পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে আইসিটি অ্যাক্টের একটি মামলায় গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল তাকে আদালত হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে অতিরিক্ত ঢাকা মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রমনা থানায় দায়ের করা মামলার এজহারে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে উস্কানী দেয়া ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। গত রোববার রাতে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ।
এদিকে শহিদুলের মুক্তির দাবিতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগে বলেন, গত রোববার রাতে ধানমন্ডির ৯/এ সড়কের বাসার চারতলা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৩০/৩৫ জনের একটি দল তার স্বামীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এ সময় বাড়ির সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে হার্ডডিস্ক নিয়ে যায় তারা।
সংবাদ সম্মেলনকালে তিনি আরও বলেন, সংবাদমাধ্যমে তিনি জেনেছেন যে, তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে নেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। অথচ গত রোববার সারা রাত ডিবি অফিসে বসে থেকেও তার ব্যপারে কোনো তথ্য পায়নি তাদের কাছে।’ শহিদুলের স্ত্রী রেহনুমা জানান, ঘটনার পর রাতে তারা ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল দেখে যায়। তিনি জানান, চলমান ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে শহিদুল স¤প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, নারীনেত্রী শিরিন হক, এনজিওকর্মী তাহমিনা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শহিদুলের সহকর্মী এ এস এম রেজাউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, শহিদুল যে বাসায় থাকেন, তার নিচতলার নিরাপত্তাকর্মী মো. জালাল তাকে বলেছেন, সাড়ে ৮টার দিকে ১৫টির মতো গাড়ি বাসার আশপাশে এসে দাঁড়ায়। তখন পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিলো, তাই জালাল ভেবেছিলেন, এসব গাড়ি সেখানেই এসেছে। একটু পরে ওসব গাড়ি থেকে লোকজন নেমে জালালকে ফটক খুলতে বাধ্য করেন। বাড়িটির গাড়ি বারান্দায় তাঁরা জোর করে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ঢুকিয়ে দেন। তখন জালালকে আটকে রাখা হয়। জালাল অনুপ্রবেশকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের ‘ডিবি’ বলে দাবি করেন এবং তাদের কোথাও ঢুকতে বাধা দিলে সমস্যা হবে বলেও জালালকে সতর্ক করেন। এরপর লোকগুলো সিঁড়ি দিয়ে চারতলায় উঠে যান। বাসায় শহিদুল একাই ছিলেন, স্ত্রী রেহনুমা তিনতলায় এক সহকর্মীর বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলেন। ওই বাসায় শহিদুলেরও দাওয়াত ছিল, তিনি স্ত্রীকে রেখে কিছু আগে নিজের ফ্ল্যাটে ঢোকেন। সেখান থেকেই লোকগুলো শহিদুলকে নিয়ে লিফট দিয়ে নিচে নামেন।
এ সময় শহিদুলের চিৎকার শুনে রেহনুমাও তিনতলার বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। তবে নামতে নামতে শহিদুলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান লোকগুলো। গাড়িটিতে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স লেখা ছিল। ডিবি পরিচয়দানকারীরা বাড়ির সিসি ক্যামেরা অচল করে দেয়। ক্যামেরার ফুটেজ যেখানে সংরক্ষন করা হয় সেই ডিভিআর বক্স নিয়ে যায়।
ডিএমপি নিজউজে উল্লেখ করা হয়, ‘৬ আগস্ট ২০১৮ শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা রুজু হয়েছে । ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো. মেহেদী হাসান বাদী হয়ে রমনা থানায় অভিযোগ করলে এ মামলা রুজু করেন।
চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক ও অন্যান্য মিডিয়াতে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়। গতকাল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আরমান আলী তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শহিদুল আলম আল জাজিরাকে যে সাক্ষাতকার দিয়েছেন তার সারাংশ হলো, নিরাপদ সড়ক ছাড়াও অনেক বড় বড় ইস্যু আন্দোলনকে দানা বাধতে ভূমিকা রেখেছে। তিনি ব্যাংক লুট গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, ঘুষ ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।