পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে সপ্তমদিনের মতো গতকালও রাজধানী জুড়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুপুরে জিগাতলায় একদল যুবক হামলা করে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪জনের অবস্থা গুরুতর বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন। জিগাতলায় এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। দিনভর ধানমন্ডি এলাকা ছিল উত্তপ্ত। মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘটে গতকালও রাজধানীর রাজপথে কোন গণপরিহন ছিল না। গণপরিবহন না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী। শিক্ষার্থীরা গাড়ির কাগজ ও চালকের লাইসেন্স আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি যানবাহনের চালকদের সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের অনুরোধ করেছেন। সড়কে শৃংখলা ফিরাতে শিক্ষার্থীরা দিনভর চেষ্টা করেছেন। এ সময় অনেক অভিভাবক ও সাধারন মানুষও শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে তাদের পাশে দাড়িছেন। অন্যদিকে গতকাল ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লা ও আন্তজেলার সড়কে পথে চলাচলকারী কোনো বাস। প্রবেশ করতেও দেখা যায় নি আন্তজেলার কোনো বাস। ফলে দুর্ভোগের শেষ নেই সড়কে অপেক্ষমান যাত্রীদের।
নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক-শ্রমিকরা। শুধু বিআরটিসির কয়েকটি বাস ছাড়া অন্য কোনো বাস চলতে দেখা যায়নি। গতকাল শিক্ষার্থীদের লজেন্স দিয়ে শাহবাগে ছাত্রলীগ নেতারা তাদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ছাত্রলীগের নেতারা শিক্ষার্থীদের রাজপথ ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ারও অনুরোধ করেছেন। রাজধানীর শ্হাবাগ, ধানমন্ডি, শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ি, ঝিগাতলা মোড়, নিউমার্কেট, আজিমপুর মোড়, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, আসাদগেট মোড়, উত্তরা, বিমানবন্দর সড়ক ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর ঘুরে দেখা গেছে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থী সব ধরনের যানবাহন ও রিকশা চলাচলে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বেলা ৪টায় তাদের সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষনা করেন। রোববার সকাল ১০টার দিকে আবার একই দাবিতে শাহবাগ মোড়ে এসে জড়ো হওয়ার কথা জানিয়ে তারা বলেন নয় দফা দাবি না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মোহাম্মদপুরের এক কলেজের শিক্ষার্থী মো. সজল আলম। তিনি বলেন, দাবি আদায়ে বিষয়ে আমরা আশ্বাসে বিশ্বাসী না। নয় দফার মধ্যে একটি হলো নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সরকার নয় দফা দাবি মেনে নিয়েছে কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। আমরা বাস্তবায়ন চাই। শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র আন্দোলনে পুলিশি হামলা বারবার চলতে থাকলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হবে। কারণ, এ অবস্থার জন্য তিনি দায়ী। এসব হামলার দায়ভার একমাত্র তার।
গণপরিবহন শূন্য রাজধানী
মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘটে শনিবারও গণপরিহন সঙ্কট ছিল রাজধানীতে। গণপরিবহন না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী। সকালে স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। গণপরিবহন না থাকায় অনেকে পায়ে হেঁটে নিজ গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হয়েছেন। কেউ কেউ পিকঅ্যাপ ভ্যান কিংবা রিকশা ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে গেছেন। সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। বাস না থাকায় রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ছিল প্রাইভেট কার, মোটর বাইক ও রিকশার দখলে।
চলেনি দূরপাল্লার বাস
ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লা ও আন্তজেলার সড়কে পথে চলাচলকারী কোনো বাস। প্রবেশ করতেও দেখা যায়নি আন্তজেলার কোনো বাস। ফলে দুর্ভোগের শেষ ছিলনা সড়কে অপেক্ষমান যাত্রীদের। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে বৃহস্পতিবার থেকে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত এই ধর্মঘট চলছে। দিনধর রাজধানীর মহাখালী, ধানমন্ডি, গাবতলী, ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এ চিত্র দেখা গেছে।
আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ ছাত্রলীগ নেতাদের
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন রাজধানীর শাহবাগে মোড়ে যান। সেখানে লজেন্স খাইয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন এ দুই নেতা। এ সময় তারা বলেন, আন্দোলনে বাধা দেয়ার জন্য আমরা এখানে আসেনি। তাদের বুঝাতে এসেছি। সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, আমরা এ আন্দোলনকে সমর্থন করি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন ছাত্রদের বুঝানোর জন্য। তারা যেন কোনও মহলের প্ররোচনায় ভুলপথে পরিচালিত না হয়।
বাধার মুখে রেলমন্ত্রী
শনিবার সকাল থেকেই বাংলামোটর মোড়ে অবস্থান নিয়ে লাইসেন্স যাচাই করছিলেন ঢাকা কমার্স কলেজ,আইডিয়াল কমার্স কলেজ ও ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে সেখানে উল্টো পথে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে পড়েন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। গাড়িতে মন্ত্রীর স্ত্রী হনুফা আক্তার ও তাদের একমাত্র মেয়েও ছিল। মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে পুলিশের গাড়িও ছিল। মন্ত্রীর গাড়ি উল্টো পথে দেখে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়া শুরু করেন। এ সময় মন্ত্রীর স্ত্রী জানালা খুলে শিক্ষার্থীদের বলেন, আমার সন্তান অসুস্থ। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। তখন শিক্ষার্থীরা তাদের গাড়িটি ছেড়ে দেন।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে ঝিগাতলা মোড়ে অবস্থানরত কয়েকশ শিক্ষার্থীদের অতর্কিতে ধাওয়া দেয় একদল যুবক। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তারা ইট-পাটকেলও নিক্ষেপ করে। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় দেখা গেছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে এ সংঘর্ষ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হঠাৎ একদল যুবক এসে ধাওয়া দেয় এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। তবে ধাওয়াকারী যুবকরা কারা তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ধাওয়া-পাল্টার সময় যুবকরা স্থানীয় ট্রাম্প ক্যাফেতে ঢুকে ভাংচুর করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভিডিও করার দায়ে একজনের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এদিকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ঝিগাতলা এবং এর সন্নিহিত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে রাত ৭টা পর্যন্ত। পরে পুলিশ, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শাহবাগ: সকাল ৯টার পর থেকে সোহরাওয়ার্দী, হাবিবুল্লাহ বাহার ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে এসে জড়ো হতে শুরু করে। তারা ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের লাইসেন্স ও কাগজপত্র চেক করে। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলন করে ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সজল আলম গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমরা আশ্বাসে বিশ্বাসী না। নৌমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। দোষীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এনে সুষ্ঠ বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, শনিবারের মতো আন্দোলন শেষ। রোববার সকাল ১০টা থেকে আবারও একই দাবিতে শাহবাগ মোড়ে এসে জড়ো হবেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে শিক্ষার্থীরা চলে গেলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।এদিকে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হলুদ নম্বরপ্লেটের একটি প্রাইভেট কার শাহবাগ মোড় অতিক্রম করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা কাগজ দেখতে চায়। তখন প্রাইভেটকারটি বেপরোয়া গতিতে শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গাড়িটিকে থামাতে সক্ষম হয়। পরে পুলিশ গাড়িটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। শন্তিনগর: বেলা পৌনে ১১টা থেকে শান্তিনগর ও আশপাশের মোড়ে এসে জড়ো হতে শুরু করে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার, ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজেসহ আশপাশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা তাদেরকে সুশৃঙ্খলভাবে চলতে সহায়তা করে। মিরপুর: বেলা ১০টার পর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরসহ আশপাশের সড়কে এসে জড়ো হতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা মিরপুর ২ নম্বর থেকে ১৩ নম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র ও লাইসেন্স যাচাই করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হয়। এতে পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেটকার কাগজ না দেখিয়ে চলে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। পরে তারা প্রাইভেটকারটিতে ভাঙচুর চালায়। বিকাল ৫টার পরে তারা ফিরে যেতে শুরু করলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। যাত্রাবাড়ী: বেলা সাড়ে ১০টার পর যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন সড়কে ধনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বর্ণমালা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখদি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হয়। এ সময় তারা উই ওয়ান্ট জাস্টিসসহ বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দেয় এবং ৯ দফার বাস্তবায় দাবি জানায়। ফার্মগেট: গতকালও ফার্মগেট, তেজগাঁও বিজয় স্মরনীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিজ্ঞান কলেজ, তেজগাঁও কলেজসহ আশপাশেরর বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তেজগাঁও গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন জানান, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যেও অনেক চালক সাধারণ পথচারীদের হত্যা করে যাচ্ছে। তারা কাউকে পরোয়া করছে না। তিনি ঘাতক চালকদের দ্রুত শাস্তি দাবি করেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে কালোব্যাজ ধারন করে আন্দোলন করেছে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। তাদের ঘিরে রাখে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বহিরাগতরা এসে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সে কারণেই তাদের ঘিরে রাখা হয়েছিল বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়ার শাজাহানপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২ টার দিকে জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম জনি, শাজাহানপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু মিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে রাজপথ থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের রক্ষা করে।
দিনাজপুর অফিস জানায়, “নিরাপদ সড়ক চাই” স্লোগান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ রাস্তায় অবস্থান নেয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকালে শহরের সদর হাসপাতাল মোড়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে নানা রকমের ব্যানার ফেসটুন নিয়ে বিক্ষোভসহ বিভিন্ন শ্লোগান করতে থাকে। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ছাত্রলীগ নেতাদের বাধার মুখেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাধারন শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গতকাল শনিবার সকালে শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী অনার্স করেছে জড়ো হয়। সেখানে তাদের আটকে দেয় জেলা ছাত্রলীগ নেতারা। এক পর্যায়ে নিয়াজ মুহাম্মদ স্কুল মাঠে জড়ো হয়ে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শহরে যেতে চাইলে নিয়াজ স্কুল মাঠের গেইট বন্ধ করে দেয়।
চান্দিনা সংবাদদাতা জানান, ১০টায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর এলকায় সড়ক অবোরোধ করে রাখে শত শত শিক্ষার্থী। গৌরীপুর সুবল-আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে বসে “ উই ওয়ান্ট জাস্টিজ ” বলে স্লোগান দিতে থাকে। এই সময় ঢাকা চট্রগ্রাম-মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে শিক্ষার্থীরা যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশও মহাসড়কে অবস্থান করছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান, সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে প্রায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানান, ফেনীতে নিরাপদ সড়ক শ্লোগানে গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছাত্রলীগের বাধার মুখে সড়ক প্রদক্ষিণ ও সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে ৫ জনকে আটক করেছে। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা ছাত্রলীগ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি প্রতিরোধে দলবেঁধে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় অন্তত ২০ ছাত্র-ছাত্রী আহত হয় বলে আন্দোলনরতদের অভিযোগ।
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, লালমনিরহাটে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সিগনাল অমান্য করায় ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। দুপুরে লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডঃ মতিয়ার রহমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
গাইবান্ধা থেকে স্টাফ রির্পোটার জানান, গাইবান্ধা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকায় এবং গাইবান্ধা-পলাশবাড়ি সড়কের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা অবরোধ সৃষ্টি করে। এছাড়া ঢাকা-রংপুর মহাসড়কেরও বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে রাখে। এছাড়া জেলা শহরের অভ্যন্তরীন সড়কগুলোতেও শিক্ষার্থীরা অবরোধ করে।
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের ফুরবাড়ীতে আন্দোলন চালিয়ে গেছে ক্ষুদে শিক্ষর্থীরা। সকাল ১০ টায় পৌর শহরের ঢাকামোড় শাপলা চত্তরে অবস্থান নেয় শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজে অধ্যায়ণরত সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। তারা বিভিন্ন ব্যানার -ফেস্টুন নিয়ে ঢাকামোড় শাপলা চত্তরে ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধন করে।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান, নিরাপদ সড়কের দাবীতে পঞ্চগড়ের সাকোয়ায় মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন প্লা-কার্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেয়।
বদরগঞ্জ(রংপুর)সংবাদদাতা জানান, রংপুরের বদরগঞ্জে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন,সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে। সকাল ১১টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নেমে আসে মহাসড়কে। শনিবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের প্রায় সহ-স্রাধিক শিক্ষার্থীরা ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে নেমে এসে বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স তল্লাশি করে।
সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সকাল ১০টায় বিভিন্ন স্কুল,কলেজের বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকা-সখিপুর-সাগরদিঘী সড়কের সখিপুর তালতলাচত্বরে,নলুয়া ও বড়চওনা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল,মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।