Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুখ থুবড়ে পড়েছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সার্ভিস

সড়ক সংস্কার না হওয়ায় চারটি ফেরির সচল একটি

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

শরীয়তপুরে সড়ক সংস্কার না করায় চাঁদপুর-শরীয়তপুর রুটে প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল এখন বন্ধের পথে। এ কারণে ৪টি ফেরির পরিবর্তে চলছে মাত্র ১টি। যানবাহন পাড়াপাড়ে প্রতিদিন গড়ে সরকারের কোষাগারে জমা হতো প্রায় ৫ লাখ টাকা। এখন রাজস্ব নেমে এসেছে মাত্র ১ লাখ টাকায়। প্রতি মাসে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। গত ১ বছরেরও অধিক সময় এ বেহাল অবস্থা দুই জেলার সংযোগ সড়কের। তবে চাঁদপুর অংশের ১১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সাম্প্রতি চাঁদপুর হরিনা ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদপুর থেকে শরীয়তপুর পারাপারের জন্য কোনো গাড়ি ঘাটে অপেক্ষমান নেই। পাশবর্তী স্ট্যান্ডে কয়েকটি মালবাহী ট্রাক রয়েছে। তবে তারা শরীয়তপুর থেকে এসে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান। সন্ধ্যার পর চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ফেরিঘাট ত্যাগ করবে। ১ মাস আগেও চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌরুটে ৪টি ফেরি চলাচল করলেও এখন করে মাত্র একটি।
হরিণা ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন ও বাতেন বেপারি জানান, ‘এ ঘাটে মাল ও যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো কমে যাওয়ায় ব্যবসায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আগে একজন ব্যবসায়ী প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলে এখন বিক্রি করছে মাত্র ৪ শ’ থেকে ৫ শ’ টাকা। আবার অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দৈনিক হাজিরায় শ্রমিকের কাজ করছেন। সড়ক মেরামত না করলে সরকারের আয় যেমন কমবে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও বসে বসে লোকসান গুণতে হবে। শরীয়তপুর অংশের সড়ক খুব দ্রæত সংস্কার করার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম থেকে আসা গাড়ির চালক মিজানুর রহমান জানান, আগে এ ঘাটে পার হওয়ার জন্য সিরিয়াল লেগে থাকতো। ২ থেকে ৩ দিন অপেক্ষা করে পার হওয়ার জন্য সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু এখন ফেরি থাকলেও গাড়ি নেই। কারণ মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড় শরীয়তপুর অংশে সড়কের বেহাল দশা দেখলে কোনো যানবাহনই আসতে চায় না। যেসব যানবাহন আসছে, সেগুলো খুব ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে। আবার অনেকেই বড় বড় গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
বিআইডাব্লিউটিসি চাঁদপুর ফেরিঘাটের ম্যানেজার পারভেজ খান জানান, চাঁদপুর অংশে হরিণা ফেরিঘাট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হওয়ায় এ পাড়ে যানবাহন চলাচলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ওই পাড়ে শরীয়তপুর অংশে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অযোগ্য। এ কারণে যানবাহন সংখ্যা ৩ গুণের বেশি কমে গেছে। শরীয়তপুর অংশের সড়ক মেরামত না করলে যানবাহন চলাচল ক্রমাম্বয়ে হ্রাস পাবে।
তিনি জানান, চলতি বছরের ২২ থেকে ২৪ মার্চ ৩ দিন ৯১৮ টি যানবাহন চলাচল করে। যা থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১২ লাখ ১৭ হাজার ৯৪৫ টাকা। সড়কে ক্রমান্বয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলে জুন মাসের ২২ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত গাড়ি পারাপার হয়েছে ২৯৬টি। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯৯০ টাকা। এ অবস্থায় এ ফেরিঘাটে ৪টি ফেরি থাকলেও অলস বসিয়ে না রেখে ব্যস্ততম ফেরিঘাটের জন্য ৩টি ফেরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছি। আর একটি ফেরি দিয়েও শতভাগ সার্ভিস চলছে। কোনো গাড়ি ঘাটে অবস্থান করলে তাদেরকে দ্রুত পারাপারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চাঁদপুর সওজ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত জানান, চাঁদপুর অংশের ১১ কিলোমিটার সড়কের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শরীয়তপুর অংশের সংস্কার কাজ হলে চট্টগ্রামের সাথে শরীয়তপুর, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোরসহ আশপাশের জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেরি


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ