পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খানাখন্দে বেহাল আবস্থা রাজধানীর প্রায় সব সড়কেরই। চলাচলের অনুপযুক্ত বেশিরভাগ রাস্তা। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কগুলোতে কাদা, পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, তিতাস, ডেসকোসহ মিলে প্রতিদিনই কোনো না কোনো সড়ক, অলিগলি খুঁড়ছে। সাথে আছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড প্রকল্পের কাজ। আজ এক প্রতিষ্ঠান কাটছে তো কাল কাটছে অন্যটি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এমন সমন্বয়হীনতায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রাজধানীবাসী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা বা দুর্বলতার জন্যই নগরীর এই বেহাল দশা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ইনকিলাবকে বলেন, এ ধরণের কাজ করতে গেলে কিছু সমস্যাতো হতেই পারে। উন্নয়ন কাজ চলা সময়ের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র নগরবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন।
রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রীর নির্দেশে প্রায় এক মাস বিভিন্ন সড়ক মেরামতের কাজ বন্ধ ছিল। এর মধ্যে আগাম বর্ষার কারণে রাজধানীর সড়কগুলোর আবস্থা বেহাল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোশেনের বাসাবো, মাদারটেক, নন্দিপাড়া, বনশ্রী, মুগদাপাড়া, মায়া কানন ও মানিকনগরের অধিকাংশ সড়কে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন কাজ চলেছে। এতে এ সমস্ত এলাকার মূল সড়কসহ মহল্লার ভাঙাচোরা সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মাদারটেক টেম্পোস্ট্যান্ড, দক্ষিণ ও পশ্চিম মাদারটেক, পশ্চিম বাসাবো, পদ্মকানন, এলাহীবাগে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে ঢাকা ওয়াসা। এর মধ্যে দক্ষিণ মাদারটেক থেকে টেম্পোস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বেহাল। যে কারণে এ সড়কে লেগে থাকে তীব্র যানজট। বৃষ্টিতে ওই এলাকার সড়গুলো এখন ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। সড়কে কাঁদা পানিতে একাকার অবস্থা। অফিসগামী ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এ সড়কে ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উন্নয়ন খুঁড়াখুঁড়িতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মিরপুর ১২ নম্বর সেকশন থেকে ১১ নম্বর সেকশন পর্যন্ত সড়ক। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াকারী মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে। আবার ব্যস্ততম এ প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে অলি-গলি দিয়ে যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থাও নেই। সেখানে খুঁড়াখুড়ি না থাকলেও দীর্ঘ সময় মেরামত না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মিরপুর ১০ নম্বর বেনারসী পল্লীর কয়েকটি সড়কও বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
একই অবস্থা ৬ ও ৭ নম্বর সেকশনের। সেখানে বেশ কয়েকটি গলির রাস্তা ভেঙে আছে। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বেশকিছু গলির সড়কের অবস্থা নাজুক। স্থানীয় বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন জানান, মিরপুর-১০ ও বেনারসী পল্লীসহ এ এলাকার রাস্তাগুলোর সমস্যা অনেক পুরনো। মাঝে মাঝে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন এসে কাজ করলেও কয়েকদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এছাড়া বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। এছাড়া রাজধানীর মগবাজার, সেগুনবাগিচা, কামরাঙ্গীরচর, নন্দীপাড়া, বাসাবো, মাদারটেক, মানিকনগর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, গেন্ডারিয়া, পোস্তগোলা, লালবাগ, সূত্রাপুর, কোতোয়ালি, ওয়ারী, চকবাজার, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, কাফরুল, দক্ষিণখান এলাকাগুলোতেও বেশকিছু সড়কের বেহাল দশা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, নগর পারিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব ইনকিলাবকে বলেন, জুন মাসকেন্দ্রীক আমাদের জাতীয় বাজেট ঘোষণার কারণে অর্থ ছাড়ের বিষয়টি এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নতুন বাজেটের আগে পূর্ব অর্থবছরের কাজ সম্পন্ন করে অর্থ ছাড় করে নেয়ার একটি তাগাদা থাকে। তাই নিষেধ থাকার পরও বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও মেরামতের কাজ করতে হয় বলে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে বলা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দফতরের এ যুক্তির বাইরে যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় সেটি হলো, বর্তমানে রাজধানী শহরে যে সমস্ত উন্নয়ন কাজ চলছে তার সঠিক তত্ত্বাবধায়ন ও সমন্বয় হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের সঠিক তত্ত্বাবধায়ন ও সমন্বয় থাকলে সড়কের এই বেহল দশা হতো বলে আমার মনে হয় না।
এদিকে, শুষ্ক মৌসুমে রাজধানীর উন্নয়ন কাজের জন্য বিভিন্ন সেবদানকারী সংস্থাকে রাস্তা কাটার সীমিত পরিসরে অনুমোদন দেয়ার কথা থাকলেও এ জন্য রয়েছে কঠোর নিয়ম নীতি। এ নিয়ম নীতি তদারকি করার মূল দায়িত্বে রয়েছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন।
গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার চলমান উন্নয়ন কাজ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উন্নয়ন কাজের নেই কোন সুনির্দিষ্ট তদারকি। যে কারণে নগরবাসী পড়েছে চরম দুর্ভোগে।
রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন সড়ক ও অলি-গলিতে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এছাড়ও ভাঙাচুরা রাস্তা মেরামতের কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। যে কারণে রাজধানীর প্রায় সবগুলো রাস্তাই এখন খোঁড়াখুঁড়ির কবলে পড়েছে। প্রতি বছর ৩১ মে’র মধ্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয় থেকে থাকলেও তা কেউ মানেনি। এ বছরও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনই বিভিন্ন সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন স্স্থংাগুলো তাদের নিয়মিত রাস্তা কাটার কাজ ধরেছে।
এদিকে, অতিগুরুত্বপূর্ণ কোন কারণ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির অনুমোদন না দেয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া আছে। এছাড়া সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২৮দিনের মধ্যে উন্নয়ন কাজ শেষ করে পূনরায় রাস্তা মেরামত করে দেয়ার কথা থাকলেও উন্নয়ন কাজ শেষে মাসের পর মাস রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রেকৌশলী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, আমরা গত বছরের বর্ষায় নষ্ট হওয়া সড়ক মেরামতের কাজ শেষ করেছি মাত্র কয়েকদিন আগে। এখন নতুন বাজেট আসছে। এ বছর আগাম বর্ষার কারণে সড়কগুলোর আবস্থা আবার বেহাল হয়ে গেছে। ভাঙ্গাচোরা সড়ক মেরামতের নিয়মিত কাজও এখন করতে হচ্ছে আমাদেরকে। বৃষ্টির জন্য নিয়মিত কাজ করতে একটু সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। তবে নগরবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ভাঙ্গাচোরা সড়কগুলোতে আমরা যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছি।
সরেজমিন দেখা গেছে, খিলগাঁও ফ্লাইওভারের রর্্যাম্পের পার্শ্ববর্তী রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। কার্পেটিং না করায় সড়কে বিশাল বিশাল গর্ত হয়েছে। শাহজাহানপুর ভুমি অফিসের সামনের সড়কে কাজ চলছে গত প্রায় এক বছর ধরে। এ এলাকায় বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে প্রতিদিন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদেরকে। শাজাহানপুর অংশে আমতলা মসজিদ থেকে শিল্পী হোটেল পর্যন্ত সড়ক চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। সেখানে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে রিকশা, ম্যাক্সি, হিউম্যান হলার, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি অংশে সড়কের দুই পাশেই বেহাল অবস্থা। বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে ভরা। ফলে সেখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
মতিঝিলে মধুমিতা সিনেমা হলের পেছন থেকে বালুর মাঠ এলাকায় পুরো রাস্তা খুঁড়ে ফেলেছে ডিপিডিসি। এর আগে স্বামীবাগ, গোপীবাগ, কমলাপুর, জসীমউদ্দীন রোড এলাকায় রাস্তা খুঁড়েছে ঢাকা ওয়াসা। সেই রাস্তাগুলো এখনও বিধ্বস্ত অবস্থায়। চারদিকে খোঁড়াখুঁড়ি ও বিধ্বস্ত রাস্তার কারণে হাটখোলা মোড় থেকে রাজধানী সুপার মার্কেট পর্যন্ত রাস্তাটি ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে প্রায় অবরুদ্ধ থাকছে।
এদিকে, রাজধানীর আরও অনেক স্থানে নতুন করে রাস্তা খোঁড়ায় বা মেরামত না করায় চরম জনদুর্ভোগ হচ্ছে। সায়েদাবাদ শোধনাগারে পানির পাইপ বসাতে কল্যাণপুর ঢাকা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে শ্যামলী হয়ে ধানমন্ডি রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক খুঁড়েছে ওয়াসা।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান সৈয়দ কুদরাতুল্লাহ বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে সড়ক খননের অনুমোদন দেয় ওয়ানস্টপ সেল থেকে। তবে সেল থেকে এই দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়, খননের কারণে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।