পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার গতকাল দুই বছর পূর্তি হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল থেকে ফুল দিয়ে হোলি আর্টিজান হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও দেশি-বিদেশি নানা পেশার মানুষ। এদিকে চলতি সপ্তাহেই হোলি আর্টিজান হামলা মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। এছাড়া র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জঙ্গি নির্মূলে আত্মতুষ্টিতে ভোগার বিষয়ে বিরত থাকতে বলেন।
গতকাল বেলা ১০টার দিকে হোলি আর্টিজান ভবনের ফটক খুলে দিলে শোকার্ত স্বজনদের পাশাপাশি দেশী-বিদেশী ক’টনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা এবং বিএনপি›র পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) রুহুল আলম চৌধুরী, গুলশান থানা বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক দীন ইসলাম ও চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।
বেলা ১১টার দিকে নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হোলি আর্টিজানে আসেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। এ সময় তিনি নিহতদের স্বরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরবর্তীতে জঙ্গিদের হামলায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার স্মৃতির স্বরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ উদ্বোধন করেন।
ভাস্কর্য উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হোলি আর্টিজান হামলা ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্র রুখতে গিয়ে আমাদের দুই পুলিশ অফিসার রবিউল করীম ও সালাউদ্দিন আহমেদ শহীদ হয়েছেন।
তিনি বলেন, হেলি আর্টিজান হামলা মামলার তদন্তকাজ সম্পন্ন শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের মেধাবী সদস্যরা অনেক পরিশ্রম করে এই তদন্তকার্য সম্পন্ন করেছেন। ইতোমধ্যে হামলায় জড়িত অনেকে বন্ধুকযুদ্ধে মারা গেছে। অভিযোগপত্র দেওয়া হলে অন্যা জড়িতরাও শস্তি পাবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, হোলি আর্টিজান হামলার দুই বছর পরেও বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি নির্মূলের বিষয়টি নির্দ্বিাধায় বলা যায় না। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের জঙ্গি হামলা হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা জঙ্গি নেটওয়ার্ক ও তাদের আস্তানাগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।
‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যটি কেন হোলি আর্টিজান বেকারির সীমানার ভেতরে নির্মাণ করা হয়নি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, বেকারিটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। মালিকের সঙ্গে জমি দেওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু গুলশানের জমির অনেক দাম হওয়ায় তিনি রাজী হননি। যার কারণে গুলশানের আজাদ মসজিদ সংলগ্ন ১১৫ নম্বর সড়কে ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম পুলিশের দুই কর্মকর্তার আত্মত্যাগের কথা জানতে পারবে।
কমিশনার আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের জঙ্গি হামলা হয়। তবে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনগণের চেষ্টায় তাদের অনেকটা দমন করেছি। দেশে ছোট-বড় ৭০টি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। জঙ্গি নির্মূলে গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট দিনরাত কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে অন্যদের মতো গতকাল সকালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। নিহদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জঙ্গি দমন নিয়ে এখনই আত্মতুষ্টির কিছু নেই। এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এদেশের মানুষ কখনো জঙ্গিবাদ মেনে নেয়নি। বাংলাদেশ যে জঙ্গিদের জন্য নিরাপদ নয় তা গত দুই বছরের অভিযানের মাধ্যমে বিশ্বকে জানান দেওয়া গেছে। একজন জঙ্গিরও অস্তিত্ব থাকা পর্যন্ত জঙ্গি বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় দুই পুলিশসহ দেশি-বিদেশি ২২ জন নিহত হয়া। পরে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ড’ নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। এ ছাড়া অভিযানে এক জাপানি ও দুই শ্রীলংকান নাগরিকসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, রাজীব গান্ধী, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ ও রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ এখন পর্যন্ত কারাগারে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।