পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিগত কয়েকদিনের তুলনায় গতকাল রাজধানীর পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। কোথাও শিক্ষার্থী বা আন্দোলনকারীদের জমায়েত বা বিক্ষোভ দেখা যায়নি। নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের অতিরিক্ত উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। যে কোন ধরণের ঝামেলা প্রতিরোধ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা ছিলেন সতর্ক। এ ছাড়া গত সোমবার থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও গতকালও প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনের সাংখ্যা ছিল খুবই কম। তবে নগরীর প্রতিটি সড়কে রিকসার সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। তাদের বেশিরভাগ মৌসুমী চালক ও গন্তব্য না চিনলেও ভাড়া হাকে দ্বিগুন তিনগুন। যার কারণে অফিসগামী সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চরমে।
গতকাল সরেজমিনে শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, ফার্মগেট, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর ১০, উত্তরা হাউজ বিল্ডিং, যাত্রাবাড়ী ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ঘুরে কোথাও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেষে স্কুল-কলেজগুলোতে পুরোপুরি পাঠাদান শুরু হয়েছে। কয়েকিট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হটাৎ করে পাঠাদান বন্ধ ঘোষণা করলেও বেশিরভাগ খোলা ছিল। এ ছাড়া ঈদের ছুটি উপলক্ষ্যে বেশ কিছু স্কুল-কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে গেছে।
শাহবাগের ফুটপাতের দোকানি বোরহান মিয়া জানান, গত কয়েকদিন অনেক আন্দোলনকারীকে দেখা গেলেও আজ (গতকাল) কাউকে শাহবাগে দেখা যায়নি। একদিকে সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়েছে অন্যদিকে পুলিশের ধরপাকরের কারণে তারা কেউ আসেনি বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
শাহবাগে আড্ডারত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পুলিশ অ্যাকশনে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামতে সাহস পাচ্ছে না। তারা বলেন, ঢাবির কয়েকটি হলে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
মিরপুরে বেসরকারি চাকুরে আলতাফ হোসেন বলেন, আগে কাউকে রাস্তায় নিয়ম মানতে দেখি নাই। ছাত্রদের আন্দোলনের ফলে অন্তুত রাস্তায় মানুষ ও যানবাহন চলাচলের একটি নিয়ম চালু হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের উদ্দেশ্য ভালো ছিল। তবে কেউ কেউ এটিকে সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দিতে চেয়েছিল। তাই সরকার এটি বন্ধ করে দেয়। এর আগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন ভিন্ন খাতে গিয়েছিল বলে তিনি জানান।
এ বিষেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আগেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করতেন। বর্তমানে পরিস্থিতি একটু ঘোলাটে থাকায় নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সরিজমিনে গণপরিবহনের সংখ্যা অপর্যাপ্ত বলে লক্ষ্য করা গেছে। দু-একটি রুটে মোটামুটি বাস চললেও অধিকাংশ রুটে বাসের সংখ্যা ছিল খুবই কম। নগরীর বেশিরভাগ মোড়ে দীর্ঘক্ষণ যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পর একটি বাস আসলে তাতে হুমরি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা। এই সুজোগে কোন কোন রুটে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকায় ঢুকতে ও ঢাকা ছাড়ার সময় টার্মিনালগুলোতে দূরপাল্লার বাসের লাইসেন্স ও কাগজপত্র চেক করতে দেখা গেছে। নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে অব্যবস্থাপনা প্রতিরোধে বিআরটিএ’র ৫টি ও ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়।
বিহঙ্গ বাসের সহকারী আকবর আলী জানান, ‘অনেকের কাগজপত্র ঠিক না থাকায় বাস কম দেখা যাচ্ছে। আটকের ভয়ে বাসগুলোকে বিভিন্ন গলির ভেতরে ও রাস্তার পাশে দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
বিআরটিএর উপ-পরিচালক (প্রকৌশলী) মাসুদ আলম জানান, সড়কে যানবাহনের অব্যবস্থাপনা প্রতিরোধে আমাদের ৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। কোন অনিয়ম পেলে তাদের জেল-জরিমানাসহ বিভিন্ন দন্ড দেওা হচ্ছে।
এদিকে, নগরীতে যানবাহনের সঙ্কটের কারণে রিকসার উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। ভিআইপি সড়কেও রিকসা চলতে দেখা গেছে। চালকদের সঙ্গে কথা বলে অনেককে মৌসুমী চালক মনে হয়েছে। তাদের কেউ যেমন গন্তব্য চিনছে না তেমনি ভাড়াও হাঁকছে অনেক বেশি। পল্টন মোড়ে মফিজ আলী নামে এক চালক জানান, ‘এক সপ্তাহ হলো ঢাকায় এসেছি। গ্রামে কাজ কম থাকায় ঢাকায় এসে রাজ মিস্ত্রির কাজ করতাম। চারদিন ধরে খিলগাঁও থেকে রিকসা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছি।’ তিনি বলেন, কয়েকদিন বাস বন্ধ থাকায় রিকসা চালানো শুরু করেছেন। এ ছাড়া রিকসায় যাত্রী ও ভাড়া অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
মতিঝিল এলাকায় এক চালনক জানান, তারা ৮ জন রিকসা চালানোর জন্য ট্রাকে করে রংপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন। রাস্তা ঘাট না চিনলে চালাতে কষ্ট হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে হেসে বলেন, ‘জায়গা চিনতে হয় না, এমনিতে যাত্রীদের অনেক চাপ। তারাই চিনিয়ে নিয়ে যায়।’
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলেন, আন্দোলনকারীরা অনেক বাস ভাংচুর করায় সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে সেগুলো রাস্তায় নামানো হলে যান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এদিকে, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে আগাম টিকিট কাটতে গতকাল দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে অনেক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।