পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমরা বাসা থেকে বের হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবো। ক্লাস শেষে নিরাপদে বাসায় ফিরবো। কিন্তু বাসায় ফেরার পথে কেন লাশ হতে হবে? আমরা কেন ক্লাস ছেড়ে রাস্তায় বসে দিন পার করছি? এসব প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে। আমরা যাতে নিরাপদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস শেষে সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরতে পারি। এর বেশি তো কোনো চাওয়া আমাদের নেই।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পঞ্চম দিনে গতকাল রাজপথে বসে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী এসব কথাই বলছিল। শ্রাবণের থেমে থেমে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের দখলে রেখেছে রাজধানীর রাজপথ। নাহ তারা কারো সঙ্গেই অশোভন আচরণ করেনি। যানবাহন ভাঙচুরের মধ্যেও নেই তারা। তারপরও রাজপথ ছিল একেবারেই অচল। শিক্ষার্থীদের অবস্থানে বৃষ্টিভেজা দিনে উত্তাল ছিল ঢাকার অলিগলি-রাজপথ। ছিল না কোনো ধরনের ভয়-আতঙ্ক কিংবা সহিংসতা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে যারাই বাসা-বাড়ি থেকে বের হয়েছেন তাদের কারো চেহারায় বিরক্তির ছাপ দেখা যায়নি। জাতির অমূল্য সম্পদ ও দেশ পরিচালনায় আগামীর নেতৃত্ব যারা দেবেন সেই নতুন প্রজন্ম রাস্তায় বসে আছে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, কোমলমতি ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা-মায়ের কাছে আবদার করে। আর সে আবদার পূরণ করেন বাবা-মা। এই শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক আবদার করেনি। সবার দাবী একটাই, লেখাপাড়া ছেড়ে তারা রাস্তায় যে আবদার নিয়ে বসে আছে সেটি পূরণ করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এমন আবদার নিয়ে তারা কে বা কাদের ব্যর্থতার জন্য তারা রাজপথে? সরকারকেই এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
সড়ক নিরাপদ রাখার দায়িত্ব যাদের তারা এতোদিন কি কাজ করেছে? রাজপথে কেন ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলবে? কেন চালকের লাইসেন্স থাকবে না? এসব দেখার দায়িত্ব কার? নাগরিকদের কষ্টের টাকা কর হিসাবে সরকারের কোষাগারে জমা হয়। রাস্তা নিরাপদ করার দায়িত্বপ্রাপ্তরা মাস গেলেই সেই টাকা বেতন হিসাবে নেন। তারা কি টাকা হালাল করে নিচ্ছেন? গণপরিবহনের চাকা যদি তাদের পরিবারের কারো সন্তানের শরীর পিষে অবলীলায় দ্রæত বেগে চলে যায়, তখন অনুভূতি কেমন হবে? এসব কি তারা এক মুহুর্তের জন্য ভেবে দেখেছেন?
যাদের বয়স আঠারোর ঘরে তারাই এসব প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রশ্নের জবাব কে দেবে? গতকাল রামপুরা সড়কের বিটিভি ভবনের সামনে ইউলুপের নিচ থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া পর্যন্ত রাস্তার একদিকে যানবাহন আটকা ছিল। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কথা, অনেক যানবাহনের ফিটনেস নেই। আবার চালকের লাইসেন্স নেই। যানবাহন আটকে রাখার পরও কেউই বিরক্তি প্রকাশ করছে না। আগামীতে কাগজপত্র সঙ্গে নিয়েই বের হওয়ার ওয়াদা করে কেউ কেউ যানবাহন নিয়ে ফিরে যান।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার পর কাকরাইল মোড় এবং সর্বশেষ মতিঝিল শাপলা চত্বর। তিনটি স্পটে শিক্ষার্থীরা রাজপথে বসে একই কাজ করেছে। তারা যানবাহনের কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স দেখেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, আমরা নিরাপদে বাড়ি ফিরবো বলে রাস্তায় নেমেছি। অথচ আমাদের অবস্থান ও দাবিকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। সব কিছুতেই রাজনীতির গন্ধ পাওয়া কিন্তু ভালো ফল বয়ে আনে না। তাদের কথায়, ‘আমার বোন ও ভাই কবরে কেন’? এই প্রশ্নের জবাব পেতেই রাস্তায় নামতে হয়েছে।
কাকরাইল মোড়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল ও কলেজের কয়েকজন ছাত্র বলেছে, যারা দেশ চালান তাদের এবং যারা রাষ্ট্রের কর্মচারি তাদের কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন যে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আবার এমন কথাও বলা হচ্ছে যে শিক্ষার্থীরা নাকি এবার চোখ খুলে দিয়েছে। তাহলে তো বলতেই হয় এতোদিন কি ইচ্ছাকৃতভাবে চোখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল? আর দাবিগুলো যৌক্তিক বুঝার পরও পরিবহন সেক্টরকে খুশি রাখতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা বলছে, এবার যখন রাস্তায় নামতে হয়েছে তখন রাস্তা নিরাপদ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেই ঘরে ফিরব। মতিঝিল ব্যাংকপাড়ার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অনেকেই শিক্ষার্থীদের কথার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেছেন, এবার একটা কিছু হওয়া উচিত। রাস্তার নৈরাজ্য চিরতরে বন্ধের মধ্যদিয়ে সংশ্লিষ্টরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক যে সঠিক পথ কোনটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।