পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদেশগামী কর্মীদের তথ্যগত অজ্ঞতা ও মানবপাচার সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর বিচার নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতাকে মানবপাচারের বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। গতকাল রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘মানব পাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন’ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ ৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক মানব পাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এ সংলাপের আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান।
ব্র্যাকের স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এম্পাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহর সঞ্চালনায় সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শাহ আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি (পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) মোহাম্মদ শামসুর রহমান, আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশের চিফ অব মিশন জিওর্জি গিগৌরী, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের চ্যার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মারিও রনসমি। এছাড়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিনিয়র সাংবাদিকরা সংলাপে অংশগ্রহন করেন।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, বিদেশগামী কর্মীরা যে দেশে যাবে সে দেশের ভাষাসহ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে জ্ঞান থাকা উচিত। অথচ বেশিরভাগ কর্মী সে বিষয়ে যথাযথ জ্ঞান রাখে না। যার কারণে তারা দালালদের দ্বারস্থ হয়। আর অসাধু দালালরা এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিদেশগামীদের বিভিন্ন দেশে পাচার ও মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। বেশিরভাগ কর্মী নিজেদের অধিকার সম্পর্ক সচেতন হলে এবং মানবপাচারের মামলাগুলো দ্রæত নিস্পত্তি হলে মানবপাচার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, মানব পাচার প্রতিরোধে ২০১২ সালে দেশে একটি চমৎকার আইন করা হলেও এর বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। কারণ সেসব মামলার অধিকাংশরই বিচার হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের মূল সমস্যা হল ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’। অপরাধীদের শাস্তি কম হওয়ায় মানবপাচারের মতো বড় অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। তাই এ সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি না করলে অপরাধ আরও বাড়তে থাকবে।
বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মানব পাচারের বিচারের ব্যপারে রাষ্ট্রকেই মূল দায়িত্ব নিতে হবে। এ জন্য সময় অনুযায়ী সঠিকভাবে চার্জশিট দাখিল ও দক্ষ প্রসিকিউশন নিয়োগসহ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
মোহাম্মদ শামসুর রহমান বলেন, তথ্য গোপন করার কারণে কর্মীরা বিদেশে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চাইলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারা যায় না। অসংখ্য কর্মী সঠিক পদ্ধতিতে না গিয়ে দালাল বা বিভিন্ন উপায়ে বিদেশে যাওয়ার কারণে মানবপাচার ঘটছে।
আসিফ সালেহ বলেন, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণে একটি সঠিক তথ্যভান্ডার, আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির পাশাপাশি বিদেশ যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে শরিফুল হাসান বলেন, ২০১২ সালে মানব পাচার আইন হওয়ার পর থেকে এখন পযন্ত ৪ হাজার ১৫২টি মামলা হলেও শাস্তির ঘটনা অনেক কম। এ সব মামলার অধিকাংশরই এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি। পাচাররোধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় গতবারের মতো এ বছরও যুক্তরাষ্ট্রের মানব পাচার প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ‘টায়ার-২ ওয়াচ লিস্টে’ রাখা হয়েছে।
সংলাপে মানব পাচাররোধে বিভিন্ন সুপারিশ করেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে বিদ্যমান আইনের সঠিক বাস্তবায়ন, পাচারের মূল হোতাদের খুঁজে বের করা ও শাস্তির আওতায় আনা, অভিবাসন খরচ কমিয়ে আনা, আইন শৃংখলা বাহিনীর জবাবদিহিতা, সচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা, মামলা পরবর্তী সঠিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয় সাধন ও সঠিকভাবে পুলিশি প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের একটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি ইউরোপের দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া প্রতি বছর গড়ে ৫০ হাজার নারী বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হয় বলে চলতি বছরের শুরুতে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ জানায়।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।