পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার রাজপথে গতকাল দেখা গেছে অন্যরকম দৃশ্য। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে যানবাহন তেমন ছিল না। যে দু’চারটা গাড়ি চলেছে; ছাত্ররা সেগুলো দাঁড় করিয়ে গাড়ীর ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং ড্রাইভারদের লাইসেন্স চেক করেছে। ড্রাইভারের লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়ি আটকিয়ে রেখেছিল ছাত্ররা। সায়েন্স ল্যাবে দেখা গেছে ছাত্ররা রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স পার করে দিচ্ছে; প্রাইভেট কার, শিশু, ছাত্র-ছাত্রীদের বহন করা গাড়ী সিএনজি এবং রিকশা ছেড়ে দিচ্ছে; আবার ধানমন্ত্রী ২৭ নম্বরে পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে তারা ঝাড়– হাতে রাস্তা পরিস্কার করছে। ফার্ম গেটে ইউনিফর্ম পরা ছাত্ররা ড্রাইভারের লাইন্সে চেক করছে; অনতি দূরে ছাত্রলীগে জনৈক নেতা গাড়ী ভাংচূর করছে। পথচারীদের যারা ছ্রাত্রদের এমন দৃশ্য দূর থেকে দেখে ভরতে গেছে; ছাত্ররা তাদের অভয় দিয়ে রাস্তা পাড় করে দিয়েছে। অভিনব এমন নানা চিত্র-দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানীর রাজপথে।
নিরাপদ সড়ক ও দুই শিক্ষার্থীকে বাসচাপায় ‘হত্যার’ বিচারের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। তারা বাস-ট্রাক-প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স চেক করে দেখছে। লাইসেন্স না পেলে সেই গাড়ির চাবি আটকে রাখছে। কোনোরকম সহিংসতা ছাড়া স্বতঃস্ফুর্ত এই আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের তৎপরতা এটুকুই। কিন্তু তাদের এই সরলতার সুযোগ নিয়েছে কেউ কেউ। যেমনটা নিয়েছেন ফার্মগেটে ‘ছাত্রলীগ› পরিচয়ধারী এক যুবক।
১২টার দিকে ধানমন্ডিতে হারুণ আই হসপিটালের সামনে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের একটি গাড়ি শিক্ষার্থীদের লাইসেন্স পরীক্ষায় আটকে যায়। পিঠে স্কুলব্যাগ নিয়ে ওই গাড়িটির পথ আগলে ছিল ইউনিফর্ম পরিহিত এক শিক্ষার্থী। লাইসেন্স দেখতে চাইলে চালক তা দেখাতে পারেননি। এ গাড়ি তারা যেতে দেবে না। চালকের আসনে থাকা পুলিশ কনস্টেবল অরবিন্দ সমাদ্দার বলেন, আমরা সরকারি চাকরি করি। লাইসেন্স না দেখে তো আর চাকরি দেয়নি। তা হলে লাইসেন্স দেখাতে পারেননি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি গাড়ি। আমাদের গাড়িতে করে খাবার নেয়া হয়। কাজের সময় আমরা লাইসেন্স নিয়ে বের হই না। কাগজ অফিসে থাকে। আধা ঘণ্টা ওই জায়গায় আটকে থাকার পর বাড়তি পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ওই গাড়িটি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। আড়াই-তিন’শ ছাত্র বাসের লাইসেন্স চেক করতে করতে সার্ক ফোয়ারার মোড়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে এসে একটি বাস আটকায়। ‘স্বাধীন পরিবহন’ নামের ওই বাসটির চালকের বয়স সর্বোচ্চ ১৩ থেকে ১৪ বছর। স্বাভাবিকভাবেই লাইসেন্স থাকার কথা নয়। ইউনিফর্ম পরা ছাত্ররা বাসটি আটকে যাত্রীদের নেমে যেতে অনুরোধ করলে যাত্রীরাও বিনা প্রতিবাদে নেমে যায়। শাহবাগের দিক থেকে আসা বাসটিতে আগে থেকেই সাদা ইউনিফর্ম পরা কিছু ছাত্র ছিল। যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই সাধারণ পোশাক পরা এক যুবক (যার বয়স আন্দোলনকারীদের চেয়ে অনেক বেশি) এসে একটা ইট কুড়িয়ে নিয়ে বাসের সামনের কাঁচে ছুড়ে মারে। ঝুর ঝুর করে ভেঙে পড়ে কাঁচ। ছাত্ররাই ওই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। আন্দোলনকারীরা চিৎকার করে বলছিল, ‘আমরা গাড়ি ভাঙার আন্দোলন করছি না; তুই গাড়ি ভাঙলি ক্যান?’
পুলিশ তখন সার্ক ফোয়ারা চত্বরে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখছিল। ছাত্ররা ভাঙচুরকারী যুবককে পাকড়াও করে দূরে দাঁড়ানো পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। ছাত্ররা বারবার বলিছল, ‘তুই গাড়ি ভাঙলি ক্যান? আমরা কি ভাঙচুরের আন্দোলন করতেছি?’। তারা যুবকটিকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার জবাবে বাস ভাংচুর করা যুবক নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করেন। নাঈম আহমেদ নামের ওই যুবক নিজেকে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেয়। সে বেশ কয়েকবার নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে শেষ পর্যন্ত হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। ইউনির্ফম পরিচিত আন্দোলনরত ছাত্ররা নিজেদের মতো আবারও গাড়ির লাইসেন্স চেক করতে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।