Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিএসসিসির ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য তিন হাজার ৫৯৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বাজেট ঘোষণা করেন ডিএসসিসি’র মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এছাড়াও গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তিন হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছিল ডিএসসিসি। এর মধ্যে দুই হাজার ১৪ কোটি ৭৩১ লাখ টাকার বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এসময় সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীতে ৫৬টি সেবা সংস্থা রয়েছে। কিন্তু তাদের সহযোগিতার অভাবে সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছেন না। তিনি বলেন, কারণ ডিএসসিসি’র নির্ধারিত দায়িত্বের বাইরে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, যোগাযোগ, আইন-শৃঙ্খলা ইত্যাদি নানা সমস্যার সমাধান প্রত্যাশা করেন নগরবাসী। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মেয়রকে প্রধান করে সেবা সংস্থাসমূহের প্রধানদের নিয়ে সেবা কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় আনতে একটি প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়েছে। এরপরেও মেয়রের সভায় অনেকেই আসেন না।
মেয়র খোকন এবার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে আয়ের টার্গেট নির্ধারণ করেছেন ডিএসসিসির নিজস্ব উৎস থেকে ৯০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আর বাকী টাকা সরকারি ও বিদেশী দান, অনুদান ও প্রকল্প নির্ভর সাহায্য । যেমন- সরকারি মঞ্জুরী থোক ৭০ কোটি টাকা ও সরকারি বিশেষ মঞ্জুরী থোক ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, এবং সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ২ হাজার ৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা সাহায্য হিসেবে পাওয়ার টার্গেট রেখেছেন।
মেয়র তার বাজেটে নিজস্ব উৎস থেকে আয় নির্ধারণ করেছেন ৯০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এরমধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স (রেটস এন্ড ট্যাক্স) থেকে ৩৩০ কোটি, বাজার সালামী ৩০৫ কোটি টাকা, বাজার ভাড়া বাবদ ৩০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স ফি ৮০ কোটি টাকা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন কর ৫ কোটি টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, অস্থায়ী পশুরহাট ইজারা থেকে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, রাস্তা খনন ফি ২০ কোটি টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া থেকে ৫ কোটি টাকা, শিশু পার্ক থেকে ৫ কোটি টাকা, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সম্পত্তি হস্তান্তর কর থেকে ১০০ কোটি টাকা, ক্ষতিপূরণ (অকট্রয়) থেকে ১ কোটি এবং পেট্রোল পাম্প থেকে ২ কোটি টাকা আয় হবে।
মেয়র খোকন নতুন বাজেটে ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে উল্লেখ করেছেন, কর্মকর্তা- কর্মচারীদেও বেতন ভাতা বাবদ ৩৪০ কোটি টাকা, সড়ক ও ট্রফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৭৪২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ/উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ, জ্বালানী, পানি ও গ্যাস বাবদ ১০৯ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাবদ ২৬ কোটি টাকা, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ ৭৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ১৫ কোটি টাকা, নতুন প্রকল্প বৃদ্ধাশ্রম খাতে ৩ কোটি টাকা, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয় বাবদ ৫ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বাবদ ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ফিস বাবদ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
মেয়র বলেন, ব্যয়ের খাতের মধ্যে আরো রয়েছে কবরস্থান/শশ্মানঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়ন খাতে ১৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ১৩৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বাবদ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ১৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ বাবদ ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ১২১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, বাস্তবায়িত প্রকল্পের বকেয়া ম্যাচিং ফান্ড বাবদ ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, নতুন বাজার নির্মাণ বাবদ ২০০ কোটি টাকা, জবাইখানা নির্মাণ বাবদ ৬৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিবাস নির্মাণ বাবদ ৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মাতৃসদন খাতে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিশেষ উদ্যোগ খাতে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দ রেখেছেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মেয়র খোকন বলেন, সবুজ ঢাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই নগরীর অনেক সমস্যা থাকবে না। তিনি বলেন, পুরো নগরীতে এলইডি বাতি স্থাপ করা হচ্ছে। যাতে ছিনতাই, রাহাজানি, সন্ত্রাসীসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হতে না পারে। এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৯৮টি এলইডি বাতি স্থাপন করা হয়েছে। নবসংযুক্ত ৮টি ইউনিয়নেও এলইডি বাতি স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মেয়র বলেন, বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের মাধ্যমেই নাগরিকদের ভিতর অনেকেই শেষ বয়সে এসে পরিবার কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে অথবা পরিবার-পরিজনহীন নিঃস্ব অবস্থায় আশ্রয়স্থল হারিয়ে পথে-ঘাটে, রেল স্টেশনসহ নানা স্থানে মানবেতরভাবে জীবন-যাপন করতে বাধ্য হন। এটি খুবই হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পশী। এ বিষয়টি উপলব্ধী করে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র বৃদ্ধদের জন্য অস্থায়ীভাবে ১টি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের পরিকল্পণা গ্রহণ করা হয়েছে।
পানিবদ্ধতা দূরীকরণে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একসময় শান্তিনগর এলাকায় হাটু সমান পানিবদ্ধতা হতো। এলাকাবাসী অবর্ননীয় কষ্ট ভোগ করতেন। এ অবস্থা নিরসনে আমরা শান্তিনগরে ড্রেনেজ নির্মাণে একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করি। এ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর এখন শান্তিনগর এলাকায় কোন পানিবদ্ধতা হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ