Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসছেন কারা

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎ সন্ধ্যায়

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ছাত্রলীগের কমিটি চূড়ান্ত, সবকিছু ঠিক থাকলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামের ঘোষণা আসতে পারে কয়েকদিনের মধ্যে। বিগত সময়ে কমিটি ঘোষণার আগে কয়েকজন নেতার নাম আলেচনায় আসলেও এবার তার ভিন্ন চিত্র। কেউই জানে না কে আসবেন নেতৃত্বে। নেতাকর্মীদের রুদ্ধশ্বাস এই অবস্থায় আজ রাতে গণভবনে পদ প্রত্যাশীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকের পর আজ অথবা দুই-একদিনের মধ্যে ঘোষণা হতে পারে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব। কে হবেন আগামী দিনের ছাত্রলীগের কাÐারী তা নিয়ে উত্তেজনার শেষ নেই।
এবারই প্রথম সম্মেলনের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা হয়নি। নেতৃত্ব বাছাই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা, জল্পনা-কল্পনা। কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে কথিত নেতা বানানোর সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্রলীগ কোন সিন্ডিকেটের হাতে থাকবে না। এছাড়া বিগত সময়ে একেকবার একেক অঞ্চলকে (যেমন- ফরিদপুর, উত্তরবঙ্গ, বরিশাল, চট্টগ্রাম) প্রধান্য দিয়ে নেতা বানানো হলেও এবার তা থাকবে কি না এ নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাও তাকিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের দিকে। সবার মাঝেই এবার ভিন্ন রকমের উত্তেজনা। বিগত সময়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেও কারা নেতৃত্বে আসছে তা আগেই প্রচার হয়ে যেত। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে ছাত্রলীগের কমিটির দেখভাল করছেন বিধায় এখন পর্যন্ত জানা যায়নি কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পদপ্রত্যাশীদের খোঁজখবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ নেতাদের তদবিরে যারা এগিয়ে আছেন তারা কি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে এগিয়ে রয়েছেন কিনা তা বলতে পারছে না কেউ। তাই কোন কোন নেতারা এগিয়ে আর কারা পিছিয়ে তা খোদ দলের নেতারাও জানেন না। সেজন্য ছাত্রলীগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের কমিটি নিজ হাতে দেখছেন। তিনি যাদের ভাল মনে করবেন তাদেরকেই নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন।
বর্তমান কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই সংগঠনটির ২৮তম জাতীয় সম্মেলনে তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর প্রায় ২ বছর ৯ মাস পর গত ১১ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ১২ মে দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটের পরিবর্তে সমঝোতার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরিফুর রহমান লিমনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুটি পদের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৩২৩টি। যারা ফরম সংগ্রহ করেছেন তাদের সকলকেই সন্ধ্যায় গণভবনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে সম্মেলনকে সামনে রেখে নিজেকে ত্যাগী ও আওয়ামী পরিবারের প্রমাণ করার প্রতিযোগিতা। এর সঙ্গে সমানতালে চলছে একে অন্যকে জামায়াত-শিবির, ছাত্রদলের কর্মী প্রমাণ করার কাঁদা ছোড়াছুড়ি। এর মধ্যেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজন, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি আদিত্য নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, প্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লালন, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ আরিফিন, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক হোসাইন সাদ্দাম, উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান আল ইমরান, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, সহ সম্পাদক খাদিমুল বাসার জয়, কর্মসূচী ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল পাঠান সেতু, উপ-স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার বৈদ্য।
নতুন নেতৃত্বে বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ইনকিলাবকে বলেন, যারা যোগ্য, মেধাবী, নিয়মিত ছাত্র, ভালো সংগঠক, যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবে, শেখ হাসিনার ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং আগামী দিনের যে কোনো দুঃসময় মোকাবেলা করতে পারে এমন যোগ্যতা সম্পন্নরা নেতৃত্বে আসবে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জানান, দেশরতœ শেখ হাসিনাই ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক। ছাত্রলীগ তার নির্দেশেই পরিচালিত হয়। তিনিই নতুন কমিটির ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তাদের ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার তাদের সঙ্গে কথা বলার পর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাশাপাশি ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিও ঘোষণা হবে।



 

Show all comments
  • তপন ৪ জুলাই, ২০১৮, ৪:৩৩ এএম says : 0
    যারা যোগ্য, মেধাবী, নিয়মিত ছাত্র, ভালো সংগঠক, যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবে, শেখ হাসিনার ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং আগামী দিনের যে কোনো দুঃসময় মোকাবেলা করতে পারে এমন যোগ্যতা সম্পন্নরা নেতৃত্বে আসবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তমা ৪ জুলাই, ২০১৮, ৪:৩৪ এএম says : 0
    প্রকৃত ছাত্রদের হাতেই নেতৃত্ব দেয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ