধা জোগাতেই এ ধরনের বিনিয়োগে উচ্চ সুদ পরিশোধ করে সরকার। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র হচ্ছে নিরাপদ বিনিয়োগ। যাদের অল্প কিছু টাকা আছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করার মত সামর্থ্য নাই। আবার সামর্থ্য থাকলেও ঝুঁকি সামাল দেওয়ার মত সাহস নাই। বয়স হয়ে গেছে। বিধবা বা স্বামী অসুস্থ্য। সংসারে কর্মক্ষম কোনো ব্যক্তি নাই। তাদের জন্য একমাত্র ভরসা হচ্ছে জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরোর এই স্কিম। এছাড়া আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয় খুবই দুর্বল। সঞ্চয়পত্র সাধারণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা হিসেবেও কাজ করছে। তাই এখানটায় হাত দেয়া উচিত হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক বেগম শামসুন্নাহারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ৯ আগস্ট থেকে ব্যাংক আমানতে ছয় শতাংশ ও ঋণে নয় শতাংশ সুদহার কার্যকর হচ্ছে। তাই ব্যাংক আমানতে সুদহার থেকে সঞ্চয়পত্রে সুদহার পার্থক্য অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সুদহার কমাতে চায় সরকার। এ জন্য অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী দুই মাসের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট দেবে। তবে রিপোর্ট যাই আসুক, আগামী নির্বাচনের আগে সঞ্চপত্রের সুদহার কমানো হবে না।
তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদহারের ক্ষেত্রে আমরা বাজার রেট থেকে এক বা দেড় শতাংশ বেশি রাখতে চেষ্টা করি। কিন্ত এখন এটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। এটা কমাতে হবে। তবে পরবর্তী সরকার সঞ্চয়পত্র কমানোর বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে। আশা করছি, আমরা আবারও সরকারে আসবো। আমরাই এটি বাস্তবায়ন করবো।
তিনি আরও বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকেই সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের সব কার্যক্রম অটোমেসন হয়ে যাবে। এ অটোমেসনে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সঙ্গে লিংক থাকবে। তাই কেউ সীমার অরিরিক্ত সঞ্চয়পত্র কিনছে কি-না সেটি সহজেই ধরা পড়বে। সঞ্চপত্রে কালো টাকা বিনিয়োগরোধে আগামীতে ৫০ হাজার টাকার বেশি কেউ সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে তাকে চেকের মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
এর আগে গত ২ আগস্ট এনইসি সম্মেলন কক্ষে দেশের ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাধারণত দুই তিন বছর পরপরই আমরা সুদহার সমন্বয় করি। কিন্তু এবার একটু দেরি হয়েছে। বাজার রেটের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে সুদহার অনেক বেশি। তাই আগামী ৮ আগস্ট এটা সমন্বয় করব। তবে একদিন এগিয়ে বৈঠকটি গতকাল অনুষ্ঠিত হলো।
এরও আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বাজেটের পর সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো হবে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদহারের ক্ষেত্রে আমরা বাজার রেট থেকে ১ বা দেড় শতাংশ বেশি রাখতে চেষ্টা করি। কিন্ত এখন এটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। অবশ্যই বাজেটের পর এটা কমানো হবে।
বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সুদহার : সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে বর্তমানে পাঁচ বছরমেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচবছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছরমেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক শূন্য চার শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ রয়েছে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।