Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বেপরোয়া চালকদের মৃত্যুদন্ডই হওয়া উচিত দিয়ার বাড়িতে

এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে রাস্তায় মৃত্যু হলে চালেককে মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিত বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, আমি যখন প্রেসিডেন্ট ছিলাম তখন সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড দিয়ে একটি আইন পাস করেছিলাম। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে সে আইনটি বাতিল করে যাবজ্জীবন করতে হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে কলেজছাত্রী দিয়ার মহাখালীর বাড়িতে যান এরশাদ। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথায় তিনি নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে যৌক্তিক বলেছেন। গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দিয়াসহ দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা যে নয় দফা দাবি তুলেছে, তা মেনে নিয়েছে সরকার।
এরশাদ বলেন, যারা আন্দোলন করছে এরা সবাই নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। এদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। তারা আমাদের জন্যই রাস্তায় নেমেছে। নিজেদের কোনো দাবি নেই। আমার ছেলে আজ গাড়িতে করে স্কুলে যায়। যদি সে বাসে করে স্কুলে যেত তাহলে আমি সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতাম যে, সে ফিরে আসবে কিনা। আর এমন কোনো খবর আমি পেলে আমি আত্মহত্যা করতাম। আমি মৃত ছেলের মুখ দেখতে চাই না। এ যে রাস্তায় যেসব বাস চলছে এগুলোর চারটি চাকা ছাড়া আর কিছুই নেই। ১৪ বছরের বাচ্চারা গাড়ি চালাচ্ছে। এই অনিয়ম আর কতদিন চলতে পারে। আমরা এ আন্দোলনকে সমর্থন করি। সরকারেরও দাবিগুলো মেনে নওয়া উচিত।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, সরকার চাইলে আরও বেশি টাকা দিতে পারতো। ২০ লাখ টাকা কোনো টাকাই না। প্রধানমন্ত্রী এসে দেখে যেতে পারতেন এরা কতটা কষ্টে একটি ঘরে কতগুলো মানুষ বসবাস করে। আর প্রধানমন্ত্রী যেখানে ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন সেখানে আমরাইবা কত দিতে পারবো। তবে আমাদের এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবো।
নৌমন্ত্রীর আচরণ দেখে কষ্ট পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে শিক্ষার্থীরা মারা গেছে। আর তা দেখে উনি হাসছেন। আর উনি উদাহরণ দিচ্ছেন ভারতের দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা যাওয়ার বিষয়টিকে। কিন্তু সেটা তো দুর্ঘটনা। আর এখানে যা হয়েছে তা তো হত্যাকান্ড।
এর আগে, সকালে দিয়ার বাসায় আসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জালাল গণি খান ও শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নূর নাহার ইয়াসমিন। তারা কলেজের পক্ষে দিয়ার পরিবারের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতির উপর মন্তব্য রেখে দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির জানান, আমি জানতে পেরেছি পরিবহন শ্রমিকরা গাবতলীতে জড়ো হচ্ছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করবে। কিন্তু আমি তাদের বলতে চাই, যেখানে পুলিশ ধৈর্য্য ধরে আছে সেখানে তোমরা কেন পারবে না। শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হওয়া যাবে না। তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে সারাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। বরং তাদের বুঝিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া উচিৎ। আমি এক সন্তানকে হারিয়ে হাজারও সন্তান পেয়েছি। আর ছাত্ররা তোমরাও ঘরে ফিরে যাও। সরকার তোমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। এ সময় তিনি ফোনে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের অরাজকতা সৃষ্টি থেকে দূরে থাকতে অনুরোধ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেপরোয়া চালক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ