Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়ের পথে নৌকা

বরিশালে ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে : মাহাবুব তালুকদার , কারচুপি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না : রফিকুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ১:০২ এএম

ভীতি-আতঙ্ক, নানা অনিয়ম, দল বেঁধে ব্যালটে সিল মারা, জাল ভোট, এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া, হাতাহাতি, পুলিশের ধাওয়া, নারী মেয়র প্রার্থীকে নাজেহাল, ভোট কেন্দ্র ঘেড়াও, ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে প্রভাবিত করা, কেন্দ্র দখল, সংঘর্ষ, গোলাগুলি, কেন্দ্র স্থগিত, ভোট বর্জনসহ নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে তিন সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনের আগে ভোটাররা যে শঙ্কা প্রকাশ করেছিল তিন সিটির নির্বাচনে তারই প্রতিফলন দেখা গেছে। আইন শৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তা এবং নির্বাচন কমিশনের ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার ভূমিকায় সিলেট, রাজশাহী ও বরিশালে ভোট হয়েছে কার্যত খুলনা ও গাজীপুর স্টাইলেই। বরিশালে নৌকার প্রার্থী ছাড়া নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। সিলেট ও রাজশাহীতে নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি সিটিতে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীরা জয়ের পথে এগিয়ে রয়েছেন। কারচুপির কথা স্বীকার করে নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার বলেছেন, ‘নির্বাচনে বরিশালে হয়েছে খুব বাজে অবস্থা। ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে। একজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী ভোট বর্জনও করেছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা কমিশনে আলাপ-আলোচনা করছি।’ আরেকজন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তিন সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার প্রায় ৯ লাখ। ১৪টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট শুরুর পর থেকেই কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া, এজেন্টদের ঢুকতে না দেওয়াসহ নানান অভিযোগ তোলেন তিন সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, আরিফুল হক চৌধুরী ও মজিবুর রহমান সরোয়ার। তারা সুনিদৃষ্ট অভিযোগ ইসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে জমাও দেন। সিলেটে বিএনপির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অভিযোগ করেছেন মোট ৪১টি কেন্দ্র দখল করে সরকার দলীয় ব্যক্তিরা জালভোট দেয়। রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেছেন ৭৬টি কেন্দ্রে অনিয়ম, জাল ভোটের ঘটনা ঘটেছে। বরিশালের মজিবুর রহমান সরোয়ারের অভিযোগ ৭০ থেকে ৮০টি ভোাটকেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট ঢুকতে দেয়া হয়নি। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং নিশ্চিত পরাজয় জেনে ‘কাল্পনিক’ অভিযোগ করছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে ভোট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আওয়ামী লীগের দাবি, ‘উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছে দলটি।’ অন্যদিকে বিএনপি এই নির্বাচনকে বলেছে ‘নীলনকশার নির্বাচন। নজিরবিহীন কারচুপির হয়েছে। ইসি বধির হওয়ায় আইন শৃৃংখলা বাহিনী নৌকায় সিল মেরে ভোট করেছে।’ সিলেটে ভোট দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বিএনপির আসলে কোনো লোকজনই নেই। সে জন্য তারা এজেন্ট দিতে পারেনি। এখন মিথ্যাচার করছে।’
দুপুরেই দখল এবং ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে বরিশাল সিটির ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মজিবুর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, ‘৭০-৮০টি কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। অন্য সব কেন্দ্রেও পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা নৌকার মার্কার সিল মেরেছে। এসব কারণেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি। তার আগে নির্বাচনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহাবুব সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী হামলার শিকার হন হলে তিনিও ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
সিলেট ও রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা বারবারই বলেছেন, যাই হোক না কেন তাঁরা শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকবেন। কিন্তু নৌকার ব্যালটে বেপরোয়া সীল মারার দৃশ্য দেখে নিজেদের কথায় ঠিক থাকেননি। সিলেটে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক ভোট বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছেন। এতে তিনি ৪১টি কেন্দ্রের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন। এর আগে নগরের কাজী জালালউদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে নিজ কার্যালয়ে গিয়ে বলেন, এবার ভোট চুরির ঘটনা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এমনটা সিলেটে আগে কখনো হয়নি। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে তিনি জানান। এ ছাড়া মেয়র পদে বাসদ মনোনীত প্রার্থী মোঃ আবু জাফর অভিযোগ এনে সব কেন্দ্রের ভোট বাতিলের আবেদন করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আলীমুজ্জামানের কাছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, নগরীর ভোট কেন্দ্র গুলো ঘুরে দেখা যায় সর্বত্র আওয়ামীলীগ মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে নেতা কর্মীদের প্রাধান্য। লিটন স্যাটেলাইট স্কুল কেন্দ্রে সকালে ভোট দিলেও অনিয়মের অভিযোগ এনে একই কেন্দ্রের ভোটার বিএনপির বুলবুল ভোটদানে বিরত ছিলেন। নগরঘুরে দেখা যায়, বেশীর ভাগ কেন্দ্রের আশেপাশে দেখা যায়নি বিএনপির কোন নির্বাচনী ক্যাম্প। ছিল না নির্বাচনী এজেন্ট। অভিযোগ ছিল পুলিশ ও আওয়ামিলীগ ক্যাডাররা তাদের সকাল বেলাতেই আশ পাশ থেকে তাড়িয়ে দেয়। নগরীর শিরোইল কেন্দ্রে সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রবেশ করতেই পারেনি বিএনপির নির্বাচনী এজেন্টরা। পরে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল গিয়ে তাদের প্রবেশের ব্যবস্থা করে। বাধ্য হয়েই কারচুপির প্রতিবাদেঅবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করে ধানের শীষের প্রার্থী। এ সময় মেয়র প্রার্থী বুলবুল বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র নেই সেখানে আমার ভোট দিয়ে কোন লাভ নেই। কারো সাথে কোন ঝামেলাও করতে আমি রাজি নই। কোন কেন্দ্রে যাবো, কোন কেন্দ্রে গিয়ে ঠেকাবো, তাই এখানেই বসে আছি। আমি তো আর প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে পারবো না। তাই বাধ্য হয়ে চুপ-চাপ সব অনিয়ম বসে থেকে দেখছি। যেখানে নগরবাসীর ভোটের অধিকার নেই সেখানে আমার ভোট দিয়ে কি লাভ। আজ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে বিপন্ন গণতন্ত্র। সরকারী কর্মচারীর যোগ সাজসে ভোট চুরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি ভোট না দিয়ে সেখানেই বসে থাকেন। শাহমখদুম কলেজ কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মন্টু নাজেহাল হন। বিএনপির পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নগরীর ১৮,১৯, ২১, ২২, ২৩, ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। তবে আওয়ামী এজেন্ট বলছে, বিএনপি এজেন্টরা স্বেচ্ছায় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলে জানান আওয়ামী এজেন্টরা। নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসেপ জেনারেল স্কুলে ৯টার সময় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসছেন ইমন শেখ নামের বিএনপির পোলিং এজেন্ট। কেন বের হয়ে আসলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে থাকতে না দিলে আমি কী করবো। কেন্দ্রের সামনে ভোটারদেরকে সহযোগিতা করছিলেন আওয়ামী লীগের কামাল হোসেন নামের একজন । তিনি এ বিষয়ে বলেন, বিএনপির এজেন্ট স্বেচ্ছায় বের হয়ে গেছে। তাকে কেউ বের করে দেয়নি। বিল সিমলা এলাকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কেন্দ্রে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক ও কাউন্সিলর পদের প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দুপুরের দিকে এক পসলা বৃষ্টি ভোট গ্রহনে ছন্দপতন ঘটায়। ফাঁকা হয়ে যায়। সকাল থেকে শেষ পর্যন্ত ভোটারদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়নি। সকালের দিকে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি বেশী ছিল। এদিকে নগরীর সিটি কলেজ কেন্দ্রের সামনে যুবলীগ ছাত্রলীগের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় তাদের দুইজন ছুরিকাহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকায় ছাত্রলীগের অভ্যান্তরীন কোন্দলে এক নেতা ছুরিকাহত হয়। বিকেলে আওয়ামী লীগ মহানগর কার্যালয়ে মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, অত্যান্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। আমি নিজেই ৩০টি কেন্দ্রে গিয়েছি সারাটাদিন ঈদের মতো আনন্দ বিরাজ করেছে। তিন সিটির মধ্যে রাজশাহীতে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পূর্ণ হয়েছে। এমন নির্বাচন ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে উত্তরে লিটন জানান, বুলবুলের ভোট না দেয়া এবং মাঠের মধ্যে নেতাকর্মী বিহীন একা বসে থাকা রাজনৈতিক দেউলিয়া এবং অভ্যান্তরীন দ্ব›েদ্বর বহিঃপ্রকাশ।
বরিশাল থেকে বিশেষ সংবাদদাতা জানান, কয়েকদিনের ব্যাপক উদ্বেগ উৎকন্ঠা অতিক্রম করে বরিশাল মহানগরীতে ভোট হলেও বেশীরভাগ কেন্দ্রের মহিলা বুথগুলোতে নৌকা মার্কার পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করা হয় পুুরুষ। তারা মহিলা ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে নিজেরাই সীল মারতে শুরু করেন। অনেকে আবার ভোট প্রদানের গোপন কক্ষে ঢুকে মহিলা ভোটারদের যোর করে ঐসব এজেন্টের প্রতিকে সীল মারতে চাপ প্রয়োগ করে। বিষয়টি নিয়ে অন্য কোন পোলিং এজন্টদের প্রতিবাদ করারও সাহস হয়নি। এমনকি প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারও অসহায়ের মত সব দেখছিলেন। টেক্সটাইল কলেজ কেন্দ্রের দোতালায় মহিলা বুথে এক পোলিং এজেন্ট নিজেই মেয়র প্রার্থীদের ব্যালট বই নিয়ে টানা সীল মেরে বাক্সে ঢোকাতে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে কর্তব্যরত কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি শুধু নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। যেখানেই কেউ প্রতিবাদ করছে সেখানেই বাক বিতন্ডা হয়। প্রতিবাদকারী পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে থেকে বের করেও দেয়া হয়। অথচ প্রতিটি কেন্দ্রের নিরপত্তায় ২৪জন করে সশস্ত্র আনসার ও পুলিশ ছিল।
নগরীর সাবেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেস করতে দেয়া না হলেও সেখানেও মহাজোটের প্রার্থীর পোলিং এজন্টরা মহিলা ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে যায়। আবার গোপন কক্ষে ঢুকে মহিলা ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে সীল মেরে দিচ্ছিল। এমনকি ঐ কেন্দ্রটির মূল ফটকের বাইরে প্রহরারত পুলিশ ‘নৌকা মার্কা’ ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর কর্মীদের সেখানে অবস্থান না করতে হুংকার দিতে দেখা গেছে। সরকারী বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রেও বেশীরভাগ মহিলা বুথেই প্রায় একই চিত্র চোখে পড়েছে। দুপুর ১২টার পরে নগরীর বেশীরভাগ কেন্দ্রগুলো ফাঁকা হতে শুরু করে।
দুপুর ১টার পরে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার না থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীরা ভেতরে-বাইরে অবস্থান করছিল। পুলিশ সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীও ঢিলেঢালাভাবে কেন্দ্রে অবস্থান করে। ভোট কর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন ঘড়ির কাটা বিকেল ৪টায় পৌছার। আর এরই মধ্যে কোন কোন কেন্দ্রের বুথে মহাজোটের কর্মীরা নির্বিঘে ব্যালট পেপারে তাদের প্রতিকে সীল মারছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
২০১৩সালের ১৫জুন সিটি নির্বাচনের পরে বরিশাল মহানগরীর মানুষ আরে কোন ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনে সদর আসনে ভোট হয়নি। একই আসনে উপ-নির্বাচনেও ভোট দিতে হয়নি। সদর উপজেলা নির্বাচনেও নগরবাশীর ভোট দেয়ার সুযোগ ছিলনা। গতকালও আশাহত হয়েছে বরিশাল মহানগরীর ভোট বঞ্চিত ভোটাররা।
সিলেট অফসি জানায়, সিলেট নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, আগের রাতে ব্যালটে নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভরাট করার জন্য আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। ভোটগ্রহণ শেষে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা কার কাছে বিচার দেবো? আল্লাহর কাছে বিচার দেয়া ছাড়া এ দেশে বিচার দেয়ার আর জায়গা নাই। সিটি নির্বাচনকে ‘মীর জাফরের নির্বাচন’ আখ্যায়িত করে ‘সেনাবাহিনী নিয়ে নির্বাচনে আসতে’ সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের নির্বাচন এ জীবনে দেখিনি। এটা মীরজাফরের নির্বাচন। আওয়ামী লীগ নেতারা প্রকাশ্যে মাইক্রোবাস দিয়ে ঘুরে ঘুরে ভোট জালিয়াতি করেছেন। নির্বাচন কমিশনকে ‘মেরুদন্ডহীন’ উল্লেখ করে বিএনপি প্রার্থী বলেন, ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে তারা আবারো প্রমাণ করল- এই নির্বাচন কমিশনার মেরুদন্ডহীন। ইসির লজ্জা-শরম থাকলে তারা পদত্যাগ করতো। অথচ তাদের মতো অকার্যকর নির্বাচন কমিশন টেলিভিশনের সামনে এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করে! আমার বাসায় গিয়ে বৃদ্ধা ভোটাররা বলেছেন, আমরা তোমাকে ভোট দিতে গিয়েছিলাম, আমাদের ভোট হাইজ্যাক হয়েছে। তিনি বলেন, এই নির্বাচনই শেষ নির্বাচন নয়। আমরা শিক্ষা নিলাম। গণতন্ত্রের জন্য আমাদের আন্দোলন। খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করছি, সেনাবাহিনী নিয়ে নির্বাচনে আসুন, দেখুন আপনাদের কি অবস্থা হয়। ‘নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ হলে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতাম। ##



 

Show all comments
  • chanchal ৩১ জুলাই, ২০১৮, ২:৫৭ এএম says : 1
    যা'ই হউকনা কেনো আওয়ামীল কৌশলে শত ভাগ সফল।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ৩১ জুলাই, ২০১৮, ৩:১৮ এএম says : 0
    এ গণতন্ত্র নাকি স্বৈরতন্ত্র রে বাবা!!! কি চলতাছে দেশটায়?
    Total Reply(0) Reply
  • Saifur Rahman ৩১ জুলাই, ২০১৮, ৩:২৩ এএম says : 0
    This is called Bangladesh, where impossible is possible too...
    Total Reply(0) Reply
  • Zia Ahasan Rana ৩১ জুলাই, ২০১৮, ৩:২৪ এএম says : 0
    নতুন কিছু নয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নৌকা

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ