পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হোক এমনটি চাইলেও বিএনপিকে কোন ছাড় দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। আবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করুক তা-ও চায় না। তবে বিএনপির বিকল্প হিসেবে যে দল বা জোট কাজ করছে তাদের ছাড় দেবার মানসিকতা রয়েছে আওয়ামী লীগের। তবে কাউকেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেবে না ক্ষমতাসীনরা।
দলের নীতি-নির্ধারকদের মতে, নির্বাচনে বিএনপি নিজেদের তাগিদেই অংশ নেবে। তাই নতুন করে তাদের ছাড় বা সুযোগ দেবার প্রয়োজন নেই। বিএনপি এখনো দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল। অল্প সুযোগ পেলেই তারা দল গুছিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। তাই চাপে রেখেই বিএনপিকে নির্বাচনে চায় আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি নানা শর্ত দিলেও তা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীনরা মনে করে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে আবারও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কিন্তু এরপরও বিএনপিকে এসব বিষয়ে ছাড় দেবার সুযোগ নেই। শর্ত দিয়ে কোন নির্বাচন হবে না। তবে সূত্র জানায়, প্রকাশ্যে ছাড় না দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রভাবিত করা হবে। যাতে তারা নিজেরাই আসে।
সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন সুন্দর ভাবে আয়োজনের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। এজন্য বিএনপিকে চাপে রাখতে সব ধরণের চেষ্টা করা হবে। প্রয়োজনে দেশের প্রতিথযশা সব রাজনীতিবিদদের সংসদে নিয়ে আসা হবে। যেন সরকারের কোন সমালোচনা না থাকে। বিএনপির এমপিরাও সংসদে থাকবে কিন্তু তাদের গুরুত্ব থাকবে না বা জাতীয় রাজনীতিতে কোন প্রভাব থাকবে না।
এজন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখি করার উদ্যোগ আওয়ামী লীগের। জোট মহাজোট গঠনের প্রক্রিয়াও চলছে আড়ালে আবডালে। সরকারের পক্ষে এবং বিপক্ষে উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব রাখা হচ্ছে। এতে করে সুবিধা হবে বিএনপির বিকল্প একটি দল বা জোট যখন সরকারের সঙ্গে লিয়াজু করবে, নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলবে এবং বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চাইবে তখন বিএনপি চাপে পড়বে। বিএনপির কথা বলার সুযোগ কমে যাবে। ফলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় নির্বাচনে চাপে থেকেই অংশ নেবে।
আর সব দল যখন নির্বাচনে অংশ নেবে- বিশেষ করে এলিট শ্রেণীর কিছু দল, যাদেরকে আওয়ামী লীগ এক-এগারোর কুশিলব হিসেবে আখ্যায়িত করে। এতে করে দেশের বাইরের চাপ অনেকাংশে কমে যাবে। আর বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে নেমে মাঠ গরম করার চেষ্টা করবে। ফলে বিএনপি চাপের উপরই নির্বাচনে আসবে। সরকারের তরফ থেকে কোন ছাড়, সুবিধা বা সংলাপের কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে না, প্রয়োজনও পড়বে না।
বিএনপিতে যেন ছাড় দেয়া না লাগে সেজন্য এই দলটির বিকল্প হিসেবে একটি দল বা জোট কে শক্ত হবার সুযোগ দিতে চায় সরকার। এক্ষেত্রে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, কামাল হোসেনের গণফোরামের জোটের বিষয়ে বেশ আগ্রহী আওয়ামী লীগ। তবে তাদের জনপ্রিয়তা না থাকায় জটিলতা দেখছে নেতারা। এছাড়া এক এগারোর কুশিলব হিসেবে কিছুটা রিস্কি মনে করা হচ্ছে এ দলগুলোকে।
তাই বিকল্প জোটেরও বিকল্প খুজছে সরকার। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এ সময় সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদের ধারাবাহিক বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া সম্প্রতি সিপিবি ও বাসদ (খালেকুজ্জামান)-সহ ৮টি বামপন্থী রাজনৈতিক দল মিলে বাম গণতান্ত্রিক জোট নামে নতুন জোটের নেতাদের সঙ্গে বেঠক করবেন। জোট গঠনের পরপরই ওবায়দুল কাদেরের এই সাক্ষাৎ কর্মসূচিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এই সাক্ষাৎকে কেউ কেউ ১৪ দলীয় জোটের কলেবর বৃদ্ধির অংশও মনে করছেন। ওবায়দুল কাদের বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত ৮টি দলের প্রত্যেকটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। বাম জোটভুক্ত অন্য দলগুলো হলো বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন ও বাসদ (মার্ক্সবাদী)।
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিপিবি নেতাদের সঙ্গে জাস্ট সৌজন্য সাক্ষাৎ। বাসদের খালেকুজ্জামানের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছি। ফোনে কাদের সিদ্দিকী সাহেবের সঙ্গেও কথা বলেছি। ওনি গতকাল আমাকে কল করেছিলেন কিন্তু খেয়াল করতে পারিনি। আজকে তাকে কল করেছি, কথা বলেছি। এটা একটা সৌজন্যবোধের ব্যাপার। একটা ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ রাজনীতিতে থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে রাজণৈতিক দৃশ্যপট আরো পাল্টাবে।
এছাড়া ইতোমধ্যে বাম দলগুলো রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। প্রত্যেক সিটি নির্বাচনেই বাম দলের মেয়র প্রার্থী নির্বাচন করছে। এছাড়া বিভিন্ন আসনের এমপি প্রার্থীরা কাজ শুরু করেছেন।
সূত্র জানায়, ইসলামি দলগুলোকেও মাঠে নামার সুযোগ দেয়া হবে। ফলে সরকারের পক্ষে এবং বিপক্ষে উত্তেজনা তৈরী হবে। ইতোমধ্যে এই দলগুলোও সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
আওয়ামী লীগ মনে করে বামদল ও ইসলামী দলগুলোকে মাঠে নামানো খুব সহজ। আর বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তারা সরকারের কাছ থেকে বড় ধরণের সুবিধা পাবে এমন আশায় আছে। বাম-ডান অনেক দলই এখন আওয়ামী লীগের জোটে শরিক হতে চায়। এছাড়া অনেকে চায় বিরোধী জোটে থেকে সুবিধা পেতে। তাও সরকারের পরামর্শ মত।
এরই মধ্যে তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়ালের নেতৃত্বে একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আর খেলাফত মজলিম, ইসলামি ঐক্যজোট (নেজামী) এই মানের দলগুলো আলাদা জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এরা উভয়ই আওয়ামী লীগের থেকে বিশেষ সুবিধা চায়।
এছাড়া ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমনাই) তারা চাচ্ছে সরকারের বিপক্ষে যেসব ইমলামি দল রয়েছে তাদের নেতৃত্বে দিতে। এতে করে সরকারের পক্ষেই সুবিধা হচ্ছে।
এদিকে বিশেষ আরেকটি সূত্র জানায়, এর মধ্যেই বিএনপিকে প্রলুব্ধ করা হবে। উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করতে দেয়াসহ নানান সুযোগ দেয়া হবে। সরকারের অধীনে সুন্দরভাবে নির্বাচনে আসার জন্য।
সম্প্রতি বিএনপি নেতারা অভিযোগ করছে, নির্বাচন থেকে তাদের মাইনাস করার ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ। তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ বলছে এ ধরণের কোন ইচ্ছা তাদের নেই। সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা নিজেরাই তো নিজেদের মাইনাস করে ফেলেছেতাদের নেগেটিভ রাজনীতির যে ব্যর্থতা, সেই ব্যর্থতাই তাদেরকে মাইনাস করেছে। সরকার মাইনাস করবে কেন।
তাদের নির্বাচনে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য কোন সংলাপ করা হবে না। আর তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তা নিয়ে দলের ম্েযধই মতভেদ রয়েছে। তাই অক্টেবরের আগে বলা যাবে না আসবে কি না।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, বিএনপিকে মাইনাস করার প্রয়োজন নেই। তারা নিজেরাই নিজেদের মাইনাস করেছে। খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, কাউকে মাইনাস করার থিওরি আওয়ামী লীগ অবলম্বন করে না, বরং বিএনপি নির্বাচনে আসুক, এটা আওয়ামী লীগ চায়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর কর্ণেল (অব.) ফারুক খান ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনের জন্য সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৪ দলে অনেকেই শরিক হতে চায়। এটা আরো ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কাউকে জোটে নেয়া হবে কিনা বা নির্বাচনী জোটে থাকবে কিনা। তিনি আরও বলেন, বিএনপি বারবার ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। এবারও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যদি তারা নির্বাচনে না আসে তাহলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।