Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থাই গুহায় আটকেপড়াদের উদ্ধারে প্রাণ গেল ডুবুরির

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৮, ১২:৩৬ এএম


 ছিলেন সাইক্লিংয়ে খুবই উৎসাহী। ডুবুরি হিসেবে উদ্ধার কাজ চালানোর সময় জ্ঞান হারিয়ে তিনি মারা যান। ‘আমি বহু বছর তার খেলাধূলার সঙ্গী ছিলাম। সে ছিল একজন নিংস্বার্থ লোক যে অন্যের উপকার করতে ভালোবাসতো। তার কাজের ব্যাপারেও সে ছিল খুবই নিবেদিতপ্রাণ’। থাইল্যান্ডের চিয়াং রাইয়ে একটি গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোর এবং তাদের ফুটবল কোচকে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ হারানো একজন ডুবুরি - ৩৮ বছর বয়স্ক পেটি অফিসার সামান কুনানকে এভাবেই বর্ণনা করছিলেন তার সাবেক সহকর্মী এবং বন্ধুরা। সামানের কাজ ছিল পাহাড়ি সুড়ঙ্গের ভেতরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অক্সিজেন নিয়ে যাওয়া। ওই গুহা এবং সুড়ঙ্গ এতই দীর্ঘ যে, এ কাজটা পর্যায়ক্রমে করতে হয়।
সরবরাহ পৌঁছে দেবার পর থাম লুয়াং গুহা থেকে বেরুনোর পাঁচ ঘন্টার যাত্রার সময় তিনি জ্ঞান হারান। তার সঙ্গী ডুবুরি তাকে টেনে বের করে নিয়ে আসেন এবং তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি সফল হননি। মেরিন স্কুলে সামানের সতীর্থ ছিলেন পিও সায়েরি রুয়াংসিরি। তিনি সামানের সাথে নানা রকম দুঃসাহসিক খেলায় অংশ নিয়েছেন। তিনি বিবিসি থাই বিভাগকে বলছিলেন, ‘সামান ছিল একজন হাসিখুশি লোক। সে তার কাজের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস ছিল। আমি সাংবাদিক সম্মেলনের ঘন্টা দুয়েক আগে খবরটা জানতে পারি। আমি মর্মাহত এবং স্তম্ভিত। তিনি বলছিলেন, সামান বিবাহিত ছিলেন, তবে কোন সন্তান ছিল না’।
বিবিসির সাথে আরো কথা হয় লেফটেন্যান্ট চালোং প্যানপং-এর। তিনি একসময় সামানের প্রশিক্ষক ছিলেন। আমি যখন ফোনে খবরটা শুনলাম, স্তম্ভিত হয়ে গেলাম- লেফটেন্যান্ট প্যানপং বলছিলেন, ‘সে ছিল একজন পাকা অ্যাথলেট। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য’।
সে আমার ছাত্র ছিল। দু বছর নন-কমিশন্ড অফিসারদের ট্রেনিং কলেজে ছিল, তার পর গ্রাজুয়েশন শেষে মেরিন স্কুলে যোগ দেয়। সেখানেই আমার সাথে তার পরিচয় হয়। তার পই সে শিখলো কীভাবে ডুবুরির কাজ করতে হয়। এরপর সে নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনীতে কাজ করেছিল।
তবে তারপর সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আরো কয়েকজন বন্ধুর সাথে এয়ারপোর্টে কাজ করতে শুরু করে। তার বাড়ী উত্তরপূর্ব থাইল্যান্ডের ইসানে। দরিদ্র এলাকায়। সে তার বন্ধুদের খুব ভালোবাসতো, সবার খোঁজখবর নিতো। তার গায়ে শক্তি ছিল, আর যেসব খেলা কঠিন সেগুলোর প্রতিই তার আকর্ষণ ছিল - যেমন ট্রায়াথলন। তার মধ্যে ছিল দারুণ প্রাণশক্তি- বলছিলেন লেফটেন্যান্ট প্যানপং। খেলোয়াড় হিসেবে বেশ কিছু পদকও জিতেছিলেন সামান। তিনি চাকরি করতেন একটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, গুহায় ১৩ জনের আটকা পড়ার ঘটনার পর উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে যে ১৫ জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সামান। কারণ তারা সাবেক সৈনিক এবং এ ধরনের কাজ করার দক্ষতা তাদের ছিল। সেই কাজে গিয়েই মৃত্যু হলো তার। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ