Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংস্কারের একদিন পরই বেহাল

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কটি দেশের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। পুরো বছরজুড়ে সড়কটিতে সংস্কার হলেও কিছুতেই দুর্ভোগ কমছেনা। বছরের পুরো সময়জুড়েই থাকে খানাখন্দ। পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কটিতে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন সড়কটির একই স্থানে নিয়মিত সংস্কারকাজ হলেও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত ২০ জুলাই সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটির ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সিলেটগামী সড়কের মুখে ইট-বালু ফেলে বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দিলেও ২১ জুলাই বিকালে সড়কটি আবারও সেই চিরচেনা রূপে ফিরে গেছে। কিছুদূর পর পর খানাখন্দ। উঁচু আর নিচুতে হেলেদুলে চলছে গাড়ি।
সংস্কার কাজ শেষ করে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আবারো ওই একই স্থানে খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝেও তীব্র ক্ষোভ। প্রায় এক বছরেরও বেশী সময় এই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের ৪২ কিলোমিটার অংশের নানাস্থানে অসংখ্য খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই কোথাও না কোথাও বিকল হচ্ছে যানবাহন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। অভিযোগ রয়েছে, কাজের বরাদ্দের অধিকাংশ অর্থ লুটেপুটে লোক দেখানো সংস্কার করা হচ্ছে। আর এতে বছরজুড়ে ব্যস্ততম মহাসড়কটিতে দুর্ভোগ লেগেই আছে।
সরেজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে দেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুরসহ দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলের সাথে সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিং, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে যাত্রী ও মালবাহী অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়কটিতে গত এক বছর ধরে কোন সংস্কার কাজ নেই। মাঝে মাঝে খানা-খন্দকে পাথর উঠে যাওয়া স্থানগুলোতে ইট, বালু ফেলে বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেয়। কাজের মান ভালো না হওয়ায় সংস্কারের ২/৩ দিন পরেই আবারো খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহনের যাত্রী-চালকদের দুর্ভোগ প্রতিদিনই বাড়ছে। সম্প্রতি কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লা অংশের ময়নামতি সেনানিবাসসহ রামপাল, সাহেবের বাজার, দেবপুর, রামপুর, কংশনগর, জাফরগঞ্জ, চরবাকর, দেবীদ্বার, কোম্পানীগঞ্জ এলাকা সংস্কারে হাত দেয়। অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারীর অভাবে ঠিকাদাররা নামমাত্র কাজ করছে। এতে কাজের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে সড়কের চিত্র পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। জনসাধারন ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ কিছুতেই কমছেনা। মাঝে কাজের নামে অনিয়ম হওয়ায় সরকারের বিপুল অংকের টাকা লুটপাটসহ উন্নয়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এই যখন অবস্থা তখন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সেনানিবাস এলাকায় সংস্কার কাজের একদিনের কিছু বেশী সময়ে আবারো খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় সাধারন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই সেনানিবাস এলাকায় সিলেটগামী সড়কের প্রবেশ পথে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আর বড় বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়ে প্রায়ই যানবাহন বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। এছাড়াও সড়ক বিভাগের অধীন মহাসড়কের উপর অগনিত লেগুণা স্ট্যান্ডসহ সড়কের পাশে অসংখ্য ভাসমান দোকান চালু করায় সেনানিবাস এলাকায় প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে, পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলেও দুর্ভোগ হচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সম্প্রতি মহাসড়কটির সংস্কারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজ হাতে নিলেও ঠিকাদাররা নাম মাত্র কাজ করে এরই মাঝে মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা, রামপাল, সাহেবের বাজার, রামপুর, কংশনগর, জাফরগঞ্জ, চরবাকর, দেবীদ্বার, কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্নস্থানে আবারো ছোট ছোট খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কাজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হালিমুর রহমান প্রথমে কোথায় এমন হয়েছে জানতে চান। পরে বলেন, আমরা বৃষ্টির জন্য ভালোভাবে কাজ করতে পারিনি। বৃষ্টি কমে এলে পুরোপুরিভাবে কাজ করে বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংস্কার মহাসড়ক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ