পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারত বাংলাদেশে গরু পাঠানোতে কড়াকড়ি আরোপে সাময়িক অসুবিধা হলেও এটি শাপেবর হয়েছে। বাংলাদেশের খামারিরা পশু পালনে উৎসাহী হয়ে দেশকে আত্মনির্ভরশীল করে ফেলেছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত নয় বছরে গোশতের উৎপাদন বেড়ে হয়েছে সাত গুণ। প্রতি বছরই ধারাবাহিকভাবে গবাদিপশুর খামারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে আর এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে গোশত রফতানিরও আশা করছেন এই ব্যবসায় জড়িতরা। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট গোশত উৎপাদন ছিল ৭ দশমিক ১৫ মিলিয়ন টন। ২০০৮-৯ অর্থবছরের তুলনায় এটি ৬ দশমিক ০৭ মিলিয়ন টন বেশি। ওই বছর উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ০৮ মিলিয়ন টন।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের বার্ষিক চাহিদা পূরণের পর ১৯ হাজার টন উদ্বৃত্ত গোশতও ছিল। ফলে, গত তিন বছরে গোশতের চাহিদা মেটাতে জন্য গবাদি পশু আমদানির প্রয়োজন পরেনি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে গবাদি পশুর সংখ্যা পাঁচ কোটি ৪৭ লাখ ৪৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে এবং যা ২০০৮-৯ অর্থবছরে ছিল চার কোটি ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার। গত নয় বছরে দেশ ৫১ লাখ ৮৭ হাজার টি গবাদি পশু উৎপাদন হয়েছে।
পশুপালন এখন লাভজনক পেশা বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন এলাকা এমনকি রাজধানী লাগোয়া জনপদে গড়ে উঠেছে খামার। গবাদিপশুর খামার বলতে যদি কেউ কেবল দুধ উৎপাদনের খামার বোঝেন, তাহলে ভুল করবেন। এই খামারগুলোর একটি বড় অংশে পালা হয় ষাঁড়, যেগুলো মূলত কোরবানির সময় বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে দুধের ভালো দাম পাওয়া যায় আর শংকর জাতের গরুর দুধ দেয়ার পরিমাণ বেশি বলে জনপ্রিয় হচ্ছে গাভীর খামারও। সরকারি হিসাবে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ নতুন মানুষ কর্মসংস্থান হচ্ছে এই খাতে।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সভাপতি সাদিক এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন জানান, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে নিবন্ধিত খামারির সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার। আর নিবন্ধিনের বাইরে আছে আরও ১০ হাজার।
ইমরান বলেন, কয়েক বছর আগে ভারত গরু দেবে না বলে দেশে উদ্বেগ তৈরি হলেও এখন পরিস্থিতি পুরো উল্টো। গরু আসলেই বরং খামারিরা উদ্বেগে পড়বেন। কারণ, এতে তাদের পশুর দাম পড়ে যাবে।
‘এখন বরং বাহিরে থেকে গরু আসলে ছোট ও নতুন খামারিদের নিরুৎসাহিত করা হবে। কৃষক ও নতুন খামারিদের টিকিয়ে রাখতে ও নতুন নতুন খামারি সৃষ্টিতে দেশের বাহিরে থেকে গরু নিয়ে আসা বন্ধ করতে হবে।’
উৎপাদন আরো বাড়াতে জাত উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মনে করেন ইমরান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা সরকারের সাথে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছি। ভৌগলিক সীমারেখা ও আবহাওয়ার উপর গোশত ও দুধ উৎপাদন নির্ভর করে। তাই পরিকল্পিতভাবে এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। আমরা আশা করছি দু-এক বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও গোশত রপ্তানি করতে পারব।
জাত উন্নয়নের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আইনুল হক বলেন, ৪৮ জেলার অধীনে ১২৫ টি উপজেলায় গোশতের বিভিন্ন জাতের গরু উৎপাদনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রায় ৪৫ শতাংশ প্রজননক্ষম গরুকে প্রোগ্রামের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং মোট গবাদি পশুর ৫০ শতাংশ সংকর জাতে রূপান্তর করা সম্ভব হয়েছে।
‘কৃত্রিম প্রজনন কর্মসূচির অধীনে প্রতি শংকর গাভী এবং ফ্রিজিয়ান হাইব্রিড গাভী দৈনিক দুধ উৎপাদন যথাক্রমে ১৫ লিটার এবং ৪০ লিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ষাঁড়ের ওজন ৪০০ কেজি থেকে ৫০০ কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
ঢাকার সাভারে একটি কৃত্রিম প্রজনন পরীক্ষাগার ও বেল স্টেশন স্থাপন, রাজশাহীতে রাজবাড়ী হাট এলাকায় আরেকটি আঞ্চলিক কৃত্রিম প্রজনন পরীক্ষাগার ও বেল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান আইনুল।
এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দেশের ২২ টি জেলায় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, ৪৬১ টি উপ-কেন্দ্র এবং ৩৪৮৪ টি পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশ মোট দুই কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার গরু, ১৪ লাখ ৭৮ হাজার গবাদি পশু, দুই কোটি ৫৯ লাখ ৩১ হাজার ছাগল এবং ৩ লাখ ৪১ হাজার ভেড়া দেশে ছিল। যেখান থেকে দুধ উৎপাদন ছিল ৯ দশমিক ২৮ মিলিয়ন টন। যা ২০০৮-৯ অর্থবছরে ছিল অনেক কম। ২ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার গরু, ২ কোটি ২৪ লাখ ১ হাজার ছাগল, ২৮ লাখ ৭৭ হাজার মেষ এর বিপরীতে মাংস উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ০৮ মিলিয়ন টন এবং দুধ উৎপাদন ছিল ২ দশমিক ২৯ মিলিয়ন টন ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।