Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রংপুরে বোরখা পরে ছাত্রীনিবাসে ঢুকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণে সহায়তা করায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রংপুর থেকে ষ্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৮, ৫:৩৮ পিএম

বোরখা পরে ছাত্রীনিবাসে ঢুকে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগে তাজকীর হোসেন (৩২) এবং দুলালী আকতার (২৮) নামে দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন রংপুরের আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন টাইব্যুনাল-১ এর বিজ্ঞ বিচারক মোঃ যাবিদ হোসেন এ এ দন্ডাদেশ দেন।
অভিযুক্ত তাজকীর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মাদারপুর খিয়ারছড়া এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে এবং দুলালী একই এলাকার খিয়াচড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর লালবাগ খামারপাড়া এলাকাস্থ শাকিব টাওয়ারে একটি ছাত্রী নিবাসে থেকে রংপুর সরকারী কলেজে বাংলা তৃতীয়বর্ষে পড়ালেখা করতেন দুলালী আকতার। কারমাইকেল কলেজে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র তাজকীর হোসেনকে পছন্দ করতেন দুলালী। কিন্তু তাজকীর হোসেন দুলালীর বান্ধবী কারমাইকেল কলেজের বাংলা তৃতীয় বর্ষের নির্যাতিত ওই ছাত্রীর কাছে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরবর্তীতে তাজকীর দুলালীর ওই বান্ধবীকে ধর্ষণে সহায়তার শর্তে দুলালীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে রাজী হয়। সে মোতাবেক পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের ভুয়া জন্মদিন পালনের কথা বলে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে শীতকালীন ছুটি থাকায় ২১ ডিসেম্বর দুপুরে দুলালী তার বান্ধবীকে তার কক্ষে ডেকে আনেন। ঐদিন ছাত্রীনিবাসে দুলালী ছাড়া আর কেউ ছিল না। দুলালীর বান্ধবী আসার কিছুক্ষণ পর সেখানে বোরখা পরে ছাত্রীর ছদ্মবেশে আসেন কারমাইকেল কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স এর ছাত্র তাজকীর হোসেন।
দুজনকে কক্ষে রেখে দুলালী বাইরে বেরিয়ে এসে দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পাহারা দেয়। এ সুযোগে তাজকীর ওড়না দিয়ে ছাত্রীটির মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন এবং গোপনে ওই দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে রাখে। ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও চিত্র বাজারে ছড়িয়ে দেয়ারও ভয় দেখায় তাজকীর।
লজ্জা এবং ভয়ে ধর্ষিতা বিষয়টি কাউকে না জানালে পরে তাজকীর আবারও তাকে ধর্ষণের প্রস্তাব দিয়ে হুমকি দেয়। পরে বাধ্য হয়ে নির্যাতিতা ওই ছাত্রী রংপুর কোতোয়ালী থানায় তাজকীর ও দুলালীসহ ৪জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই নজরুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৭ মার্চ তাজকীর ও দুলালী আকতারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
দীর্ঘ ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার উভয়কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
রাস্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রফিক হাছনাইন এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডঃ আব্দুল হক প্রামাণিক। ## হালিম আনছারী, রংপুর। ১৯-০৭-১৮



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ