সড়ক দুর্ঘটনারোধে কার্যকর পদক্ষেপ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধন ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয় কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সেভ দ্যা রোড, সন্ধীপ সমিতি ঢাকা, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি ও ইনসানিয়াত বিপ্লব, বাংলাদেশ। এ ছাড়া রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের কলেজের ব্যানারে মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নিয়েছেন অনেকেই।
সমাবেশে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শিক্ষার্থীদের যে দাবি আপনারা মেনে নিয়েছেন, তা আজ শুক্রবার, কাল শনিবার হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু রোববার থেকেই যেন আমরা দেখতে পাই সেই কাজগুলোতে আপনারা হাত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যারা নিয়ম-শৃঙ্খলার জন্য রাস্তায় থেকে গাড়ির ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করেন তাদের নিজেদেরই লাইসেন্স নেই। অন্যের লাইসেন্স চেক করার আগে যেন নিজেদেরটা নিশ্চিত করা হয়। সেজন্য তাদের ডিপার্টমেন্ট, মন্ত্রণালয় থেকে যেন নির্দেশনা আসে তাদের লাইসেন্স ঠিক করার জন্য।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমরা ক’দিনে দেখলাম যারা ডাণ্ডাওয়ালা (পতাকার স্ট্যান্ড) গাড়ি ব্যবহার করার উপযুক্ত নন, তারা ডান্ডাওয়ালা গাড়ি ব্যবহার করেন। যারা দেশ চালাচ্ছেন, তারাই উল্টোপথে গাড়ি চালাচ্ছেন। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে তারা যেন বলেন, আমরা আর করবো না, আমরা দুঃখিত। আমরা সন্তানদের কাছ থেকে শিখেছি আমরা আর করবো না, বাবারা তোমরা ঘরে ফিরে যাও। এভাবে বললে নিশ্চয়ই আমাদের সন্তানরা ঘরে ফিরে যাবে। আপনারা যদি কাজ শুরু করে দেন তাহলে আমি অবশ্যই বলবো আমার সন্তানরা যেন ঘরে ফিরে যায়।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সম্প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পায়েলের মৃত্যু ও ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা সারাদেশের মানুষের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের সড়ককে নিরাপদ করার লক্ষ্যে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মাঠেই রয়েছি এবং মাঠে থাকবো, যতদিন না নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন হয়।’
বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মানববন্ধন ও সমাবেশ চলে। তবে সকাল ১০টা থেকেই বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার দুই পাশ বন্ধ করে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন।
উল্লেখ্য, গেল ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসাচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন এক আন্দোলন দেখছে বাংলাদেশ। নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা ওই আন্দোলনে রোববার থেকে কার্যত অচল হয়ে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। পথে পথে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে গেলেও এতে মানুষকে সেভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের প্রতি ব্যাপকভাবে মানুষের সমর্থন দৃশ্যমান।
শুক্রবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পঞ্চম দিনে এসে ‘নিরাপত্তাহীনতার’ অজুহাতে রাজধানীর সব রুটের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা; যদিও আজ সড়কে শিক্ষার্থীদের আগের দিনের মতো অবস্থান নেই।
এদিকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ‘ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটছে-’ গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর শুক্রবার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তোমাদের (শিক্ষার্থীদের উসকানি দিতে একটি অপশক্তি চেষ্টা করছে। তাদের উসকানিতে সাড়া দিও না। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে বলেও জানান
ওবায়দুল কাদের।