পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দৃশ্যত চলছে অবাধ সুষ্ট নিরপেক্ষ নির্বাচনমহা-পরিকল্পনা। এ সরকারের আমলে ইতিহাসের সবচেয়ে কোনঠাসা জামায়াতও বীর বিক্রমে চালাচ্ছে তাদের প্রচার প্রচারনা। যে জামায়াত নেতাকর্মীদের হন্য হয়ে খুঁজত প্রশাসন, তারাও আত্গোমপন ছেড়ে, প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নগরীর পাড়া- মহল্লা-রাজপথ। সেই সাথে পাল্টাপালটি অভিযোগের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত জমা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের টেবিলে। চলমান এই অবস্থা নির্বাচনবাস্তবতাও। কিন্তু সেই বাস্তবতার মধ্যেও চরম বেকায়দায় রয়েছে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে রয়েছে সাধারন মানুষের বিশাল ভোট। তারা রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝেন না। কিন্তু তারাই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রধান হাতিয়ার। তাদের ঢেউ যে দিকে গড়াবে সে দিকেই নির্ধারন হয় বা হবে নির্বাচন ফলাফল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সেই সাধারন ভোটারদের মন মগজে এখন নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন। একান্ত আড্ডা, চায়ের টেবিল, সামাজিক অনুষ্টানে একত্র হলেই তারা ভোট ও ফলাফল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। এক কথায় জোরে জয়, ভোটে নয় তারা অনুমান করছেন এভাবে নিশ্চিত হবে নির্বাচন ফলাফল।
সিলেটে সিটি করপোরেশন নির্বাচনমাত্র ৪দিন বাকী। আ‘লীগ একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন মাঠে সরব। কিন্তু শুরু থেকেই বেকায়দায় পড়ে বিএনপি প্রার্থীতা নিয়ে। দলীয় প্রার্থী মনোনীত করে সদ্য বিদায়ী মেয়র আরিফুল হককে ঘোষনা করলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে নামেন দলের মহানগর সেক্রেটারী বদরুজ্জামান সেলিম। সেই সাথে ২০দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতও তাদের প্রার্থী ঘোষনা করে নগর আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে। অনেক নাটকীয়তার পর দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। কিন্তু সরে দাড়াননি জামায়াত প্রার্থী। বরং বিএনপির প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করেই নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় রয়েছেন তিনিও তার কর্মী সমর্থক।
কিন্তু এসবের পরও জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফের। তবে তিনি নির্বাচনী মাঠে নেতাকর্র্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করে বক্তব্য বিবৃতি প্রদান করেন। সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন গুম, গ্রেফতার ঘটনার। এর মধ্যে ২টি মামলায় দায়ের হয় কেন্দ্রিয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের উপর। এতে পরিস্থিতি ভীতিকর হয়ে উঠে। সাধারন নেতা কর্মী সমর্থক নিজদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠে। তাদের পরিবারের সদস্যরাও নিঘুর্ম রাত কাটান, উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। ঘর-ছাড়া হয়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি করেন দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা অংশ ছেড়ে নিজদের নিরাপত্তায় তটস্থ হয়ে পড়েন তারা। চলমান এ চিত্র ঘটে চলছে সাধারন ভোটাররা চোখের সামনে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ সলিম কাসিমী, সাবেক প্রচার সম্পাদক মাওলানা ছালেহ আহমদ শাহবাগী, মাওলানা এমাদ উদ্দিন সালিম প্রমুখ।
৩৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার কামরানের:
নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর মির্জাজাঙ্গালস্থ একটি অভিজাত হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ৩৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
ইশতেহার ঘোষণাকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের দুইবারের নির্বাচিত মেয়র কামরান আবেগপ্রবন হয়ে উঠেন। ইশতেহার ঘোষণার এক পর্যায়ে কান্নাভেজা কন্ঠে বলেন, এটিই হয়ত আমার শেষ নির্বাচন হতে পারে। সিলেটবাসী আমাকে বার বার ভোট দিয়েছেন। তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে শেষ করার মতো নয়। তবু আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এবারও সিলেটবাসী আমাকে নির্বাচিত করলে আমি তাদের ভালোবাসার সর্বোচ্চ প্রতিদানের চেষ্টা করবো। নাগরিক জীবন যাতে আরও সুন্দর ও স্বচ্ছন্দ হয়, আমি তাই করবো। সেই লক্ষে ঘোষিত ইশতেহারে কামরান উল্লেখ করেছেন তিনি নির্বাচিত হলে নগরীতে প্রতিষ্টা করবেন, বিশ্বমানের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, বিশ্বমানের হাসপাতল ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা, প্রতিমাসে ওয়ার্ড ভিত্তিক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ, যানজটমুক্ত সিলেট নগরীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন, ফুটপাত হকারমুক্ত করা ও উচ্ছেদকৃত হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ৪টি হাকার্স মার্কেট প্রতিষ্ঠা, দখল হওয়া ছড়া-খাল উদ্ধার ও খনন করা, সুরমা নদী ড্রেজিং করা, গ্যাস সংযোগ চালুর উদ্যোগ, শতভাগ বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা ও মহিলাদের জন্য আলাদা পরিবহণ, সৌন্দর্যবর্ধন, বর্তমান কারাগারের জায়গায় আধুনিক নগরপার্ক নির্মাণ, টেমসের আদলে সুরমার দুইপার আধুনিকায়ন, খেলার মাঠ, দিঘী, টিলা সুরক্ষা, অত্যাধুনিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ, খেলাধুলা ও চিত্ত বিনোদন, কারিগরি শিক্ষা ও উন্নত প্রশিক্ষন, শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও স্বাবলম্বি করে তুলতে উদ্যোগ নেয়া, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন, প্রবাসীদের হয়রানী রোধে ও বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা, সিলেট নগরকে গ্রীন সিটি হিসাবে গড়ে তোলা, প্রতিটি ওয়ার্ডের আবর্জনা যথাসময়ে অপসারণ করা, আইনশৃঙখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন ও প্রতিটি ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা, সিলেটকে প্রথম ডিজিটাল নগরী হিসাবে গড়ে তোলা, নতুন কর আরোপ না করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা, মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ও মাদকমুক্ত সিলেট গড়ে তুলবেন তিনি।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও আহমদ হোসেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমানসহ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।