পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বারবার তালিকা হয়। জেলা প্রশাসন দেয় নোটিশ। তৎপর হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। অভিযানও শুরু হয়। কিছুদিন পর রহস্যজনকভাবে আবার থেমে যায়। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর ধরে অভিযানের নামে লুকোচুরি খেলা। এটি যশোরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ভৈরব নদের দখলমুক্তের কাহিনী।
সর্বশেষ গতবছরের নভেম্বরে ১শ’ ১৮জন অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করে নোটিশ ইস্যু হয়। প্রশাসন থেকে বলা হয় ‘এবার শত চেষ্টা করেও রক্ষা পাবে না অবৈধ দখলদাররা। যেভাবেই হোক উচ্ছেদ করেই ছাড়বো’। একমাস যেতে না যেতেই সব লম্পঝম্প বন্ধ হয়ে যায় রহস্যজনক কারণে। ভৈরব নদের কান্না দেখা লোকজন প্রশ্ন ছুঁড়েছেন ‘নদ দখলদারদের খুঁটির জোর কোথায়?’ প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও প্রশ্ন দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় আদৌ কি কখনো নদের দুইপাড় দখলমুক্ত হবে? পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, দাইতলা পয়েন্ট থেকে ২শ’ ৭২কোটি টাকা ব্যয়ে মরা ভৈরব খননের কাজ শুরু হয়েছে। শহরের অংশে অবৈধ দখলমুক্ত না হলে খনন কাজ কঠিন হবে। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগে দখলদারদের খুঁটির জোর কোথায়?।
জানা যায়, ভৈরব নদের জমি দখল করে দুইপাড়ে বেশকিছু ভবন ও অসংখ্য দোকানপাট নির্মিত হয়েছে। যার দখলদাররা প্রভাবশালী। ওয়ান ইলেভেনের সময় কিছু উচ্ছেদ হলেও আবার তা বহাল তবিয়তে দখল হয়। ৮০’এর দশক থেকে মূলতঃ নদ দখল শুরু হয়। সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে বাঁশের খুঁটি তারপর কংক্রিটের পিলার, পরবর্তীতে বিশাল বিশাল অট্টালিকা, একপর্যায়ে হয়ে যায় পৈত্রিক সম্পত্তি। কিভাবে নদের জমি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হলো তা কখনো তদন্ত হয়নি। যশোরবাসীর প্রত্যাশা ছিল গত বছরের শেষদিকের অভিযানে উচ্ছেদ হবেই। এর আগে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথভাবে জরিপও চালায়। খনন ও উচ্ছেদ একইসঙ্গে করার কথা থাকলেও বর্ষাকালে নামকাওয়াস্তে খনন শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযান থেমে গেছে ঠিকই। অথচ এটি বাস্তবায়ন হলে যশোর শহরের চেহারা পাল্টে যেত। ভৈরব নদ খননের মাধ্যমে দুইপাড়ে পায়ে হাটার রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনাও ছিল। বহুদিন ধরে ভৈরব নদ খনন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর শহরের সৌন্দর্যবৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন যশোরের সাধারণ মানুষ। মন্ত্রী ও এমপিরা বরাবরই কথা দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেননি। এবার নদ খননের অর্থ বরাদ্দ এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপে যশোরের মানুষ আশান্বিত হয়ে ওঠেন। কিন্তু আকস্মিকভাবে
জেলা প্রশাসকের বদলীসহ নানা কারণে থেমে যায় অভিযান। নতুন জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে এখনো কোন উদ্যোগ নিয়েছেন এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয়, ঐহিত্যবাহী ভৈরব নদটি গঙ্গা থেকে বের হয়ে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ভেতর দিয়ে সীমান্ত জেলা মেহেরপুরে ঢুকেছে। মেহেরপুরের সুবলপুর পয়েন্টে মিশেছে মাথাভাঙ্গা নদীর সাথে। ভৈরব আর মাথাভাঙ্গা অভিন্ন ধারায় দর্শনা রেলস্টেশন এলাকা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। কিন্তু ১৮৬১ সালে শিয়ালদহ-কুষ্টিয়া রেলপথ স্থাপনের সময় ভৈরব নদ ভরাট করে মাথাভাঙ্গা নদীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। ওই পয়েন্ট থেকে দর্শনা ও জীবননগর হয়ে ভৈরব নদ এসে মিশেছে চৌগাছার তাহেরপুরে কপোতাক্ষের সাথে। সেখান থেকে ভৈরব নদ যশোর ও শিল্পশহর নওয়াপাড়া হয়ে শিল্পনগরী খুলনা ছুঁয়ে সুন্দরবনের পশুরনদীতে গিয়ে মিশেছে। ভৈরব নদকে ঘিরেই মূলত যশোর, নওয়াপাড়া ও খুলনায় নগর, শহর ও শিল্প গড়ে ওঠে। ব্যবসা-বাণিজ্যও স¤প্রসারিত হয়। ভৈরব নদে একসময় বড় বড় জাহাজ ভিড়তো। এখন ভৈরবে নদীপথ নেই বললেই চলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।