পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২ হাজার ৪২৫ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকা বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে নগর ভবনে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাজেট উপস্থাপন করেন। একই সাথে তিনি গেল অর্থবছরের (২০১৭-১৮) ৮৮৩ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট পেশ করেন। নতুন বাজেটে নিজস্ব উৎস থেকে মোট প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৬৯৪ কোটি ৯২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। সরকারি তরফে উন্নয়ন অনুদানসহ অন্যান্য উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে নিজস্ব উৎস থেকে আয় হয়েছে ৪০০ কোটি ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। উন্নয়ন অনুদানসহ অন্যান্য উৎস থেকে আয় হয়েছে ৪৮৩ কোটি টাকা ১৫ লাখ টাকা।
মেয়র হিসেবে এটি আ জ ম নাছির উদ্দীনের চতুর্থ বাজেট। এর আগের তিনটি বাজেটের বাস্তবায়নের হার ছিল যথাক্রমে ২৭, ২৯ ও ৩৭ শতাংশ। এবারের বাজেট বাস্তবায়নের হার আরও বাড়বে জানিয়ে মেয়র বলেন, বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচনের বছর হওয়ায় এসব প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন পাওয়া যাবে। এরফলে সরকারি উন্নয়ন বরাদ্দ এবং সেইসাথে বাজেট বাস্তবায়নের হারও বাড়বে। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির পুরোটাই আগামী দুই বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে মহানগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। নগরীকে শতভাগ আলোকায়নের আওতায় আনা হচ্ছে। সব সড়ক আগামী এক বছরের মধ্যে পাকা করা হবে। নির্বাচনের আগে তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানান মেয়র।
পানিবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এ সমস্যা নিরসনে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি মেগাপ্রকল্পের কাজ চলছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। তবে শুধুমাত্র এ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সমস্যার পুরোপুরি সমাধান সম্ভব নয়। প্রকল্পটি সিডিএ বাস্তবায়ন করলেও সিটি কর্পোরেশন পানিবদ্ধতা সঙ্কট নিরসনে খাল-নালা সংস্কারসহ নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নগরীতে ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ির ফলে জনদুর্ভোগ হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র এজন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ওয়াসা, পিডিবি, কর্ণফুলী গ্যাসসহ প্রায় সব সেবা সংস্থা নগরীতে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। এতে করে নগরবাসীর দুর্ভোগ হচ্ছে এবং এর দায় পড়ছে কর্পোরেশনের উপর। উন্নয়ন চাইলে এ দুর্ভোগ সহ্য করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মেয়র।
বকেয়া কর আদায় প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে চসিকের বিপুল বকেয়া কর রয়েছে। এসব কর আদায়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে তাগাদা দেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ব্যক্তি খাতে বকেয়া কর আদায়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে তিনি নিজেই যোগাযোগ করছেন বলে জানান। মেয়র তার দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতায় নগরীর উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি চসিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
নতুন বাজেটে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪২ কোটি ৮৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা ছিল ৩৪৩ কোটি ৯৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। নতুন বাজেটে উন্নয়ন অনুদান প্রত্যাশা করা হয়েছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। গেল অর্থবছরে ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকার বিপরীতে উন্নয়ন অনুদান পাওয়া গেছে মাত্র ৪৪২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বকেয়া কর আদায় খাতে আয় ধরা হয়েছে ১৯১ কোটি ৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ খাতে আয় হয়েছে ৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। নতুন বাজেটে হালকর ও অভিকর খাতে আয় ধরা হয়েছে ১৪৪ কোটি ৩৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। গেল অর্থবছরে এ খাতে আদায় হয়েছে ৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, সচিব মোঃ আবুল হোসেন, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, আবদুল মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাজেটের আর্থিক খাত উপস্থাপন করেন অর্থ ও স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শফিউল আলম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।