পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় দু’শ হজ এজেন্সি সউদী থেকে হাজীদের বাড়ী ভাড়ার বারকোড নিয়ে দেশে ফিরতে পারেনি। এতে এসব হজযাত্রীদের হজ ফ্লাইটের টিকিট ক্রয় সম্ভব হয়নি। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী হজ এজেন্সি’র কাছ থেকে সউদী মুয়াল্লেম মিনা আরাফা’র ক্যাটারিং-এর খাবার বিল দ্বিতীয় বার কেটে নিচ্ছে। এতে এজেন্সিগুলো সউদী আরবে হজ কার্যক্রমের ব্যয় মেটাতে বিপাকে পড়েছে। ৭৫৬ রিয়ালের সার্ভিস চার্জের মুয়াল্লেমের কোটা শেষ হওয়ায় ৩ ক্যাটাগরির ১৫ শ’ রিয়াল পরিশোধ করতে ৫% ভ্যাটসহ জনপ্রতি ১৬শ’ রিয়াল থেকে ১৮০০ রিয়াল পরিশোধ করতে হিমসিম খাচ্ছে হজ এজেন্সি’র মুনাজ্জেমরা। মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশন কর্তৃপক্ষ কোনো কোনো বেসরকারী হজ এজেন্সি’র মক্কা-মদিনায় বাড়ী ভাড়ার রোডম্যাপ অনুমোদন দিতে অহেতুক বিলম্ব করায় হজযাত্রীদের মোফা ইস্যুর কাজ দারুণভাবে বিঘিত হচ্ছে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। গতকাল রোববার হজ ফ্লাইটের দ্বিতীয় দিনে বিমানের সাতটি হজ ফ্লাইট ও সাউদিয়া’র সাতটি হজ ফ্লাইট যোগে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার যাত্রী সউদী আরবে গিয়েছেন। ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গতকাল প্রায় ১৩ হাজার হজ ভিসা ইস্যু করেছে। হজযাত্রী পরিবহনের কোনো প্রকার সমস্য নেই বলে পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম ও হাবের মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানিয়েছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গতকাল পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার হজ টিকিট অবিক্রিত রয়েছে। সউদী সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে চলতি হজ মৌসুমে বিমানকে হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত আরো কোনো প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে না। এতে বিমান কর্তৃপক্ষ অবিক্রিত হজ টিকিট নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছে। মক্কা-মদিনায় হাজীদের বাড়ী ভাড়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করে বারকোড নিয়ে দেশে ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় বিমানের হজ টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। হজ অফিসের পরিচালক হজ মো: সাইফুল ইসলাম গতকাল তার দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেছেন, বিমান ও সাউদিয়া এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের প্রায় ৯০ হাজার হজ টিকিট বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার হজ ভিসা ইস্যু করেছে। হজ ভিসা ও হজ টিকিট বিক্রি দু’টো সমানতালেই এগুচ্ছে। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও হাবের ইসি’র অন্যতম সদস্য আলহাজ ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের গতকাল মক্কা থেকে দেশে ফিরে ইনকিলাবকে বলেন, নানা জটিলতার দরুণ প্রায় দ’ুশ হজ এজেন্সি’র মুনাজ্জেম মক্কা-মদিনায় হজযাত্রীদের বাড়ী ভাড়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করে বারকোড নিয়ে দেশে ফিরতে পারেনি। তিনি বলেন, ৭৫৬ রিয়ালের ৪ নং ক্যাটাগরির মুয়াল্লেম কোটা শেষ হওয়ায় ১৫০০ রিয়ালের ৩ নং ক্যাটাগরির মুয়াল্লেম নিচ্ছে এজেন্সিগুলো। এছাড়া গুটি কয়েক সউদী মুয়াল্লেম ১৫০০ রিয়ালের অতিরিক্ত আরো ২/৩শ’ রিয়াল দাবী করছে। তিনি বলেন, সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী মুয়াল্লেমের নির্ধারিত সার্ভিস চার্জের অতিরিক্ত রিয়াল নেয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এ ব্যাপারে তদন্ত টীম গঠন করেছেন। তিনি এ ধরনের জুলুম বন্ধের উদ্যোগ নেয়ায় সউদী হজমন্ত্রীকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়েছেন। গতকাল মক্কা থেকে হাব সিলেট জোনের সভাপতি খাজা মঈন উদ্দিন জালালাবাদী ইনকিলাবকে জানান, ১৫০০ রিয়ালের ৬২ নম্বর মুয়াল্লেমকে চুক্তি করতে গিয়ে অতিরিক্ত আরো ৩০০ রিয়াল করে দিতে হয়েছে। ১৫০০ রিয়ালের মুয়াল্লেম-এর সার্ভিস চার্জ সর্বমোট ১৮০০ রিয়াল করে নিতে হচ্ছে। ৩ নং ক্যাটাগরির মুয়াল্লেমকে সার্ভিস চার্জ ১৫০০ রিয়াল –এর সাথে অতিরিক্ত জনপ্রতি আরো ৩০০ রিয়াল জোগার করতে গিয়ে এজেন্সিগুলো বিপাকে পড়েছে। মুয়াল্লেমের দাবীকৃত অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জের লাখ লাখ রিয়াল জোগার করতে না পারায় এজেন্সিগুলোর বাড়ী ভাড়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে। মক্কা থেকে দেশে ফিরে হাব ওলামা সোসাইটি’র অর্থ সচিব মাওলানা জাহিদ আলম বলেন, সউদী মুয়াল্লেমগুলোর অতিরিক্ত রিয়াল পরিশোধের দাবী অনেক এজেন্সি পূরণ করতে না পেরে দ্বারে দ্বারে ধরর্ণা দিচ্ছে। তিনি বলেন, হাজীদের মিনা-আরাফার খাবারের ক্যাটারিংয়ের ১৪৭ রিয়াল করে আইবিএএন-এর মাধ্যমে মুয়াল্লেমের কাছে জমা দেয়ার পরেও দ্বিতীয় বার ক্যাটারিং-এর অর্থ জোরপূর্বক আদায় করছে মুয়াল্লেমরা। বাংলাদেশ এয়ার ট্রাভেলসের ২৪৬ জন হজযাত্রী’র প্রথম দফায় ক্যাটারিং-এর খাবারের ৩৬হাজার ১২০ রিয়াল মুয়াল্লেমের কাছে জমা দেয়া হয়। পরবর্তীতে উল্লেখিত হজযাত্রীর জন্য দ্বিতীয় বার ক্যাটারিং-এর ৩৬হাজার ১৬২ রিয়াল পরিশোধ করতে হয়েছে। প্রথম কিস্তির ক্যাটারিং-এর জমাকৃত আদৌ ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা’কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। তিনি এক কিস্তির ক্যাটারিংয়ের অর্থ দ্রæত এজেন্সিকে ফেরত দেয়ার জন্য সউদী কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানান। তিনি বলেন, মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশন কর্তৃপক্ষ এসব জটিলতা নিরসনে এবং মক্কা-মদিনার বাড়ী ভাড়ার রোডম্যাপ দ্রুত অনুমোদন দিতে সহযোগিতা করছে না। ফলে হজযাত্রীদের মোফা ইস্যুতে অহেতুক বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে, হাজী ক্যাম্পে হজযাত্রীদের খাবারের জন্য তিনটি ক্যান্টিন চালু করা হলেও খাবারের মান যথাযথ নয় বলে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শন মো: সাইফুল ইসলাম তার নোটিশে উল্লেখ করেছেন। গতকাল হাজী ক্যাম্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ক্যান্টিন তিনটি পরিচালক হজের নিদের্শনা অনুযায়ী খাবারের কোনো প্রকার মূল্য তালিক এখনো টাঙ্গায়নি। ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের কোনো মূল্য তালিকা না রাখায় প্রতিনিয়ত হজযাত্রীদের সাথে ক্যান্টিনের ম্যানেজারের বচসা হচ্ছে। ক্যান্টিনগুলোতে ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংসের সাথে রান্না করা খাবার রাখা হচ্ছে। ১ নং ক্যান্টিন পূর্ণা এন্টারপ্রাইজ মালিক বিমানের স্টাফ ক্যান্টিনের স্বত্বাধিকারী আব্দুল বারেককে পাওয়া যায়নি। তার ম্যানেজার মনিরুজ্জামান খাবারের মূল্য তালিকা প্রসঙ্গে বলেন, দুই এক দিনের মধ্যেই মূল্য তালিকা ক্যান্টিনের সামনে টানিয়ে দেয়া হবে। ৩ নং ক্যান্টিনের মালিক আলেফ মিয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা খাবারের মূল্য তালিকা চাইতে কম দামেই হজযাত্রীদের কাছে খাবার বিক্রি করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।