Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহাসড়ক ও আবাসিকে পশুর হাটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর না

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঈদুল আজহা উপলক্ষে মহাসড়কে, রেললাইনের ওপরে এবং আবাসিক এলাকায় কোনও পশুর হাট বসবে না। রাজধানীতে গরুর হাট বসবে ২২টি। যদি পরবর্তীতে গরুর হাট বৃদ্ধি পায় তাহলে হবে সর্বোচ্চ ২৯টি। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদুল আজহা ও ১৫আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং করার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এসব কথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ২২আগস্ট চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল আযহা পালিত হবে। এ উপলক্ষে প্রত্যেক গরুর হাটে পুলিশ ক্যাম্প এবং র‌্যাব ক্যাম্প থাকবে। হাটগুলো সিসিটিভির আওতায় থাকবে। যদি কেউ অনেক বেশি টাকা নিয়ে চলাচলে নিরাপদ বোধ না করেন সেজন্য হাটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানি স্কোয়াড টিম থাকবে। জাল টাকা শনাক্ত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ডিএমপি জাল নোট শনাক্তকরণের মেশিন বসাবে।
তিনি আরো বলেন, এবার পশুর হাটের খাজনা মেইন গেইটে টাঙিয়ে রাখতে হবে। কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা যাবে না। গরুর হাটের সীমানার বাইরে কোনও হাট বসবে না। যানজট নিরসনে মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। তিনি আরো বলেন, পশুবাহী যানবাহন কোনও হাটে যাবে সেটা ব্যানারে ট্রাকের সামনে টাঙিয়ে রাখতে হবে। তাহলে কেউ জোর করে গাড়ি থামিয়ে অন্য হাটে নিতে পারবে না। গরু মোটাতাজা করার ওষুধ সম্পর্কে পশুসম্পদ মন্ত্রণালয় সিটি করপোরেশনকে তালিকা দেবে। এ ধরনের ওষুধ যেন হাটে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা থাকবে। চামড়া পাচার রোধে কঠোর অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোনওভাবেই যেন চামড়া পাচার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঈদুল আযহার সময় যারা ঢাকা ছেড়ে যাবে তাদের জন্য বিভিন্ন স্ট্যান্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাওনা যথাসময়ে মিটিয়ে দেয়া হবে এবং প্রত্যেক শ্রমিককে পালা করে ছুটি দিতে দিবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, ৭টা ৩০ মিনিটে বনানী এবং সকাল সাড়ে ১০টায় শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশে কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করা হবে। এসব কিছু যেন সুন্দরভাবে হয় সেজন্য রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং রাজধানীর বাইরের কর্মসূচি চলাকালে এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) এবং পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
জঙ্গিবাদের ন্যায় মাদককেও নির্মূল করা হবে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে মাদকসেবীদের কোন ঠাই হবে না। জঙ্গিবাদের ন্যায় মাদককেও পুরোপুরি নির্মূল করা হবে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে মাদকবিরোধী যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীটির নির্মিত মাদকবিরোধী বিজ্ঞাপন (টিভিসি) ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ প্রচারণা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ মাদক প্রতিরোধে কক্সবাজার অঞ্চলে দুইমাসের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পেশ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে, তখনই এদেশে জঙ্গিবাদী অপতৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু তারা মাথাচড়া দিয়ে দাড়ানোর আগেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঐক্যবদ্ধভাবে তাদেরকে শক্তভাবে দমন করেছে। এবার জঙ্গিবাদের ন্যায় মাদককেও নির্মূল করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ছিল ঠুটো জগন্নাথ। সেখানে জনবল ও শক্তি বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটির আমুল পরিবর্তন করা হয়েছে। শুধু মাদকবিরোধী অভিযান চালালেই হবে না মাদকমুক্ত করার প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে মাদকসেবীদের নিরাময় ও পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করেছে তাদের অনেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। তবে আমরা কাউকে মারছি না। অনেক তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গেলে তারা অস্ত্রের ব্যবহার করে। যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাভেদ পাটোয়ারী বলেন, মাদক শুধুমাত্র ব্যাধি নয় এটি একটি সামাজিক সমস্যা। শুধু অভিযান নয়, মাদকবিরোধী প্রচারণা ও জনসম্পৃক্ততা আরও বেশি দরকার। সব পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।
র‌্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে কক্সবাজারে দুই মাসের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কক্সবাজারে মাত্র ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করে। অথচ এই এখানে প্রতিদিন কোটি টাকার মাদকের লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মাদকের চোরাচালান কমে আসবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ