Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রশ্নে ক্ষিপ্ত মিয়ানমার

বিজিবি-বিজিপি সীমান্ত সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

 যৌথ উদ্যোগে মাইন অপসারণ
 মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা হস্তান্তর


রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও সঙ্কট নিরসনে অসহযোগিতার পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। বিজিপি বলছে, বিজিবি ও বিজিপির এবারের সম্মেলনের বিষয় সীমান্ত সমস্যা, রোহিঙ্গা ইস্যু নয়। বিজিপি আরও বলেন, মিয়ানমার সিকিউরিটি ফোর্স কখনো মাইন বা আইইডি ব্যবহার করে না। তারপরও সীমান্তে মাইন পাওয়া গেলে যৌথভাবে সেগুলো অপসারণ করা হবে। এছাড়া মিয়ানমারে পলাতক থাকা বাংলাদেশী মাদক ব্যবাসয়ীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে একটি তালিকা করে মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
গতকাল রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছে বিজিপি। গত ৯ জুলাই থেকে পিলখানায় শুরু হওয়া বিজিবি-বিজিপি’র উর্ধ্বতন প্রতিনিধিদের সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে যৌথ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার প্রতিনিধিদের পক্ষে দোভাষীর সহায়তায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। চোরাইপথে ইয়াবা প্রবেশ বন্ধে বিজিপির উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমার জানিয়েছে তারাও ইয়াবার আগ্রাসনে ভুক্তভোগী। ইয়াবাসহ যে কোনো মাদক চোরাচালানরোধে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে বিজিপি আশ্বাস দিয়েছে।
মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের পর বাংলাদেশ থেকে অনেক গডফাদার মিয়ানমারে আশ্রয় নিয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এমন মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা মিয়ানমারকে দেয়া হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আমাদের (বিজিবি-বিজিপি) সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক ভালো। নিচের দিকে বিওপি লেভেলে যোগাযোগে ভাষাগত সমস্যা হলেও অফিসার লেভেলে দিন দিন সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। আমরা উভয়পক্ষ আন্তরিকতার মাধ্যমে সবকিছু সমাধানের চেষ্টা করছি।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মিয়ানমারের কর্মকর্তারা। প্রশ্ন শুনেই অবজেকশন বলে দাঁড়িয়ে যান বিজিপি প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য। তারা এই বিষয়ে কোনো কথা না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। একইসঙ্গে প্রশ্নটি আউট অব এজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমান।
আনিছুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি অনেক বড়। এটা নিয়ে দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ কথা বলছে। আমাদের এই সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বরং সীমান্তে নিরাপত্তা ও অবৈধ গমনাগমনের বিষয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারের নাগরিকদের সীমান্ত অতিক্রমসহ সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ ধরনের কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মিয়ানমারের তাদের মনোভাব ব্যক্ত করতে গিয়ে বলে, মিয়ানমার এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা বন্ধে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। সীমান্তে মাদক, অস্ত্র, নারী ও শিশু পাচারসহ সব ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সমন্বিত যৌথ টহল, সীমান্তে নজরদারি ও অন্যান্য তৎপরতা বৃদ্ধি, উভয় পক্ষের মাঠপর্যায়ের অধিনায়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় পরস্পরের মধ্যে তাৎক্ষণিক তথ্যবিনিময়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। এই সীমান্ত সম্মেলন ফলপ্রসূ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উভয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এছাড়া উভয় পক্ষ সীমান্তে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ