পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিন দেশের অর্থায়নে তিন সহ¯্রাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন তিনটি সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক পরিবহন নেটওয়ার্কে নতুন মাইল ফলক রচনা করতে যাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে তিন সেতুর নির্মাণে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা দেশের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হচ্ছে। তিন সেতু রাজধানীসহ সারা দেশের সাথে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, বরিশালের সঙ্গে খুলনা বিভাগ এবং প্রধান দুটি স্থল বন্দর বেনাপোল ও ভোমরার সড়ক যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
সেতু নির্মাণে অর্থায়নকারী দেশ হচ্ছে কুয়েত, জাপান ও চীন। সেতু তিনটি হচ্ছে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর ‘লেবুখালী সেতুু’, ঢাকা-মাওয়া-ভাংগা-ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে মধুমতি নদী ওপর ‘কালনা সেতু’ এবং চট্টগ্রাম-ল²ীপুর-ভোলা-বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের বেকুটিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ‘বেকুটিয়া সেতু’। দক্ষিণাঞ্চলের তিন সেতু পদ্মাসেতুর কার্যকরিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করবে।
বরিশাল বিভাগের সাথে খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সড়কপথে যাতায়াত সহজ হবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাছাড়া তিনটি সমুদ্র বন্দর ও চট্টগ্রামের সাথে বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দরের সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপরও যানবাহনের চাপ অনেকটা কমিয়ে আনবে।
লেবুখালী সেতু : ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালী এলাকা। আর এই এলাকাতেই পায়রা নদীর ওপর কুয়েত উন্নয়ন তহবিল ‘কেএফআইডি’র অর্থায়নে চার লেনের এক হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ লেবুখালী সেতুর নির্মান শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। আসছে বছরের এপ্রিলে নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করছে চীনা নির্মান প্রতিষ্ঠান লং জিয়ান রোডস এন্ড ব্রীজ কোম্পানী লিমিটেড।
খর¯্রােতা পায়রা নদীতে সেতু চালু হলে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাবে পটুয়াখালী, বরগুনা ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় যাতায়াতকারী হাজার হাজার যাত্রী। পাশাপাশি তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার সাথেও নির্বিঘœ ও সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ২৫ভাগ শেষ হয়েছে।
বেকুঠিয়া সেতু : চীনা অনুদানে চট্টগ্রাম-ল²ীপুর-ভোলা-বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের পিরোজপুরের বেকুটিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ‘বাংলাদেশ-চীন ৮ম মৈত্রী সেতু’ নির্মাণের ফলে দক্ষিণের তিনটি বিভাগের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এ ছাড়াও বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দরের সাথে তিন বিভাগের এবং তিনটি সমুদ্র বন্দরের সাথেও সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় বেকুঠিয়া সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এরফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-খুলনা মহাসড়কের ওপরও যানবাহনের চাপ কিছুটা লাঘব হবে।
চীন সরকারের তত্ত¡াবধানে সে দেশেরই প্রতিষ্ঠান বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর প্রায় এক হাজার ৪৯৪ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করবে। সেতু নির্মাণে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের এক বছর পর গত বছর ১৬ অক্টোবর এ সংক্রান্ত ডিপিপি একনেকের অনুমাদন লাভ করে। সেতু নির্মাণে ৮৩০ কোটি টাকার মধ্যে ৬৫৫ কোটি টাকা চীন অনুদান হিসেবে দেবে। মূল সেতুর উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণসহ সড়ক নির্মাণের ব্যয় বহন করবে বাংলাদেশ।
ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহনের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সড়ক অধিদপ্তর থেকে জেলা প্রশাসনকে ৩০ হেক্টর জমির মূল্য বাবদ প্রায় ১৯ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। অপরদিকে নির্মাণে দ্রæত হাত দেয়ার লক্ষ্যে সড়ক বিভাগ নদীর দুই দিকে প্রায় ৬৭ হাজার ঘন মিটার জমি চার বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছে। প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জমির উন্নয়ন কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
চীনা প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে নির্মাণ সামগ্রী প্রকল্প এলাকায় মজুদ করতে শুরু করেছে। আগামী মাসের মধ্যেই অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে। প্রকল্প পরিচালক জানান, ২০২১ সালের মধ্যভাগেই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
কালনা সেতু : জাপান উন্নয়ন তহবিল ‘জাইকা’র অর্থায়নে ঢাকা-মাওয়া-ভাংগা-ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল-খুলনা মহাসড়কের ভাটিয়াপাড়ার কাছে মধুমতি নদীর ওপর ৬৯০ মিটার দীর্ঘ ৬ লেনের সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রায় সাড়ে ৯৫০ কোটি টাকা। প্রথমে প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ ৪ লেনে সেতু নির্মাণের কথা ছিল। পরবর্তীতে হালকা যানবাহনের জন্য রাস্তা ও সেতুর দুই পাশে পৃথক দুটি লেনসহ নকশা পরিবর্তন করা হয়। এতে ব্যয় বেড়ে প্রায় সাড়ে ৯৫০ কোটি টাকা হয়েছে।
গত ২৪ জুন চীন ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘টেককেন-এএমএল-ওয়াইবিসি-জেভি’র সাথে নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সড়ক বিভাগের। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার সময় হচ্ছে ২০২১ সালের জুন মাস। এই সেতু নির্মাণের ফলে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার সাথে যশোর ও বেনাপোলের সড়কে পথের দূরত্ব প্রায় অর্ধেক হ্রাস পাবে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যশোর ও বেনাপোলের দূরত্বও ১০০ কিলোমিটার কমবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।