পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর সড়ক নিরাপদ করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। এখন আর শুধু রাজধানীর সড়ক নয়, শিক্ষার্থীরা সারাদেশে নিরাপদ সড়ক চাইছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বাদ দিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। গত বৃহস্পতিবার টানা পঞ্চম দিনে আন্দোলন রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহর উত্তাল করেছে।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে গত বৃহস্পতিবার সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকার বন্ধ ঘোষণা করলেও ছাত্রছাত্রীদের ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। সবাই রাস্তায় নেমে গেলে অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। গতকাল শুক্রবারও শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। তাদের প্রতিটি প্ল্যাকার্ডে একেকটি করে শ্লোগান খেলা ছিল। একটি শ্লোগানের কথা, ‘রাষ্ট্রের ৪৭ বছরের জঞ্জাল পরিস্কারের কাজ চলছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আন্দোলন দমনে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। আন্দোলন দমন করতে আজ শনিবার থেকে মাঠে নামতে পারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গত রোববার রাজধানীর কুর্মিটোলায় জাবালে নূরের দুটি বাসের রেষারেষিতে পেছনের বাসটি ওভারটেক করে বাসের জন্য অপেক্ষমান শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের নিহত হয়। এর পরপরই সংশ্লিষ্ট চালকদের বিচার ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে রাজধানীর স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। বিশেষ করে ওই পাঁচটি দিন রাজপথে ট্রাফিকের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ছিল ছাত্রছাত্রীদের হাতে। কিভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সেটি তারা দেখিয়ে দিয়েছে। তারা ফিটনেসবিহীন যানবাহন আটকে রাখে। চেক করেছে যানবাহনের কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স।
শিক্ষার্থীর রাস্তায় অবস্থান নিয়ে লাইসেন্সবিহীন পুলিশের গাড়ি, মন্ত্রীর গাড়ী এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আরো কয়েকজনের গাড়ি আটক করে। মন্ত্রীকে পর্যন্ত গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যেতে হয়েছে। লাইসেন্স না থাকায় সাধারণ মানুষের গাড়িও আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়ে রাস্তায় গাড়ি নামায়নি পরিবহন সংস্থাগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীর মানুষ। তারপরও রাজধানীর মানুষের এই আন্দোলনে সমর্থনের অভাব হয়নি। অনেক পায়ে হেঁটে বা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় চলাচল করলেও আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, সাধারণ লোকদের কাছে এই আন্দোলন জনপ্রিয় হলেও সরকারের জন্য সৃষ্টি করেছে বিব্রতকর পরিস্থিতি। সরকার ইতোমধ্যে এটি আন্দাজ করে নিয়েছে যে, সহসা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন ছেড়ে যাবে না। ফলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। এ সময় আন্দোলন দমন করতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্তে পুলিশের কর্মকর্তারা মতামত দেন।
ওই বৈঠক সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে কঠোর হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। শেষ বারের মতো সবাইকে সতর্ক করা হলো। এরপরও যদি আন্দোলনকারীরা সতর্ক না হয়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার বিকালেই তার কিছুটা প্রমাণ দেখা গেছে। রাজধানীর মিরপুরে সহপাঠীর মৃত্যুর বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে পুলিশ। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় একদল যুবকও। যুবকদের পরিচয় কি? তারা পুলিশের পাশে থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করার পরও পুলিশ কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি? গতকাল ছুটির দিনে মিরপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নেমে সে প্রশ্নই করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।