পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কুনমিং আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের ইস্পাতশিল্পে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। এ অর্থ ব্যয়ে তারা বছরে ২০ লাখ টন উৎপাদনক্ষমতার একটি স্টিল মিল প্রতিষ্ঠা করবে। এ জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কুনমিং স্টিলকে প্রায় এক হাজার একর জমি ইজারা দিচ্ছে।
বিশাল এই বিনিয়োগ চূড়ান্ত করতে কুনমিং স্টিলের একটি প্রতিনিধিদলের আজ সোমবার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। পাঁচ দিনের সফরে তারা বেজাসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তারা এ বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষ করেছে। বিনিয়োগটি হবে চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে।
কুনমিং স্টিল চীনের ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে তাদের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার সমান। বছরে তাদের রাজস্ব আয় ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রস্তাবিত প্রকল্পে কুনমিং স্টিল ২০ লাখ টন ক্ষমতার ইস্পাত কারখানার পাশাপাশি একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, সিমেন্ট ও নির্মাণ উপকরণ এবং যন্ত্র উৎপাদন কারখানা ইত্যাদি তৈরি করতে চায়।
কুনমিং স্টিলের এ বিনিয়োগে বাংলাদেশি অংশীদার হিসেবে থাকছে ১৭টি কোম্পানির জোট স্টার কনসোর্টিয়াম। এ কনসোর্টিয়ামের চেয়ারম্যান নিটল নিলয় গ্রুপের আবদুল মাতলুব আহমাদ। এ ছাড়া এ কনসোর্টিয়ামের পরিচালক হিসেবে বিএসআরএম গ্রুপ অব কোম্পানিজের আলীহোসেন আকবরআলী, ইউনিক গ্রুপের মোহাম্মদ নূর আলী, মিডকোবিডির আশরাফুল হক চৌধুরী, পেডরোলো এন কে লিমিডেটের মোহাম্মদ নাদের খান, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের নুরুল আকতার, ইমপ্রেস গ্রুপের জহিরুদ্দিন মাহমুদ, জিপিএইচ গ্রুপের জাহাঙ্গীর আলম, ইনোভেঞ্চার প্রাইভেট লিমিটেডের চৌধুরী নাফিজ সরাফত, এম আলম গ্রুপের মাহবুবুল আলম, দেশ এনার্জির নাভিদুল হক প্রমুখ রয়েছেন। কুনমিং স্টিল বিনিয়োগের জন্য জমি পেতে গত নভেম্বরে বেজার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করে। এরপর তারা সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শুরু করে। জানতে চাইলে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, কুনমিং স্টিল মিরসরাই অথবা মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি চেয়েছে। আমরা মিরসরাইয়ে দেওয়ার চিন্তা করছি। কারণ, সেখানে জমি আগে প্রস্তুত হবে।’ তিনি বলেন, ইস্পাত খাতে এটি একটি ভালো বিনিয়োগ হবে।
উল্লেখ্য, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর আয়তন দাঁড়াবে প্রায় ৩০ হাজার একর। ইতিমধ্যে সেখানে কিছু প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিয়েছে বেজা। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। কুনমিং স্টিল বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনান ইয়ংলি ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান উ ইউকুনের আজ সোমবার বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। বেজা জানায়, এ সফরে তাদের সঙ্গে প্রকল্পের অগ্রগতি, কাঠামোগত বিনিয়োগ চুক্তি, চুক্তির আইনি মর্যাদা, বাংলাদেশি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে অংশীদারি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, জেটি নির্মাণের অনুমোদন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে। কুনমিং স্টিল তাদের কারখানার কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করে উৎপাদনে যেতে চায় বলে জানিয়েছে বেজা। বর্তমানে দেশের ছোট-বড় আড়াই শ মিলের ইস্পাত পণ্য উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ৯০ লাখ টন। বিপরীতে বছরে চাহিদা ৬০ লাখ টনের মতো। কুনমিং স্টিল ২০ লাখ টন ক্ষমতা নিয়ে উৎপাদনে এলে দেশের ইস্পাত খাতের সক্ষমতা আরও বাড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।