বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গাড়ি থেকেই নেমেই দুই নিরাপত্তা কর্মীকে কিল ঘুষি লাথি। লাঠির আঘাতে তাদের রাস্তায় ফেলে তিনি ছুটেন টোল প্লাজার বুথে। হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এবং লাথি মেরে ভাঙতে থাকেন গøাসে ঘেরা টেলপ্লাজার বুথ। সেখান থেকে টেনে বের করে আনেন কর্মরত দুই টোল কালেক্টরকে। তাদেরও কিল ঘুষি, লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে করেন লাঠি পেটা। তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসা টোলপ্লাজার প্রকৌশলীকে কষে চড় দিতেই তার কান বেয়ে গলগল করে রক্ত পড়তে থাকে। এক নিমিষেই এমন তাণ্ডব যিনি ঘটালেন তিনি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মীরসরাই সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মশিয়ার রহমান।
গতকাল (শুক্রবার) বেলা ১১টা ৪০মিনিটে তিনি কোন কারণ ছাড়াই কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজায় এমন তাণ্ডব চালান। পুরো ঘটনা রের্কড হয় সেখানে থাকা সিসিটিভিতে। হামলার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এসময় সাদা পোশাকে পুলিশের সরকারি গাড়িতে থাকা ওই কর্মকর্তাকে মদ্যপ এবং মাতাল মনে হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা। কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিকেলে ওই এএসপিকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
হামলায় আহত হয়েছেন কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, নিরাপত্তা কর্মী কামাল উদ্দিন ও মাসুদ রানা, টোল কালেক্টর মোঃ সোহাগ ও ফয়সাল। হামলার শিকার প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তিনি সরকারি গাড়িতে সেতু পার হচ্ছিলেন। টোলপ্লাজা থেকে কিছুটা দূরে তার গাড়িটি ছিল। তিনি হঠাৎ গাড়ি থেকে লাঠি হাতে নেমেই দুই নিরাপত্তাকর্মীকে পেটাতে শুরু করেন। তাদের লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দেন। এরপর তিনি টোলপ্লাজা ভেঙ্গে দুই কর্মীকে টেনে বের করে তাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত আহত করেন। তিনি বলেন, এমন দৃশ্য দেখে আমি কি হয়েছে জানতে এগিয়ে যেতেই তিনি আমার কানে থাপ্পর বসিয়ে দেন। কান ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। এসময় তার সরকারি গাড়িতে আরও তিনজন বসা ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা তাকে লাঠি দিয়ে হামলায় সহযোগিতা করছিলেন। হামলা শেষে তিনি গাড়িতে উঠে টোল না দিয়েই সেতুপার হয়ে যান। তিনি তার গাড়ির সামনে থাকা অন্যান্য গাড়িগুলো টোলগ্রহণ ছাড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন। ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা অপূর্ব সাহা বলেন, এএসপি মশিয়ার মাতাল অবস্থায় ছিলেন বলে মনে হয়েছে। তারা তাৎক্ষণিক বিষয়টি তাদের কর্তৃপক্ষ ছাড়াও সড়ক বিভাগকে অবহিত করেন।
এদিকে রাতে পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এএসপি মশিয়ার রহমানের বিষয়টি নগর পুলিশের এক কর্মকর্তার কাছে শুনেছি। তাৎক্ষণিক অতিরক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ)সহ তিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত করতে বলি। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। ভিডিও ফুটেজও সংগ্রহ করেছেন। তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ সুপার অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার কাছ থেকে সরকারি গাড়ি মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কিছু না বললেও আমরা নিশ্চিত হয়েছি সে অনুমোতি ছাড়াই কর্মস্থল মীরসরাই থেকে বান্দরবান যাচ্ছিল সরকারি গাড়ি নিয়ে। সহকারি পুলিশ সুপারের মতো একজন অফিসারের এ ধরনের আচরণ মারাত্মক অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। কমিটি আজ শনিবার প্রতিবেদন দিলে পুলিশ সদর দপ্তর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি। পুলিশ সুপার বলেন এ ক্ষেত্রে তার ছাড় পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
থানায় অভিযোগ
টোলপ্লাজায় তাÐবের ঘটনায় মশিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে টোলপ্লাজা কর্তৃপক্ষ। গতকাল রাতে টোলপ্লাজার ম্যানেজার (প্রশাসন) মহিদুল ইসলাম বাদশা কর্ণফুলী থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন। এতে এএসপি মশিয়ার রহমান ছাড়াও তার গাড়িচালক ও আরও দুইজনকে অভিয্ক্তু করা হয়েছে।
অভিযোগ ভাঙচুর ছাড়াও পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রক্তাক্ত জখম করার কথা বলা হয়। কর্ণফুলী থানা পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করছে বলে জানান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান ইমাম। টোলপ্লাজার কর্মকর্তা অপূর্ব সাহা বলেন, এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।