Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গ্লক্সো চালুর দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

কারণ ছাড়াই বন্ধ ওষুধ উৎপাদন

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও সীতাকুন্ড সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গ্লক্সোক্সোস্মিথক্লাইন-জিএসকে’র উৎপাদন ফের কবে শুরু হবে তা এখনো অনিশ্চিত। কোন কারণ ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া হয় জীবন রক্ষাকারী অনেক ওষুধ উৎপাদনকারী ৫১ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ কারখানাটি। এরমধ্য দিয়ে বেকার হয়ে পড়লেন সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে তাদের জীবন-জীবিকা। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে বন্ধ হলো আরও একটি বহুজাতিক কোম্পানী।
এদিকে কারখানাটি চালুর দাবিতে গতকাল (রোববার) তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাটে কারখানায় অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তারা। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫ট পর্যন্ত টানা অবস্থান কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে কারখানাটি চালু করার দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে আজও (সোমবার) অবস্থান ধর্মঘট এবং বিকেলে কারখানার সামনের মহাসড়কে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে।
গ্লক্সোস্মিথক্লাইন কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কারখানাটি চালু না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে এ আন্দোলনের সাথে কারখানার সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পৃক্ত হয়েছেন। আজকের সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যোগ দেবেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, কোন কারণ ছাড়াই লাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়ে সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বেকার করে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির দক্ষিণ এশিয়ার ‘রিজিওনাল হেড অব সাপ্লাই চেইন’ রাজু কৃঞ্চ ঘোস্বামীর সাথে আমরা আলোচনা করেছি, তিনি এক সপ্তাহের সময় চেয়ে বলেছেন, কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তিনি কারখানা খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আগাম নোটিশ ছাড়াই গত বৃহস্পতিবার কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক শ্রমিক কর্মচারীরা রাজু কৃষ্ণ ঘোস্বামীসহ কর্মকর্তাদের ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ওইদিন অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও শুক্রবার থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারিরা।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, এই কোম্পানিটি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত একটি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৭ সাল থেকে এটি সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাটে বেশকিছু জরুরী ওষুধ উৎপাদন করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির ওষুধ অত্যন্ত মানসম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশের অগণিত রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছে। কোম্পানী কখনো লোকসানের শিকার হয়নি। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে কোম্পানিটি মুনাফা অর্জন করেছে ৩৫১ কোটি ৭৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
গতবছরও সকল শ্রমিক-কর্মচারীকে লাভের ৫ শতাংশ ভাগ করে দিয়েছে কোম্পানী। এছাড়া কোম্পানীর ম্যানেজার, ডিরেক্টররা সবাই আগের চেয়ে এখন দ্বিগুণ বেতন পান। এরপরও কি করে এই কোম্পানীকে অলাভজনক বা লোকসানজনক বলা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়। তারা মনে করেন, এটি দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বিশে^র অন্যতম ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি ফৌজদারহাটে কারখানা স্থাপন করে ১৯৬৭ সালে। এই কারখানায় শিশুখাদ্য, হরলিক্স, রোটা ভাইরাসের ওষুধ, হেপাটাইটিস এবিসি এবং জরায়ু ক্যান্সারের ওষুধসহ জীবন রক্ষাকারী অনেক রকম ওষুধ উৎপাদন করা হতো। মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনের কারনে অল্প সময়ে এ দেশেও কোম্পানীটির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শুরু থেকে কখনোই লোকসান গুনতে হয়নি এ প্রতিষ্ঠানকে। বরং ধীরে ধীরে এ প্রতিষ্ঠানের আয়তন ও জনবল বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারি সংখ্যা প্রায় এক হাজার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওষুধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ