পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গুলশানের হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ের পর আদালত চত্বরে আসামির মাথায় কথিত আইএসের প্রতীক সংবলিত টুপি নিয়ে এখনো চলছে বিতর্ক। দায় এড়াতে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে কারা কর্তৃৃপক্ষ এবং পুলিশ। কারাগার থেকেই আইএসের প্রতীক সম্বলিত টুপি আনা হয়েছিলো পুলিশের এমন বক্তব্যের বিপরীতে আইএসের প্রতীক সম্বলিত টুপিতে নিজেদের কারো সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি থেকে এমন দাবি করা হয়।
গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম বলেন, হলি আর্টিজান মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যানসহ মোট তিনটি টুপি এনেছিলো জঙ্গিরা। এর মধ্যে দু’টি সাদা এবং আরেকটি কালো। জঙ্গিরা টুপি তিনটি কারাগার থেকেই এনেছিলো।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি বিষয়ে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান আরো বলেন, আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে যে টুপি ছিলো তা রেখে দেয়া হয়নি বরং নির্বিঘেœ তাদের টুপি নিয়ে আসতে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মোট তিনটি টুপি এসেছিলো, এর মধ্যে দুইটি সাদা ও একটি কালো টুপি ছিলো। তবে কোনো লোগো ফুটেজে ধরা পড়েনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগারে কর্মরত কারারক্ষীরা হয়তো বুঝতেই পারেনি এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ (সিগনিফিকেন্স)। টুপি তো নামাজের অংশ। তাই হয়তো তারা ছেড়ে দিয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিদের কাছে এভাবে একাধিক টুপি আসতে পারে। লোগো থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। তবে আমাদের তদন্তে ধরা পড়েনি। এমনও হতে পারে, তারা যে টুপি কারাগার থেকে এনেছিলো, আদালতে রায় শোনার পর তা তারা উল্টে পরেছে।
রিগ্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, আইএস টুপি বিতর্কের পর তদন্তের স্বার্থে তাকে অনেক সংস্থাই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিগ্যান কারাগারে এক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আরেক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে আবার আদালতে গিয়ে ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।
আদালতের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, সেদিন আদালতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিলো। এরপরও আদালতে রিগ্যান বলেছে, ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন তাকে টুপি দিয়েছে। সেদিন পুলিশ, সাংবাদিক আর আইনজীবী ছাড়া কেউ ছিলেন না। সাংবাদিক এবং আইনজীবীর বিষয়টি আদালতে একটা ফ্রেমে আনা দরকার। এমন কোনো সিস্টেম দাঁড় করানো দরকার যাতে আইনজীবী তার পেশায় থাকতে পারেন আর সাংবাদিক যাতে তার রিপোর্ট কাভার করতে পারেন। পুলিশ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।
আইএস টুপির বিষয়ে তদন্তের জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। কমিটি দু’একদিনের মধ্যেই কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে কারা অধিদপ্তর থেকে যে তদন্ত প্র্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- জঙ্গি রিগ্যানের মাথায় যে আইএস লোগো সম্বলিত টুপি দেখা গেছে, তা কারাগার থেকে যায়নি।
পুলিশের তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তে কারাগারের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আসামিরা আদালতে আসার সময় কারাগারে তাদের তল্লাশি করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছে দুইটি সাদা টুপি এবং একটি কালো টুপি ছিলো। তবে কারা কর্তৃৃপক্ষ সেই টুপিগুলো আনতে বাধা দেননি। পোশাকের অংশ হিসেবে টুপি বাধা দেওয়ার কথাও না। তবে সেসব টুপির ভাজে সিগনিফিকেন্ট কিছু লিখা রয়েছে কি না, সেটি ফুটেজে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ৩০ নভেম্বর কারা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির সদস্য কারা অধিদপ্তরের ডেপুটি আইজি প্রিজন্স মো. টিপু সুলতান বলেছিলেন, কারা বিধি অনুযায়ী, কোনো আসামিকে কারাগার থেকে বের করে আদালতে নেওয়ার সময় এবং আদালত থেকে আবার কারাগারে প্রবেশ করানোর সময় খুবই সতর্কতার সঙ্গে তল্লাশি করে দেখা হয়। আমরা তদন্ত করে দেখেছি, হলি আর্টিজান হামলার রায়ের দিনেও আসামিদের তল্লাশি করে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং তল্লাশি করে কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ সময় জঙ্গিদের কাছে কোনো ধরনের টুপির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান মামলার ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনকে ফাঁসির আদেশ এবং একজনকে খালাস দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।