Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার বুক এখন শিশুদের খেলার মাঠ

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাঃ ইনামুল হক মাজেদী, গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে
রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর চরে এখন শিশুদের খেলার মাঠ। এছাড়াও নদীর মাঝ দিয়ে হেঁটে চলছে মানুষ, চলছে মালবাহী গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি। পানি না থাকায় জেগে উঠেছে ধু-ধু ময় বালুর চর। দেখে মনে হয় এটা প্রমত্তা তিস্তা নয়, কোন নদীর নালা। জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার করাল গ্রাসে একসময় বিলীন হয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, গরু, ছাগল, পুকুর ভরা মাছসহ অনেক কিছু। সর্বস্ব খুইয়ে ভিঠে ও বাড়ি ছাড়া হয়েছে হাজার হাজার পরিবার। কিন্তু বর্তমান চিত্র দেখলে মনে হয় তিস্তা তার যৌবন হারিয়ে ধুঁকে ধুঁকে কাঁদছে। তিস্তা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, একসময়ের উত্তাল ও ভয়ঙ্কর তিস্তার পেটকে মাঠ বানিয়ে শিশুরা খেলছে ফুটবল ও ক্রিকেট। খেলতে আসা শিশু খেলোয়ার আমিনুর রহমান জানায়, নদীতে পানি না থাকায় আমরা মাঠ বানিয়ে নির্ভয়ে ফুটবল খেলছি। এছাড়াও অবাধে চলছে মালবাহী গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি। পানি না থাকায় জেগে ওঠা বালুময় চরে মৌসুমি ফসল বুনেছে কৃষকেরা। তিস্তার ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠী পড়েছে বিপাকে। জীবনযাপন করছে মানবেতর। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না মেলায় এ অবস্থা। ভারতের সঙ্গে বারবার দরকষির পরও কোন ফল হচ্ছে না। এর ফলে তিস্তা হারিয়ে ফেলছে তার নাব্যতা ও ঐতিহ্য। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার কৃষক। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ হিসেবে তিস্তাকে বেছে নেয়া জেলে ও নৌ শ্রমিক পরিবারগুলোর বর্তমান করুণ অবস্থা। কথা হয় উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধামুর গ্রামের তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা জেলে বেরু দাসের সঙ্গে সে জানায়, একসময় হামরা (আমাদের) জীবনের বাজি নিয়্যা (রেখে) তিস্তাত নামি (নেমে) মাছ ধরি ভলোভাবে সংসার চালাছি অ্যালা
এখন নদীত পানি না থাকায় হামার মরণ দশা (ব্যাপার) হইছে। মাঝি নাজমুল হক জানায়, নদীতে পানি না থাকায় মানুষ এখন হেঁটেই পারাপার হয়। এখন যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। এ ব্যাপারে কোলকোন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মমিনুর ইসলাম বলেন, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন তিস্তা নদীর ছত্রছায়ায়। অধিকাংশ জনগোষ্ঠীই তিস্তার ওপর নির্ভরশীল। যদি তিস্তা ন্যায্য হিস্যা না পায় তাহলে এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে তিনি তিস্তার পানির ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিস্তার বুক এখন শিশুদের খেলার মাঠ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ