Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাপানে তৃতীয় দফা ভূমিকম্প, আরো ২০ জনের প্রাণহানি

দুর্গত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ৭০ হাজার লোক অন্যত্র স্থানান্তর

প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪৩ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০১৬

ইনকিলাব ডেস্ক : জাপানে ব্যাপক হতাহতের মধ্যেই ফের কয়েক দফা ভূমিকম্পে আরো ২০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯-এ দাঁড়িয়েছে। আরো বহু সংখ্যক ব্যক্তি ধসে যাওয়া ভবনের নিচে আটকে আছে বলে জানা গেছে। আতঙ্কিত অধিবাসীরা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ভূমিকম্পে একটি বাঁধ ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে কয়েক দফায় এসব ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুমামতো শহরের মাইশি এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিহীন রয়েছে এই অঞ্চল। ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে।
প্রথম দফা ভূমিকম্পে নয়জন নিহত হওয়ার এক দিনের মাথায় জাপানে আবার আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় রাত ১টা ২৫ মিনিটে এ ৭.৩ মাত্রার এই ভূমিকম্পের পর জারি করা হয় সুনামি সতর্কতা। তবে সেই সতর্কতা পরে আবার তুলে নেওয়া হয়। কয়েক দফার এসব ভূমিকম্পে ২০১১ সালের সুনামির পর বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাপান সরকার। নতুন করে প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও আহত কয়েক হাজারের মতো বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুমামতো প্রদেশের এই ভূমিকম্পের তীব্রতা বৃহস্পতিবারের আঘাতের চেয়ে বেশি বলে জানানো হয়েছে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমামতো শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। উৎপত্তিস্থলের মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কিয়েশু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই এলাকার মধ্যে রয়েছে সেন্দাই পারমাণবিক কেন্দ্র। গভীর রাতে এই বিপর্যয় ঘটায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা করা কঠিন বলে জানিয়েছেন রুপার্ট উইংফিল্ড। তিনি জানান, হাজার হাজার ভীত সন্ত্রস্ত মানুষকে দেখেছি খোলা আকাশের নিচে, রাস্তায় বা পার্কে জড়ো হয়ে আছে। পরপর ভূ-কম্পনের আঘাতে তারা ভীষণ বিপর্যস্ত। উইংফিল্ড বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চোখে দেখতে না পেলেও আমরা ভেঙ্গে পড়া বাড়িঘরের নিচে আটকা পড়া মানুষ জনের সাহায্যের আবেদন পাচ্ছি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। উদ্ধার তৎপরতাও শুরু হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর ইউএসজিএস এর তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার রাত ১টা ২৫ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। বিভিন্ন ভবনের বাসিন্দারা জিমনেশিয়াম ও হোটেল লবিতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায়নি, গতকাল শনিবারও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত আছে। কুমানাতো শহরের কর্মকর্তা তোমোইউকি তানাকা বলেন, প্রতি ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। ভূকম্পনপ্রবণ জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়াশিদা সুগা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকম্প মোকাবেলা করছি। প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আমরা সবাইকে বলেছি, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, এটি নিঃসন্দেহে ২০১১ সালের পর বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবারের এই ভূমিকম্প আঘাত হানার পর রাতভর অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়। এর ১০ মিনিট পরই দ্বিতীয় দফায় ৫.৭ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে। স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন, গতকাল শনিবারের রাতের ভূমিকম্পে বেশি কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে। রাস্তাঘাটও ভেঙে গেছে। জাপানের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে , কমপক্ষে ২ লক্ষ বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না আক্রান্ত এলাকায়। এপি, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ